ক্রিকেট ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় বড় ধাক্কা খেয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটির অভিযোগ ওঠার পর তিনি একটি পরীক্ষা দেন। এরপর অ্যাকশন ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে সে দেশের প্রতিযোগিতায় সাকিবের বোলিং নিষিদ্ধ করেছে ইসিবি। ফলে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিংবা বাংলাদেশের হয়ে খেলায় তিনি কোনো সমস্যায় পড়বেন কি না সেই প্রশ্ন ‍উঠেছে!

আইসিসির নিয়ম বলছে, সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেও পড়বে এর ধাক্কা। বাংলাদেশের জার্সিতেও বোলিং করার ক্ষেত্রে সাকিব আল হাসান বাধার মুখে পড়বেন। ‘আইসিসি রেগুলেশন্স ফর দ্য রিভিউ অব বোলার্স রিপোর্টেড উইথ সাসপেক্ট ইলিগ্যাল বোলিং অ্যাকশনস’ আইনে আটকে যাচ্ছেন সাকিব। তবে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে তার কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন বিসিবির অপারেশন্স ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস।

সাকিবকে দেওয়া ইসিবির নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিসিবির সিদ্ধান্ত অবশ্যই মিডিয়া উইংয়ের মাধ্যমে জানানো হবে। আইসিসির সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। এটার ফলাফল কি হবে সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। আইসিসির নিয়মটা খুবই সাধারণ যে কোনো খেলোয়াড়ের যদি কোথাও কোনো সমস্যা হয়, তাহলে তার দেশের ঘরোয়া লিগ খেলতে পারবে। ঘরোয়া লিগ খেলতে কোনো বাধা নেই।’

বিসিবির অপারেশন্স ম্যানেজার ও সাবেক ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফিস

আইসিসির বোলিং অ্যাকশন আইনও সেই আশাই দেখাচ্ছে। নীতিমালার ১১.৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ‘১১.১ ও ১১.৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে সাসপেন্ড হওয়া সত্ত্বেও খেলোয়াড়কে নিজ দেশের জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন নির্দিষ্ট সীমারেখা বজায় রেখে ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় বোলিং চালিয়ে যেতে অনুমতি দিতে পারবে।’

তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা চালিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা বলছে আইনের ১১.৩ ধারা– ‘একটি জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন যদি কোনো বোলারকে তাদের নিজস্ব নীতিমালার অধীনে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করে এবং সেই নিষেধাজ্ঞা যদি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণ-বিধি অনুযায়ী করা হয়, তাহলে সেই নিষেধাজ্ঞাকে আইসিসি আমলে নেবে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরোপ করবে।’

কাউন্টিতে সারে’র হয়ে একটি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব, দুই ইনিংসে তার শিকার ৯ উইকেট

বিষয়টা যদিও এখানেই শেষ নয়, লাফবরো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ১৫ ডিগ্রির বেশি কনুই বাঁকানোয় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সাকিবকে। সেটি থেকে মুক্ত হতে সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে নিরপেক্ষ পরীক্ষায় বসতে হবে। এ ছাড়া সাকিবের দেশে ফিরে ঘরোয়া কিংবা বিপিএলের মতো টুর্নামেন্ট খেলার পথে বড় বাধা ‘রাজনীতি’। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে দেশে আসতে চেয়েছিলেন সাকিব। পারেননি ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া জনরোষের কারণে। বিপিএলে অংশগ্রহণটাও তাই তার জন্য অনিশ্চিত!

এসএইচ/এএইচএস