সেঞ্চুরিয়ানে হলো রানের বন্যা। সেটার শুরু করেছিলেন যিনি তাকে অবশ্য ম্যাচের শেষে থাকতে হলো মলিন মুখে। পাকিস্তানের সাইম আইয়ুবের মনে হয়ত আক্ষেপ আর বিষ্ময় দুইই ছিল। ৫৭ বলে ৯৮ রান করেছিলেন। কিন্তু ইনিংসের শেষ ৯ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের সামনে দাড়ানোই হয়নি তার। সেক্ষেত্রে হয়ত সেঞ্চুরির পাশাপাশি দলের রানও খানিক বাড়তে পারতো। 

কিন্তু পাকিস্তানের সংগ্রহ একেবারেই তো মন্দ হয়নি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২০৫ রানকে মন্দ বলার কোনো অবকাশই নেই। কিন্তু স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এতটা রান করেও হারতে হয়েছে পাকিস্তানকে। নেপথ্যের নায়ক রিজা হেন্ড্রিকস। পাকিস্তানি ওপেনারের ৯৮ রানের বিপরীতে প্রোটিয়া ওপেনার করেছেন ১১৬! 

সঙ্গে রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের ৩৮ বলে ৬৬ রানের একেবারেই বিধ্বংসী এক ইনিংস। দুই দল মিলে সেঞ্চুরিয়ানে রান তুলল ৪১৬। তাতে দক্ষিণ আফ্রিকাই জয় পেল ৭ উইকেটে। ৩ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয়া এই ম্যাচের ফলাফল তাদের এনে দিয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শিরোপাটাও। 

টস জিতে ব‍্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা ছিল একটু মন্থর। চতুর্থ ওভারে ১৬ রানে ফেরেন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। বাবর আজমের সঙ্গে ৪৫ বলে ৮৭ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন সাইম। এদিন অনেকটা সময় পর বাবরকে দেখা গেল অ্যাংকর রোল ছেড়ে আগ্রাসী ব্যাট করতে। সাইম আইয়ুব তাতে হয়েছেন আরও বেশি ভয়ডরহীন। দুজনে মিলে বেশ একটা সময় শাসনই করেছেন প্রোটিয়া বোলারদের। 

তবে ২০ বলে ৩১ রান করে বাবরের বিদায়ের পর উসমান খান ও তৈয়ব তাহিরকে দ্রুত ফিরিয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেন ডায়ান গালিয়েম। শেষ দিকে সাইম ও ইরফান খানের ঝড়ো ব‍্যাটিংয়ে ফের ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। তারা ৩২ বলে যোগ করে ৭৩ রান। জুটিতে দুই জনেই খেলেন ১৬ বল করে, সাইম করেন ৩৫, ইরফান ৩০। সাইম অপরাজিত থাকলেন ৫৭ বলে ৯৮ রান করে। 

সবাই ভেবেই নিয়েছিলেন ম্যাচ বুঝি পাকিস্তানেরই হচ্ছে। অন্তত বোলিং ইনিংসে তাদের শুরুটাও যে মন্দ ছিল না। রান তাড়ায় ৪ ওভারের মধ‍্যে রায়ান রিকেলটন ও ম‍্যাথু ব্রিটস্কির উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ব‍্যাটসম‍্যানকেই বিদায় করেন জাহানদাদ খান।

কিন্তু এ যেন ঝড়ের আগে মন্থর আবহাওয়া। হেনড্রিকস ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের বিস্ফোরক জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা উপহার দিয়েছে নিখাঁদ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। ৮৩ বলে ১৫৭ রানের জুটিটাই যেন বর্তমান সময়ের ক্রিকেটের সেরা বিজ্ঞাপন। তাতে অবশ্য এগিয়ে ছিলেন রিজা হেনড্রিকস। সেঞ্চুরির পথে ৫১ বলে তিনি করেন ১০৩ রান। সেই জুটিতে ২৩ বলে ভ্যান ডুসেনের রান ছিল ৪৯।

দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে ফেরেন হেনড্রিকস। হাইনরিখ ক্লসেনকে নিয়ে বাকিটা সারেন ভ্যান ডুসেন। ৩৮ বলে পাঁচ ছক্কা ও তিন চারে তিনি করেন ৬৬ রান। ছক্কায় ম‍্যাচ শেষ করেন অধিনায়ক ক্লসেন।

জেএ