অ্যাডিলেডে পিঙ্ক টেস্টে ঘটনাবহুল ম্যাচ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। সেই টেস্ট জিতে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ১-১ সমতা এনেছে স্বাগতিক অজি শিবির। ম্যাচে একাধিক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জড়ায় ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। ভিন্ন ঘটনায় ট্রাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে তিনি তর্কে জড়ান। লাবুশেনের ওপর ক্ষিপ্ত হওয়ার ঘটনায় অবশ্য দায়ী এক দর্শক। যাকে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অজি গণমাধ্যম।

দ্বিতীয় টেস্টে লাবুশেনকে লক্ষ্য করে বল করার জন্য ছুটে যাচ্ছিলেন সিরাজ। কিন্তু বল ছাড়ার আগমুহূর্তে ব্যাটিং লাইন থেকে সরে যান লাবুশেন। যা দেখে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি ভারতীয় পেসার, তিনি বল ছুড়ে মারেন স্টাম্প লক্ষ্য করে। পরে লাবুশেন ব্যাটিং ক্রিজ বরাবর গ্যালারিতে এক দর্শকের বিয়ার স্নেক নিয়ে দৌড়ে যাওয়ার দৃশ্যটি দেখান। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে যায়।

লাবুশেনের ব্যাটিংয়ের সময় গ্যালারিতে সাইটস্ক্রিনের পেছন দিয়ে দৌড়ে যাওয়া ব্যক্তির নাম লেকি বুর্ট। তিনি পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান। সেদিন সিরাজ বল করার আগমুহূর্তে ‘বিয়ার স্নেক’ নিয়ে তিনি ছুটে যাওয়ায় মূলত সিরাজের ক্ষেপে যাওয়ার সেই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর ২১ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান ভক্ত বুর্ট রাতারাতি ইন্টারনেট সেলিব্রিটি হয়ে উঠেছেন। পরে দেশটির সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ৭ নেটওয়ার্ক, ৯নিউজ, নিউজকর্প, দ্য অ্যাডভাইজারসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম তার সাক্ষাৎকার নিয়েছে।

সেসব সাক্ষাৎকারে বুর্ট জানিয়েছেন, সিরাজকে রাগাতেই তিনি ‘বিয়ার স্নেক’ নিয়ে সাইটস্ক্রিনের সামনে দিয়ে দৌড়েছেন। এটা বানাতে নাকি তার ২ হাজার ৭৫০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ করতে হয়েছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২ লাখ ৮ হাজার টাকার মতো। নিছক মজার ছলেই এমনটা করেছিলেন বুর্ট। পরে এই ঘটনায় তিনি অবশ্য ক্ষমাও চেয়েছেন। বুর্ট বলেন, ‘তখন আমার থামার এবং ভাবার সময় ছিল না যে, আমি আসলে কী করতে যাচ্ছি এবং এটা ম্যাচে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এখন বুঝতে পারছি আমি কিছুটা নির্বোধের মতো কাজ করেছি, যা সঠিক ছিল না...আমি দুঃখিত মার্নাস (লাবুশেন)।’

কীভাবে ওই ঘটনার পরিকল্পনা করেছিলেন সেটি নিউজকর্পকে বলেন বুর্ট, ‘একজনের চারটির বেশি পানীয় (বিয়ার) কেনার সুযোগ ছিল না।। তবে আমরা ৬৭ জন একসঙ্গে খেলা দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা ২৫০টি বিয়ার কাপ জমিয়ে ফেলি। সেগুলোকেই একত্রিত করে বিরাট টাওয়ার বানি ফেলি (বিয়ার স্নেক)। এজন্য ২ হাজার ৭৫০ ডলার খরচ হয়েছে। ঘটনাটি বেশ মজার ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরকম কাজ করা মোটেও উচিৎ নয়, তবে ঘটনায় কেউ আহত তো হয়নি। আমি তো আর দর্শক আসন থেকে লাফ দিয়ে মাঠে ঢুকে পড়িনি। ওটা একটা বল ছিল এবং এরপর মার্নাস চারও মেরেছিল। বিষয়টি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। সেই সময় আমার মাথায় একটাই জিনিস চলছিল। ভাবছিলাম কীভাবে নিরাপত্তাকর্মীর চোখ এড়িয়ে বিয়ার গ্লাসগুলো নিয়ে এগোব। তখন আমি ওই জায়গাটা দেখতে পেলাম এবং দেখলাম সেখানে একটা সাদা দড়ি দেওয়া রয়েছে।’

এএইচএস