আস্থার প্রতিদান দিতে পেরে খুশি : নাহিদ রানা
দেশের বাইরে আরেকটি টেস্ট জয় বাংলাদেশের। মাঠের ক্রিকেটে টানা কয়েক মাসের ব্যর্থতার পর এ যেন মরুর বুকে পানির সন্ধান। পাকিস্তানের মাটিতে ইতিহাসগড়া সিরিজ জয়ের পর থেকেই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখা শুরু। ভারত সিরিজের পর ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকী আফগানিস্তানের বিপক্ষেও সিরিজ হারতে হয়েছে।
নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অনুপস্থিতি, মুশফিকুর রহিমের ছিটকে পড়ার পর অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারকে ছাড়াই খেলতে নেমে ক্যারিবীয় সফরের শুরুটাও হয়েছিল বড় হার দিয়ে। প্রথম টেস্টে ২০১ রানের বড় ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় তথা শেষ টেস্টেই ঘুরে দাঁড়িয়ে ১০১ রানের দারুণ জয় তুলে নিলো মেহেদী হাসান মিরাজের বাংলাদেশ।
বিজ্ঞাপন
১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে এমন অবিস্মরণীয় জয়ের সুরটাই বেধে দিয়েছিলেন তরুণতুর্কি নাহিদ রানা। টাইগার এই পেসারের গতির কাছে কোনো জবাব ছিল না ক্যারিবিয়ান ব্যাটারদের। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৬৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর গতিময় এই পেসারের ফাইফারে ম্যাচে ফিরেছিল বাংলাদেশ। ১৮ রানের ছোট কিন্তু কার্যকরী লিডটাই বাংলাদেশকে ম্যাচে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল পরের দুই দিন। দ্বিতীয় ইনিংসে এসেও সাফল্য পেলেন রানা। জাকের আলি অনিক, তাইজুলদের সঙ্গে ম্যাচ জয়ে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
টেস্ট জয়ের পর জ্যামাইকা থেকে ঢাকা পোস্টের ক্রীড়া প্রতিবেদক সাকিব শাওনকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পেসার নাহিদ রানা।
ঢাকা পোস্ট: দেশের বাইরে আরেকটি টেস্ট জয়, অনুভূতি কেমন?
নাহিদ রানা: খুবই ভালো লাগছে। দলকে জয়ী করতে ম্যাচে আপনি যখন অবদান রাখবেন, তখন একটা ভালো লাগা কাজ করে। আমারও এখন সেই ভালোলাগাটা কাজ করছে।
ঢাকা পোস্ট: প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের বড় ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় টেস্টের দলে সুযোগ পেলেন। তখন কি ভেবেছিলেন যে জিততে পারবেন?
নাহিদ রানা: কিংস্টন টেস্ট শুরুর আগে মিরাজ ভাই বলেছিল যে টেস্টটা আমাদের জিততে হবে। যেভাবেই হোক আমরা জিতে মাঠ থেকে বের হবো। প্রথম ইনিংসে আমরা যখন ওদের দ্রুত অলআউট করলাম, সবার মধ্যে বিশ্বাসটা আরও জোরালো হলো। মিরাজ ভাই যেটা শুরুতে বলেছিল যে আমরা ম্যাচটা জিতব। এরপরতো সব নিজেদের পরিকল্পনামতোই হলো।
ঢাকা পোস্ট: ইয়ন বিশপ থেকে শুরু করে ক্রীড়াবোদ্ধারা আপনার প্রশংসা করছে। অধিনায়ক মিরাজ আলাদা করে কিছু বলেছেন কি না?
নাহিদ রানা: মিরাজ ভাই শুধু একটা জিনিসই বলেছে যে যেটা করছো, এটা লম্বা সময় যেন ধরে রাখতে পারি। তার জন্য যে জিনিসগুলো করা দরকার সেগুলো যেন ঠিকঠাকভাবে করি। এ ছাড়া সবাই বাহবা দিয়েছেন কোচ-টিমমেটরা।
ঢাকা পোস্ট: বলতে গেলে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সময়েই বল হাতে জ্বলে উঠলেন। কোনো তাগিদ ছিল কি না?
নাহিদ রানা: আমি ওভাবে চিন্তা করিনি। আমার নিজের বোলিংটাই করেছি। ম্যাচের টেম্পারমেন্ট বুঝে বোলিং করার চেষ্টা করছিলাম। কোন অবস্থায় কি বোলিং করা দরকার এটা বুঝে, পরে সেটাই করার চেষ্টা করেছি বারবার।
ঢাকা পোস্ট: পেস বোলিং কোচ আন্দ্রে আডামসের অবদান কেমন দেখছেন?
নাহিদ রানা: অবশ্যই। যখন অনুশীলন চলে তিনি আমাদের নিয়ে অনেক খুঁটিনাটি কাজ করেন। আমাদের অনুশীলন দেখে যদি মনে করেন কিছু ভুল হচ্ছে, তখন তিনি ভুলটা ধরিয়ে দেন। তার অবদান তো অবশ্যই আছে।
ঢাকা পোস্ট: টাইগার হেড কোচ ফিল সিমন্স ওয়েস্ট ইন্ডিজের। মাঠের পরিবেশ বা কন্ডিশন নিয়ে কিছু বলেছিলেন আলাদা করে? যা আপনার বোলিংয়েও বাড়তি সুবিধা দিয়েছে?
নাহিদ রানা: হ্যাঁ অবশ্যই। প্রধান কোচের কথা একটা যে তোমরা কুল (শান্ত) থাকবা। মাঠে পজিটিভ থাকো, অবস্থা যেটা ডিমান্ড করে সেটা তোমরা করার চেষ্টা করো। উনি সবসময় পজিটিভ কথাই বলে, পজিটিভ চিন্তাধারা করতেই বলে সবসময়। সেটাই আমরা চেষ্টা করেছি।
ঢাকা পোস্ট: আপনার বলের গতি, বাউন্স নিয়ে দেশ বিদেশের তারকা ক্রিকেটাররা প্রশংসা করছে...
নাহিদ রানা: আসলে এগুলো খুব বেশি একটা দেখা হয় না। যখন দেখি তখন ভালো লাগে, উৎসাহ জাগে। চেষ্টা করি এগুলো ধরে রাখার। নিজের যে কাজ সেটা ভালোভাবে করার লক্ষ্য সবসময়। আমি আমার ক্রিকেটে সবসময় ফোকাস থাকার চেষ্টা করি।
ঢাকা পোস্ট: ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে কী ভাবছেন, প্রত্যাশা কী?
নাহিদ রানা: প্রথমে তো একাদশে থাকতে হবে। যদি সুযোগ পাই তাহলে অবশ্যই দলের হয়ে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবো। বাকিটা আল্লাহ ভরসা।
এসএইচ/জেএ/এফআই