বিস্ফোরক মন্তব্য ললিত মোদির
আইপিএল নিলামে চেন্নাই সুপার কিংসের জালিয়াতির অভিযোগ
দু’দিন আগেই শেষ হয়েছে আইপিএলের মেগা নিলাম। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জেদ্দায় বসেছিল ক্রিকেটার বিকিকিনির সবচেয়ে বড় এই আয়োজন। দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের তকমা গায়ে লেগে আছে আইপিএলের। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের আরেকটি নতুন মৌসুমের আবহেই এবার কার্যত হাটে হাঁড়ি ভাঙলেন টুর্নামেন্টটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ললিত মোদি।
২০০৮ সালে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সহ-সভাপতি থাকতে তার নেতৃত্বে আইপিএল শুরু হয়েছিল। সেই মোদি এখন আইপিএল তো বটেই, নানা অনিয়মের কারণে ভারতের ক্রিকেটেই আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ। থাকেন লন্ডনে। সম্প্রতি সেখানেই এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় এই ক্রিকেট লিগটিতে আম্পায়ার নিয়ে গড়াপেটা, নিলামে জালিয়াতি নিয়ে রীতিমতো বোমা ফাটালেন। ললিত মোদির কাঠগড়ায় সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি এন শ্রীনিবাসন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটার এবং সমর্থকদের যেমন আগ্রহ থাকে আইপিএলে, তেমনি টুর্নামেন্টটি ঘিরে ফিক্সাররাও (জুয়াড়ি) থাকে সক্রিয়। প্রায় এক যুগ আগে ফিক্সিং কাণ্ডে কলঙ্কিত হয়েছিল আইপিএল। এবার বিতর্ক আরও উস্কে দিলেন ললিত মোদি। শ্রীনিবাসনকে কাঠগড়ায় তুলে বলছেন, শ্রীনিবাসন আমার শত্রু ছিল। সে কখনো আইপিএলকে পছন্দ করত না। ভেবেছিল, আইপিএল সফল হবে না। কিন্তু একবার যখন সবাই বুঝল আইপিএল বিপ্লব আনতে চলেছে ক্রিকেটে, তখনই সবাই ক্ষির খেতে চলে আসে।’
মোদির কথায় উঠে এসেছে ২০০৯ সালে আইপিএলের দ্বিতীয় মৌসুমের কথা। যে সময় শ্রীনিবাসন একদিকে যেমন ভারতীয় বোর্ডের দায়িত্বে, অন্যদিকে আবার চেন্নাই সুপার কিংসের মালিকও। মোদি বলছেন, ‘আমি বুঝেছিলাম, শ্রীনিবাসন আইপিএলের ক্ষতি করবে। সে জন্য আমি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলি। এরপরে ও আম্পায়ার ফিক্সিং করা শুরু করে।’
কোনো রাখডাক না রেখেই মোদির অভিযোগ, আম্পায়ার গড়াপেটা করতেন শ্রীনিবাসন। তিনি বলেন, ‘প্রথমদিকে দেখতাম, শ্রীনি আম্পায়ার বদলে দিচ্ছে। আমি ঠিক বুঝতে পারিনি ব্যাপারটা। পরে বুঝলাম, ও চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচে চেন্নাইয়ের আম্পায়ার দিচ্ছে। ব্যাপারটা নিয়ে আমার ভীষণই আপত্তি ছিল। আমার কাছে এটা স্রেফ ফিক্সিং। যখন ব্যাপারটা ফাঁস করে দিতে চাই, শ্রীনিবাসন আমার বিরুদ্ধে চলে যায়।’
— The Analyzer (News Updates) (@Indian_Analyzer) November 27, 2024
এ তো গেল একটা দিক। আম্পায়ারিং নিয়ে গড়াপেটা করার পাশাপাশি আইপিএল নিলামেও নিজের জোর খাটিয়েছিলেন শ্রীনিবাসন। যে নিলাম হয়েছিল ওই ২০০৯ মৌসুমে। যাকে মোদি বলছেন, নিলাম-গড়াপেটা। মোদির দাবি অনুযায়ী, ওই নিলামের আগে সব দলকে বলে দেওয়া হয়েছিল, কেউ যেন অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফের জন্য না ঝাঁপায়। কারণ, ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডারকে নেবে সিএসকে।
ইউটিউব চ্যানেলে মোদি আরও বলেন, ‘নিলামে অনেক কিছু হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নিলাম-পরিচালক হাতুড়ি মেরে ঘোষণা করে দেন, ফ্লিন্টফ যাচ্ছে চেন্নাইয়ে। আমিই ওকে সিএসকের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।’ মোদি আরও বলেন, ‘শ্রীনিবাসন বলেছিল, ফ্লিন্টফকে চাই। শ্রীনিবাসন আমার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমাকে আইপিএলটা একার হাতে পরিচালনা করতে হচ্ছিল। তাই আমি সব রকম কাঁটাকে সরাতে চেয়েছিলাম।’
আরও পড়ুন
এরপর নির্বাসিত হন মোদি। তাকে ভারত ছেড়েও চলে যেতে হয়। সিএসকে অবশ্য বিতর্কের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ২০১৩ সালে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। নাম জড়িয়ে যায় শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পনের। যিনি সিএসকের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এরপর দু’বছর নির্বাসনে থাকতে হয় সিএসকেকে। স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ওই সময় নির্বাসিত হয়েছিল রাজস্থান রয়্যালসও। এস শ্রীসন্থের মতো ক্রিকেটারকেও নির্বাসিত করা হয়।
এফআই