চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বিপাকে পাকিস্তান, বৈঠকে বসছে আইসিসি
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে দড়ি টানাটানি যেন শেষই হচ্ছে না। টুর্নামেন্টের বাকি আছে দুই মাসের কিছু বেশি সময়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভেন্যু নিয়েই জটিলতা শেষ করতে পারেনি আইসিসি। এমনকি টুর্নামেন্টের সূচি ঘোষণাও পিছিয়ে গিয়েছে এমন অনিশ্চয়তার মুখে। ভারতের পাকিস্তানে যেতে অনাগ্রহ এবং পাকিস্তানের হাইব্রিড মডেলে অনীহার কারণে সৃষ্টি হওয়া দূরত্ব এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত করে রেখেছে প্রেস্টিজিয়াস এই আসরকে।
তবে এবারে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে মরিয়া আইসিসি। ২০২৫ সালের ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কোথায় এবং কীভাবে খেলা হবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট উত্তর পাওয়ার আশায় ২৯ নভেম্বর বোর্ড মিটিং ডেকেছে আইসিসি। একটি হাইব্রিড মডেলের সাহায্যে যাতে ভারতকে দ্বিতীয় দেশে খেলতে দেওয়া হয় সেই নিয়ে সম্ভবত সদস্য দেশগুলিকে ভোট দিতে বলা হবে।
বিজ্ঞাপন
ক্রিকেটের বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম ক্রিকইনফো জানিয়েছে, ২৯ তারিখের এই সভাটি ভার্চুয়াল হবে এবং আইসিসি একটি সিদ্ধান্তে আসা পর্যন্ত এই মিটিং চলবে। এছাড়া গুঞ্জন আছে, আইসিসির নতুন প্রস্তাবে হাইব্রিড মডেলের কথাই উল্লেখ করা হবে। যেখানে টুর্নামেন্টের একটি সেমিফাইনাল এবং ফাইনালসহ মোট ৫ ম্যাচ হবে পাকিস্তানের বাইরে। বাকি ১০ ম্যাচ হবে মূল আয়োজক দেশ পাকিস্তানেই।
আট দলের ওয়ানডে টুর্নামেন্টের উইন্ডো ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে নির্ধারণ করা হলেও আইসিসি তারিখ বা আনুষ্ঠানিক সূচি ঘোষণা করেনি। সাধারণত কোনো বড় টুর্নামেন্টের জন্য আইসিসি এর ১০০ দিন আগেই সূচি ঘোষণা করে থাকে।
২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হোস্ট হওয়ার সুযোগ পায় পাকিস্তান ক্রিকেট। এরপরেও কেন পরবর্তীকালে বিসিসিআই ঠিক কেন রাজি নয় সে সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলে আইসিসিকে চিঠি দেয় পাকিস্তান ক্রিকেট। তবে পিসিবির এক কর্মকর্তার মতে, তারা এখন পর্যন্ত আইসিসির কাছ থেকে কোনো সাড়া পায়নি।
আরও পড়ুন
এদিকে, পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি পাকিস্তানে তিনটি ভেন্যু লাহোর, করাচি এবং রাওয়ালপিন্ডিতে পুরো টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে নারাজ। গত সপ্তাহেই তিনি জানিয়েছিলেন, অচলাবস্থা কাটাতে তিনি বিসিসিআইয়ের সাথে আলোচনায় বসবেন। আইসিসির একজন মুখপাত্র শুক্রবারের বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও পিসিবি এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বপ্নে আরেক ধাক্কা খেতে হয়েছে পাকিস্তানকে। বর্তমানে দেশটিতে সাবেক ক্রিকেটার ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মুক্তির দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন চলছে। দেখা দিয়েছে বড় রকমের রাজনৈতিক অচলাবস্থা। সরকার পক্ষের সঙ্গে ইমরান খানের পিটিআই সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক আকারের সংঘর্ষ হয়েছে।
আর এই কারণেই পাকিস্তান সফরের মাঝ পথেই দেশে ফিরে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দল। মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচ বাতিল করতে বাধ্য হন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কর্তারা। নিরাপত্তার কারণে ছোটদের দলকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট শ্রীলঙ্কা।
এমন পরিস্থিতিতে সিরিজের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ম্যাচ ইসলামাবাদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন পিসিবি কর্তারা। দুই ম্যাচই রাওয়ালপিন্ডিতে নেয়ার কথা বলা হয়। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট কর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনাও করেন। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্রিকেটারদের সিরিজ়ের মাঝ পথেই দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট কর্তারা। এমন এক পরিস্থিতি পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের ক্ষেত্রে বড় বাঁধা হয়ে উঠতে পারে শেষ পর্যন্ত।
জেএ