পার্থে অস্ট্রেলিয়ার পেস কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আগুন ঝরিয়েছেন পাকিস্তানের পেসাররা। সেই আগুনে পুড়েছে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইনআপ। অবশ্য পুরো সিরিজেই দাপট ছিল শাহিন-রউফ-নাসিমদের। যাদের তোপে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মাত্র ১৪০ রানেই অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুটিয়ে যায়। যা ৮ উইকেট এবং ২৩.১ ওভার হাতে রেখেই পেরিয়েছে নতুন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। 

একইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় ২২ বছর পর তারা ওয়ানডে সিরিজ জিতল। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুই দলের দ্বিপাক্ষিক সিরিজে সর্বশেষ ২০০২ সালে জিতেছিল পাকিস্তান। ফরম্যাটটিতে আরেকটি সিরিজ জিততে তাদের অপেক্ষা করতে হলো ২২ বছর। অথচ মেলবোর্নে সিরিজটা শুরু হয়েছিল অজিদের ২ উইকেটের জয় দিয়ে। পিছিয়ে থেকেও পরপর দুই জয়ে রিজওয়ান-বাবররা সিরিজ নিশ্চিত করলেন।

অ্যাডাম জাম্পার বলে লং-অন দিয়ে চার হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিতের পর ক্রিজে থাকা বাবর-রিজওয়ান দুই হাত শূন্যে তুলে ধরেন। লম্বা সময় পর সিরিজ জয় যেন তাদের অনেক কিছু থেকে হাফ ছেড়ে বাঁচিয়েছে। সর্বশেষ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই চাপের পাহাড় তৈরি করেছিল। সেই পাহাড় ডিঙাতে অস্ট্রেলিয়া সিরিজকে বেছে নিলেন বাবররা।

পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেয় সফরকারীরা। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হলেও অস্ট্রেলিয়া পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায়। অভিজ্ঞ তারকা স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক খেলেননি ম্যাচটিতে। ফলে জশ ইংলিসের নেতৃত্বে নামা স্বাগতিক শিবিরে অভিজ্ঞদের অভাব ভালোভাবেই টের পাওয়া গেছে। উল্লেখযোগ্য রান (৩০) পেয়েছেন কেবল আট নম্বর ব্যাটিংয়ে নামা শন অ্যাবট। এর মাঝে আবার কুপার কনলি মাঠ ছাড়েন হাতে চোট নিয়ে, এরপর আর ফেরা হয়নি তার।

ওপেনার ম্যাথু শর্ট করেন ২২ রান। তবে শুরু থেকেই তাকে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। নাসিম শাহের বলে জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক (৭) ও জশ ইংলিস (৭) এবং শাহিন আফ্রিদি ফেরান অ্যারন হার্ডিকে (১২)। দলীয় ৭২ রানে শর্ট হারিস রউফের বলে আউট হওয়ার পর বিদায়ের মিছিল বড় হতে শুরু করে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (০) ও মার্কাস স্টয়নিসরা (৮) দলের বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি। ফলে ৩১.৫ ওভারেই অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেট হারায় ১৪০ রানে। পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন শাহিন-নাসিম।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওয়ানডের মতোই দেখেশুনে শুরু করেন দুই পাক ওপেনার সাইম আইয়ুব ও আব্দুল্লাহ শফিক। উদ্বোধনী জুটিতে তারা ৮৪ রান তোলেন। দুজনেই ফেরেন পরপর, ল্যান্স মরিসের একই ওভারে। সাইম ৪২ এবং শফিক করেন ৩৭ রান। এরপর বাবর-রিজওয়ান মিলে ৫৮ রানের জুটিতে সফরকারীদের জয় নিশ্চিত করেন। বাবর ২৮ ও রিজওয়ান ৩০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।

এএইচএস