শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগেই সিরিজ খুইয়ে বসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ছিল তাদের জন্য ধবলধোলাই এড়ানোর লড়াই। তবে আরও অতীতে গেলে, ১৯ বছর লঙ্কান ভূমিতে ওয়ানডেতে জয়হীন ক্যারিবীয়রা। এভিন ‍লুইসের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে সেটাই সম্পন্ন হয়ে গেল গতকাল। বৃষ্টির কল্যাণে যদিও ম্যাচটি পরিণত হয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। আর সেটাই যে ক্যারিবীয়দের পছন্দের!

গতকাল (শনিবার) পাল্লেকেলেতে কয়েক দফায় বৃষ্টির বাগড়ায় সিরিজের শেষ ওয়ানডে নেমে আসে ২৩ ওভারে। যদিও ১৭.২ ওভার পর পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে। ওই সময় শ্রীলঙ্কার পুঁজি ছিল ১ উইকেটে ৮১ রান। পরে ম্যাচের দৈর্ঘ্য ২৩ ওভারে নামিয়ে আনার পর পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিসের ফিফটিতে ১৫৬ রান করে লঙ্কানরা। যা ডাকওয়ার্থ লুইস-স্টার্ন (ডিএলএস) পদ্ধতিতে ১৯৫ রানের লক্ষ্যে পরিণত হয়।

সেই লক্ষ্য ৬ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর তাতে বড় অবদান ২০২১ সালের পর এই সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে ফেরা লুইস। জয়ের জন্য যখন দলের আর ৫ রান প্রয়োজন, সে সময় সেঞ্চুরি থেকে তিনি ৪ রান দূরে। আসিথা ফার্নান্দোকে লং অফ দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে তিনি দুটি সমীকরণই মিলিয়ে দেন। পেয়ে যান মাত্র ৬১ বলে পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এ ছাড়া শেরফান রাদারফোর্ডও ঝোড়ো ফিফটি করেছেন।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা ব্যাট করতে থাকে ওয়ানডে মেজাজে। তবে প্রথম ১০ ওভারে বিনা উইকেটেই তারা ৪৯ রান তোলে। নিশাঙ্কা-আভিষ্কা ফার্নান্দোর ওপেনিং জুটি ভাঙে ৮১ রানে। ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে যাওয়ায় হয়তো নিজের ধীরগতির ইনিংস পুড়িয়েছে আভিষ্কাকে (৫০ বলে ৩৪ রান)। পরে অবশ্য সেই ক্ষতি পুষিয়ে আনার চেষ্টা করেন মেন্ডিস ও নিশাঙ্কা। মাত্র ১৯ বলেই ফিফটি তুলে নেন মেন্ডিস। ২২ বলে ৯ চার ও এক ছক্কায় ৫৬ রানে তিনি অপরাজিত ছিলেন। উইন্ডিজরা ৫টি ক্যাচ ছাড়ায় দু’বার করে জীবন পান কুশল-নিশাঙ্কা।

এ ছাড়া শেষদিকে রানআউট হওয়ার আগে ৬২ বলে ৫৬ রান করেন নিশাঙ্কা। ২৩ ওভারে ৩ উইকেটে লঙ্কানরা পায় ১৫৬ রানের পুঁজি। ডিএলএস নিয়মে সেটি চ্যালেঞ্জিং স্কোর– ১৯৫ হয়ে দাঁড়ায়। ক্যারিবীয়দের হয়ে একটি করে উইকেট নেন রোস্টন চেজ ও রাদারফোর্ড।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় ধীরেসুস্থে শুরু করে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ৫ ওভারে তারা উইকেট না হারিয়ে করে ৩৫ রান। এরপরই ১৯ বলে ১৬ রান করা ব্র্যান্ডন কিং আসিথার বলে আউট হয়ে যান। এরপর শাই হোপের সঙ্গে লুইস গড়েন ৭২ রানের জুটি। এর মাঝেই ৩৪ বলে ফিফটি করেন লুইস। হোপ (২২) আউট হয়ে যান দিলশান মাদুশঙ্কার বলে। সে সময় ওভারে প্রায় ১০ গড়ে লাগত ক্যারিবীয়দের। সেখান থেকে রাদারফোর্ডকে সঙ্গে নিয়ে লুইস ঝড় শুরু করেন।

দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি মাত্র ৪৫ বলেই তোলে ৮৮ রান। এর মাঝে লুইসের পায়ে টান লাগার পরও চিকিৎসা নিয়ে চালিয়ে যান খেলা। শেষ পর্যন্ত তিনি সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেন ঝড়ের গতিতে। ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ৬১ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ১০২ রান করেন লুইস। এ ছাড়া ২৬ বলে ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে অপরাজিত ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন রাদারফোর্ড। ফলে ক্যারিবীয়রা লঙ্কানদের কাছে ১০ ম্যাচ হারের পর ওয়ানডেতে বহুল কাঙ্ক্ষিত জয় পেল।

এএইচএস