জাতীয় দলের জন্য এমন বাক্য অনেকেই এখন হয়তো স্বাভাবিকভাবে নিতে শুরু করেছেন। এবার বাংলাদেশ ‘এ’ দলও হতাশ করল ইমার্জিং এশিয়া কাপে। এই টুর্নামেন্টের জন্য ওমানের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে অধিনায়ক আকবর আলি শিরোপা জয়ের লক্ষ্য জানিয়েছিলেন। সেই কথা স্মরণ করলে হয়তো লজ্জায় মুখ লুকাবেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররা। কারণ তারা যে প্রথম রাউন্ড-ই পেরোতে পারেনি।

ফলে বাংলাদেশের আরেকটি সফর ও টুর্নামেন্ট, নতুন আরেকটি ব্যর্থতা নিয়ে এসেছে। যেখানে জাতীয় দলের অভিজ্ঞ তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, নাঈম শেখ, আবু হায়দার রনি এবং পারভেজ হোসেন ইমনরাও খেলেছেন। অথচ তিন ম্যাচে তাদের জয় কেবল একটি। এর আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সবশেষ ভারত সফরে হয়েছেন ধবলধোলাই। নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপেও বাংলাদেশ দলের বিদায় হয়েছে গ্রুপপর্ব থেকে। এবার ইমার্জিং এশিয়া কাপে টাইগারদের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়।

টুর্নামেন্টের ফরম্যাট এবং দল যতই বদলাক না কেন, বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতাই যেন অলিখিত নিয়ম! যে ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট। ওমানে ইমার্জিং এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নেমেছিল আকবর আলির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ‘এ’ দল। যেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে বাবর হায়াতের ৮৫ রানের সুবাদে হংকং জাতীয় দল ১৫০ রান সংগ্রহ করে। সেই লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক আকবর। ফলে ১০ বল এবং ৫ উইকেট হাতে রেখেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা হংকংকে হারিয়েছিল।

নামে-ভারে আশা জাগালেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি আকবর আলির দলটি

বিপত্তি বাধে দ্বিতীয় ম্যাচ থেকেই, টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে হেরে যায় টাইগাররা। ১৬৫ রানের পুঁজি যথেষ্ট প্রমাণ করতে পারেননি বোলাররা। ফলস্বরূপ আফগানিস্তানের কাছে ৪ উইকেটে হার বাংলাদেশের। ব্যাটিংয়ের চূড়ান্ত চিত্র দেখা গেল ইমার্জিং এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের শেষ ম্যাচেও। শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচটি ছিল বেশ নাটকীয়। যেখানে ১৬২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৯ রানে হেরে টাইগাররা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে।

শিরোপা প্রত্যাশী আকবরের দল সেমিফাইনালেরই টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশ ছাড়ার আগে আকবর জানিয়েছিলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সিরিজের চেয়ে এসব টুর্নামেন্ট সব সময়ই চ্যালেঞ্জের। আমার মনে হয় টেস্ট খেলুড়ে দেশ বাদে বাকিরা জাতীয় দল নিয়েই খেলবে। সব মিলিয়ে টুর্নামেন্ট চ্যালেঞ্জিং হবে। যারা কন্ডিশন মানিয়ে নিয়ে নির্দিষ্ট দিনে ভালো খেলতে পারবে, তারাই এগিয়ে থাকবে। ইনশা-আল্লাহ ২৭ তারিখে ফাইনাল খেলার চেষ্টা করব।’

এদিকে, বাংলাদেশ দলের সঙ্গে প্রধান কোচ হিসেবে গিয়েছিলেন সোহেল ইসলাম। আজ দেশে ফিরে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, ‘আমরা যেভাবে প্ল্যান করেছিলাম সেভাবে অবশ্য খেলতে পারিনি। ব্যাটিংটা নিয়ে আরও অনেক কাজ করতে হবে। আমার কাছে মনে হয় টি-টোয়েন্টিটা যেভাবে খেলা হয় এবং সব খেলারই তো আসলে প্ল্যান থাকে। এখন সেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের পর শেষ ম্যাচের আগে মানসিকভাবে দল পিছিয়ে পড়েছিল কি না সেই প্রশ্নে সোহেল বলেন, ‘না পিছিয়ে পড়িনি, আমরা ভালো করতে পারিনি আসলে। পিছিয়ে যাব এরকম মানসিক অবস্থা হয়নি। আমার কাছে মনে হয় যে প্ল্যানটা করেছিলাম সেটা বাস্তবায়নই করতে পারিনি।’

দলে জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটার থাকা সত্ত্বেও এমন বিপর্যয়। যা নিয়ে সোহেল বলেন, ‘জাতীয় দলের খেলোয়াড় থাকলেও খারাপ লাগে, জুনিয়র খেলোয়াড় থাকলেও খারাপ লাগে। ব্যাটিং খারাপ হয়েছে বা বোলিং বেশি ভালো হয়েছে এমনটাও নয়।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আজ মিরপুরে সিরিজের প্রথম টেস্টেও হারল বাংলাদেশ জাতীয় দল। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেশের ক্রিকেটের এমন দশা কাটিয়ে উঠার মুহূর্ত দেখার অপেক্ষায় সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট সবাই!

এসএইচ/এএইচএস