একপ্রান্তে সাজিদ খান, অন্যপ্রান্তে নোমান আলী। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে নতুন বলের জন্য পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ ডেকে নিলেন দুই অফ-স্পিনারকে। দুজনে মিলে করেছেন টানা বোলিং। এই জুটি ৪২ ওভার। কাজেও দিয়েছে তাদের এই ম্যারাথন স্পেল। ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারকে দাঁড়াতেই দেননি দুজনে। 

দুই স্পিনার ম্যাচের শুরুর দুই ওভার করেছেন, এমন ঘটনা টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ। আর পাকিস্তানের মাটিতে এমন ঘটনা প্রথম। তাদের ঘূর্ণি বোলিংয়ের সুবাদেই কি না ১১০ রানেই ইংল্যান্ড হারিয়েছে নিজেদের ৬ উইকেট। যদিও উদ্বোধনী জুটিতেই জ্যাক ক্রলি আর বেন ডাকেট তুলেছিলেন ৫৬ রান। 

এরপর থেকেই  পাকিস্তানের দুই স্পিনারের কাছে হার মেনেছে ইংলিশ ব্যাটারদের প্রতিরোধ। অলি পোপ ৩, হ্যারি ব্রুক ও জো রুটের ৫ রানের পর অধিনায়ক বেন স্টোকস ফেরেন ১২ রানে। পিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তখন রাজত্বই করছিলেন নোমান-সাজিদের বোলিং জুটি।

টেস্টে নতুন বলে দুই স্পিনারের বোলিং 

এম জে জয়সিমহা - সালিম আজিজ দুরানি; প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড (১৯৬৪ সাল) 
আব্দুর রাজ্জাক - মেহেদি হাসান মিরাজ; প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা (২০১৮ সাল) 
তাইজুল ইসলাম - সাকিব আল হাসান; প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান (২০১৯ সাল) 
সাজিদ খান - নোমান আলী; প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড (২০২৪ সাল) 

৭ম উইকেটে অবশ্য দারুণ একটা জুটি করেছেন গাস অ্যাটকিনসন এবং জেসন স্মিথ। ১০৭ রানের জুটি গড়েন দুজনে। জাহিদ মেহমুদ ও সালমান আগাকে এক পর্যায়ে বোলিংয়ে এনেছিলেন শান মাসুদ। জুটিটা ভেঙেছিলেন নোমান। তবে জাহিদ পেয়েছিলেন জেসন স্মিথের উইকেট। ৮৯ রানের ইনিংস খেলার পথে রেকর্ড করেছেন ইংলিশ এই উইকেটরক্ষক নিজেও। 

উইকেটরক্ষক হিসেবে টেস্ট ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা 

৮ - অ্যাডাম গিলক্রিস বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা (জোহানেসবার্গ, ২০০২) 
৭ - কুইন্টন ডি কক বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সেইন্ট লুসিয়া, ২০২১) 
৭- জেসন স্মিথ বনাম পাকিস্তান (রাওয়ালপিন্ডি, ২০২৪) 

জাহিদের পর আবার উইকেটের তালিকায় চলে আসে নোমান ও সাজিদের নাম। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড অলআউট হয় ২৬৭ রানে। পুরো ইনিংসে পেসারের হাতে বল দেননি অধিনায়ক শান মাসুদ। পেসারবিহীন ইনিংস শেষ করার ঘটনা টেস্ট ক্রিকেটে মোটে তৃতীয়বার। 

পেসারবিহীন ইনিংস 

অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড, সিডনি টেস্ট– ১৮৮২ সাল 
ভারত বনাম ইংল্যান্ড, চেন্নাই টেস্ট– ১৯৭৩ সাল 
পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড, রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট– ২০২৪ সাল 

সবমিলিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেটের ইতিহাসে ১০ম বার স্পিনাররাই প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের সব উইকেট। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমন ঘটনা ঘটলো ৪ বার। পাকিস্তানের হয়ে ৬ উইকেট পেয়েছেন সাজিদ খান। রান দিয়েছেন ১৩০। রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট ক্রিকেটে স্পেলের হিসেবে এটিই ৩য় সেরা বোলিং ফিগার। 

জেএ