ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে রীতিমতো রানমেশিনে পরিণত করেছিলেন সরফরাজ খান। এরপর জাতীয় দলের স্কোয়াডে থাকলেও একাদশে সুযোগ না পাওয়ার আক্ষেপ হয়তো পোড়াচ্ছিল তাকে। শুভমান গিলের জায়গায় সুযোগ পেয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে আউট হয়ে গেলেন শূন্য রানে। বিপর্যস্ত ভারতকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার চেষ্টায় দ্বিতীয় ইনিংসে সরফরাজ নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিই তুলে নিলেন।

এর আগে বাংলাদেশ সিরিজের স্কোয়াডে থাকলেও সেরা এগারোতে জায়গা হয়নি ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটারের। এরপর ঘরোয়া টুর্নামেন্ট ইরানি কাপে খেলতে নেমে তিনি ইতিহাসগড়া ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়ের রেকর্ডে ভাগ বসিয়ে এবার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিও পেয়ে গেলেন সরফরাজ। যার জন্য তিনি খেলেছেন মাত্র ১১০ বল।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৬ রানেই অলআউট হয়ে বেঙ্গালুরুতে ভিন্ন ভারতের দেখা মিলেছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির ফিফটি ও সরফরাজ খানের সেঞ্চুরিতে লড়াইয়ে ফেরার পথে স্বাগতিকরা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে কোহলি ও সরফরাজ মিলে ১৩৬ রান যোগ করেন। কোহলি ৭০ রানে ফিরলেও, সমান সংখ্যক রান করে তৃতীয় দিনে অপরাজিত ছিলেন সরফরাজ। আজ চতুর্থ দিনে খেলতে নেমেও তিনি পুরোনো আগ্রাসী রূপেই ধরা দেন। ফলে ১১০ বলের ইনিংসে ১৩ চার ও তিন ছক্কায় কাঙ্ক্ষিত শতক পেয়ে গেলেন সরফরাজ।

এরপর তার বুনো উল্লাসই বলে দেয় কতটা ব্যাকুল ছিলেন এমন কীর্তি গড়তে। দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও একাগ্রতা সত্ত্বেও ভারতীয় একাদশে জায়গা না পাওয়ারই যেন জবাব দিতে চাইলেন। চতুর্থ টেস্ট খেলতে নেমে ৩ ফিফটির পাশাপাশি প্রথম সেঞ্চুরি করলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এ ছাড়া একটি কীর্তিও গড়েছেন সরফরাজ, দ্বিতীয় ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে কিউইদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ডাক (শূন্য) মারার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি সেঞ্চুরি করেছেন। ২০১৪ সালে অকল্যান্ডে একই কীর্তি গড়েন শেখর ধাওয়ান। তবে সবমিলিয়ে ২২ জন ভারতীয় ব্যাটারের প্রথম ইনিংসে শূন্য ও পরেরটিতে সেঞ্চুরির রেকর্ড রয়েছে।

সরফরাজের সেঞ্চুরিতে কিউইদের লিড ছুঁয়ে ফেলার পথে রয়েছে ভারত। এখন পর্যন্ত ৩ উইকেট হারিয়ে ভারতের সংগ্রহ ২৯৪ রান। লিড পেরিয়ৈ নিজেদের পুঁজি গড়তে আরও বাকি ৬৩ রান। ক্রিজে সরফরাজের সঙ্গে ২৩ রানে অপরাজিত আছেন রিষভ পান্ত।

এএইচএস