বেঙ্গালুরুতে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্টের প্রথমদিন ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। দ্বিতীয় দিনের দখল নিলেন সফরকারী কিউই পেসাররা। যাদের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না রোহিত-কোহলিরা। মাত্র ৪৬ রানে অলআউট হয়ে ভারত একগাদা লজ্জার রেকর্ডও গড়েছে। দেশের মাটিতে টেস্টে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার দায় পরবর্তীতে নিজের কাঁধে নিয়েছেন স্বাগতিক অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের পিচ স্পিনারদের জন্য সহায়ক হবে মনে করে রোহিত প্রথমে নাকি ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এ ছাড়া ভারত একাদশ সাজায় তিন স্পিনার নিয়ে, পেসার মাত্র দুজন। এমন অবস্থায় আগে ব্যাট করতে নেমেই পেসারদের তোপে পড়েন কোহলি-সরফরাজ ও লোকেশ রাহুলরা। ম্যাট হেনরি ও উইল ও’রুর্কির গতিতে দিশেহারা হয়ে প্রথম আট ব্যাটারের মধ্যে পাঁচজনই আউট হয়েছেন শূন্য রানে।

ভারতের এমন করুণ দশা দেখে প্রশ্ন উঠেছে রোহিতের আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে। সংবাদ সম্মেলনেও তাকে সেই প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে। মূলত পিচ বুঝতে ভুল করেছেন বলে অকপটে স্বীকার করেছেন রোহিত, ‘এই পিচে পেসাররা সাহায্য পেয়েছে। আমরা বুঝতে পারিনি যে এমনটা হতে পারে। ভেবেছিলাম প্রথম সেশনের পর পেসাররা সাহায্য পাবে না। পিচে ঘাসও ছিল না বেশি। তাতেও আমরা মাত্র ৪৬ রানে আউট হয়ে গিয়েছি। আমাদের যে শট নির্বাচন ঠিক ছিল না এটা বোঝাই যাচ্ছে। খুব খারাপ একটা দিন গেল। অনেক সময় কিছু একটা করার ইচ্ছা থাকলেও আপনি করতে পারেন না। আজ সে রকমই একটা দিন।’

আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তও ভুল ছিল বলে দাবি ভারত অধিনায়কের, ‘আমিই প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাদের পিচ বুঝতে ভুল হয়েছে। ভেবেছিলাম পাটা উইকেট হবে। ভাল করে পিচ পড়তে পারিনি। অধিনায়ক হিসাবে ৪৬ রানের স্কোরটা দেখতেও খারাপ লাগছে। কারণ টসে আমিই গিয়েছিলাম। তবে বছরে একবার-দু’বার খারাপ সিদ্ধান্ত নিলে এত চাপে পড়ার কিছু নেই। পিচ সাদামাটা হবে ভেবেই কুলদীপকে (যাদব) নেওয়া হয়েছিল, কারণ ফ্ল্যাট পিচে সে উইকেট নিতে দক্ষ।’

দীর্ঘ আট বছর পর এই ম্যাচে তিনে ব্যাট করতে নামেন কোহলি। মূলত শুভমান গিল চোটে ছিটকে যাওয়ায় এমন পরিকল্পনা। তবে ডাক মেরে সেটি ভেস্তে দিয়েছেন এই তারকা ব্যাটার। সেভাবে ছন্দে না থাকা কোহলির পরিবর্তে কাউকে আনা যেত কি না এই প্রশ্নে রোহিতের জবাব, ‘আমরা কেএলের (রাহুল) ব্যাটিং পজিশন নিয়ে খুব একটা নাড়াচাড়া করতে চাই না। ছয় নম্বরে সে থিতু হয়ে গেছে। তাই ওকে ওখানেই খেলানো উচিৎ। একই কথা সরফরাজের ক্ষেত্রেও বলব। যে পজিশনে ও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে সেখানেই খেলাতে চেয়েছিলাম। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ওর কাছে নতুন। তাই বিরাটই এগিয়ে এসে অতিরিক্ত দায়িত্ব নিলো। আমাদের আলোচনা হয়েছিল। বিরাট কোনো আপত্তি করেনি। সতীর্থরা এভাবে দায়িত্ব ভাগ করে নিচ্ছে দেখে ভাল লেগেছে।’

ভারতকে মাত্র ৪৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় দিনে নিউজিল্যান্ড ৩ উইকেটে ১৮০ রান তুলেছে। ফলে এরইমাঝে ১৩৪ রানের লিডও পেয়ে গেছে কিউইরা। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৯১ রান করেছেন ওপেনার ডেভন কনওয়ে। আলোক স্বল্পতায় আগেভাগেই দিনের খেলা শেষ ঘোষণার আগে রাচিন রবীন্দ্র ২২ এবং ড্যারিল মিচেল ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন। এর আগে ভারতীয় ইনিংসে কিউই পেসার হেনরি ৫ এবং ও’রুর্ক শিকার করেন ৪ উইকেট।

এএইচএস