হঠাৎ করেই দেশে আসার পথ বন্ধ হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের। অথচ গতকাল (বুধবার) রাতেও মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলে তার ফরম্যাটটিকে বিদায় বলার কথা ছিল। প্রথম টেস্টের স্কোয়াডও সাজানো হয় তাকে রেখেই। আপাতত সাকিবের দেশে আসা স্থগিত হয়ে গেলেও, এরই মাঝে তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে ‘ছাত্র-জনতা’।

‘মিরপুরের ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে আজ (বৃহস্পতিবার) শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের প্রথমে তারা বিক্ষোভ করেন। পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। যেখানে ২১ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া মিরপুর টেস্টের স্কোয়াড থেকে সাকিবকে বাদ দেওয়ার দাবি উঠেছে।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের উদ্দেশ্যে দেওয়া স্মারকলিপিতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা বলছে, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে সকল জায়গায় যে পরিবর্তন হয়েছে তার অংশ আপনি নিজে। যদি এই গণঅভ্যুত্থান না হতো, তাহলে আপনি বিসিবি প্রধান হতেন না। তাই আপনার প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিৎ ফ্যাসিবাদ নির্মূল করে নিজের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করা। আপনি কোনোভাবেই তাই ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন করতে পারেন না। আপনি পারেন না বাংলাদেশের জার্সি একজন ভোটচোর এমপির গায়ে জড়িয়ে দিতে। এই কাজের মাধ্যমে আপনি কেবলমাত্র পতিত স্বৈরাচারের মন্ত্রী ও সাবেক বিসিবি প্রধান পাপনের প্রতিজ্ঞা পূরণ করতে যাচ্ছেন।

এতে আরও বলা হয়, পাপন (বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন) কথা দিয়েছিলো যে সে সাকিবকে মিরপুরের মাটিতে বিদায় দেবে। আপনিও ঠিক একই কাজটা করতে যাচ্ছেন । সাকিবকে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেলতে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি একজন ভোটচোর, হাসিনার দালাল, দুর্নীতিবাজ, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির অপরাধী, জুয়ার দালালের শরীরে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির জার্সি তুলে দিচ্ছেন। আপনি পারেন না আমাদের এই মিরপুরে শহিদ হওয়া ভাইয়েদের লাশের উপর সাকিবকে ব্যাট বল চালাতে দিতে। অন্যথায় আপনি নিজেই আরেকজন পাপন হয়ে উঠবেন।

এরপরই কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় স্মারকলিপিতে, সাকিব আল হাসানকে বাংলাদেশ জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া এবং সাকিবের অপকর্মের ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিলে আমরা আমাদের এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীকে আরও কঠোর করে তুলব। খেলার দিন মিরপুর এলাকায় কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব। এর ফলে যদি কোনো অরাজকতা সৃষ্টি হয়, বাংলাদেশের মাটিতে অন্য দেশগুলো খেলতে না আসে কিংবা বাংলাদেশ ক্রিকেট আইসিসির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞাসহ অন্য যেকোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে এর সকল দায়ভার বিসিবি প্রধান হিসেবে আপনাকে নিতে হবে।

এর আগে মিরপুরে জড়ো হয়ে কিছু তরুণ স্লোগান দিতে থাকেন— ‘আমার ভাই কবরে, সাকিব কেন বাহিরে’, ‘টরন্টো নাকি মিরপুর, মিরপুর মিরপুর’। এ সময় তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্রতিবাদী ভাষায় লেখা প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন। পরে স্মারকলিপি প্রদান শেষে ‘মিরপুরের ছাত্র-জনতার’ প্রতিনিধি পরিচয়ে আল মাসনূন জানান, সাকিবকে মিরপুর টেস্টের দল থেকে বাদ না দিলে মিরপুর ব্লকেড করা হবে।

এএইচএস