বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে একেবারেই উড়ন্ত ছন্দে ছিল ভারত। চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টের প্রথম দুই সেশন বাদ দিলে আর কখনোই বাংলাদেশ স্বাগতিকদের চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি। কিন্তু উল্টো এক চিত্র দেখা গেল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। বেঙ্গালুরু টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দিনটায় রীতিমত ভারতকে লজ্জা দিয়েছে সফরকারী দলটি। 

ভারতকে বাগে পেয়ে এদিন শুরু থেকেই চেপে বসেছে নিউজিল্যান্ডের পেস লাইনআপ। টিম সাউদি ইনিংসের শুরুতেই রোহিত শর্মাকে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন। এরপরের কাজটা সেরেছেন উইল ও’রুর্কি আর ম্যাট হেনরি। সেইসঙ্গে চারটা দুর্দান্ত ক্যাচের সুবাদে ভারত পেয়েছে নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোরে অল আউটের লজ্জা। 

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বেঙ্গালুরু টেস্টে ভারত অলআউট হয়েছে ৪৬ রানে। ঘরের মাঠে এটিই ভারতের টেস্টে সর্বনিম্ন রানের ইনিংস। সেইসঙ্গে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও এটিই সবচেয়ে কম রানে আউট হওয়ার নজির। তবে সামগ্রিকভাবে এটি ৩য় সর্বনিম্ন। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০২০ সালে ৩৬ আর ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত করেছিল ৪২ রান। 

বৃষ্টিবিঘ্নিত এই টেস্টের দ্বিতীয় দিনে মাঠে নেমেই স্বাগতিক ব্যাটারদের ওপর চড়াও হয়েছে নিউজিল্যান্ড। লাঞ্চের আগে ৩৪ রান তুলতেই নেই ভারতের ৬ উইকেট। তারমাঝে ৪ জন ফিরেছেন শূন্য রানে। পরে তাতে যোগ হয়েছে আরও একজনের নাম। ভারতের জন্য টেস্টে এক ইনিংসে ৫ ডাক মারার ঘটনা এটি ষষ্ঠবার। 

 

লাঞ্চের আগেই ৩৪ রানে ৬ উইকেট পতনের ঘটনা ভারতের জন্য ঘরের মাঠে বিগত ৫৫ বছরে সবচেয়ে দ্রুত প্রথম ছয় উইকেট হারানোর ঘটনা। এর আগে ১৯৬৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই হায়দরাবাদ টেস্টে ২৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল তারা। তবে এবারে নিউজিল্যান্ডের পেস ইউনিট এমন কিছু করবে তা হয়ত ভেবেও দেখেনি ভারত। 

শুরুটা ৯ রানে রোহিত শর্মার উইকেট নিয়ে। বড় শট খেলতে গিয়ে টিম সাউদির বলে ভারত অধিনায়ক হয়েছেন বোল্ড। উইল ও’রুর্কি কিছুটা বাড়তি বাউন্সে কোহলিকে ফেলেছেন ফাঁদে। লেগ গালিতে গ্লেন ফিলিপ্সের অসাধারণ ক্যাচে ডাক মেরে ফিরতে হয় তাকে। পরের ওভারেই ম্যাট হেনরির বলে আলতো শট খেলতে গিয়ে ডেভন কনওয়ের আরেকটি অসামান্য ক্যাচে ফিরতে হয় সরফরাজ খানকে। 

 এরপর ঋষভ পান্ত আর যশস্বী জয়সওয়াল কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও সেটা হয়নি। দুজনের জুটি টিকেছে ২৩ রান পর্যন্ত। এরইমাঝে হানা দেয় বৃষ্টি। সেই বিরতির পর ফের আঘাত করে নিউজিল্যান্ড। যশস্বী জয়সওয়াল ৬৩ বলে ১৩ রান করে ক্যাচ দিতে বাধ্য হয়েছেন। এরপরেই ডাক মেরেছেন লোকেশ রাহুল এবং রবীন্দ্র জাদেজা। ভারতের রান তখন মোটে ৩৪। এরপরেই আসে লাঞ্চ বিরতি।

লাঞ্চের পর প্রথম বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিন মেরেছেন গোল্ডেন ডাক। স্লিপে ক্যাচ দেন ম্যাট হেনরির বলে। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার ঋষভ পান্ত আউট হয়েছেন সেই হেনরির বলেই। টম ল্যাথামকে ক্যাচ দেন তিনি। এরপরেই ১ রান করে ফেরেন জাসপ্রিত বুমরাহ। বাড়তি বাউন্সের বলে উড়িয়ে মেরেছিলেন। ফাইন লেগ থেকে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন হেনরি।

দিনের শেষ উইকেটও পেয়েছেন হেনরিই। টেস্ট ক্যারিয়ারের শততম উইকেট হিসেবে তুলে নেন কুলদীপ যাদবের উইকেট।

জেএ