ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) সর্বশেষ আসরে ভেঙেছিল সর্বোচ্চ দামে ক্রিকেটার ক্রয়ের আগের সব রেকর্ড। তারই কাছাকাছি অঙ্কের বেতন বাড়তে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ব্যাটার হেইনরিখ ক্লাসেনের। গত আসরে তিনি সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দুর্দান্ত খেলেছেন (১৭১ স্ট্রাইকরেটে ৪৭৯ রান)। তারই পুরস্কার স্বরূপ আসন্ন আইপিএলে ক্লাসেনকে ধরে রাখার পাশাপাশি হায়দরাবাদ অবিশ্বাস্য পরিমাণ বেতন বাড়াবে বলে শোনা যাচ্ছে।

ভারতীয় ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো এবং ক্রিকবাজ সূত্রের বরাতে একই তথ্য জানিয়েছে। যেখানে বলা হচ্ছে– গত আসরে হায়দারাবাদ ক্লাসেনকে পারিশ্রমিক হিসেবে ৫ কোটি ২৫ লাখ রুপি দিয়েছিল। এবার সেটি বাড়ানো হবে ৩৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ, তার মূল্য বেড়ে দাঁড়াবে ২৩ কোটি রুপিতে। গত আসরে টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে মিচেল স্টার্ককে কিনেছিল  কলকাতা নাইট রাইডার্স।

গত আসরে দারুণ পারফর্ম করা হায়দরাবাদ শেষ পর্যন্ত ফাইনালে গিয়ে তিক্ত হার দেখে কলকাতার বিপক্ষে। যেখানে রানার্স-আপ দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। আসন্ন আসরেও তাকে ধরে রাখতে চাচ্ছে হায়দরাবাদ। তবে এক্ষেত্রে তার মূল্য কমানো হতে পারে। আগের চেয়ে ১২.২ শতাংশ কমিয়ে তার পারিশ্রমিক নির্ধারণ হতে পারে ১৮ কোটি রুপিতে। গত আসরের মিনি নিলামে স্টার্কের আগে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়ে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছিলেন কামিন্স। পরে তার ২০ কোটি ৫০ লাখ রুপিকেও ছাড়িয়ে যান স্বদেশি পেসার।

কাব্য মারানের হায়দরাবাদ গত আইপিএলে ছিল চরম বিধ্বংসী। যার শুরুটা হতো দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও অভিষেক শর্মাকে দিয়ে। মাঝে সেই ঝড়ে গতিবেগ বাড়িয়ে দিতেন মিডল অর্ডারে নামা ক্লাসেন। তার মতো আসন্ন আসরেও দুই ওপেনার হেড-অভিষেককে ধরে রাখতে চায় হায়দরাবাদ। আগেরবার অভিষেক ২০৪ স্ট্রাইকরেটে ৪৮৪ রান করেছিলেন এবং মেরেছেন সর্বোচ্চ ৪২টি ছক্কা। এজন্য তার দামও বাড়িয়ে ১৪ কোটি রুপি করা হতে পারে। যা আগের চেয়ে ১১৫ শতাংশ বেশি, তার পূর্বের পারিশ্রমিক ছিল ৬ কোটি ৫০ লাখ রুপি। 

১৯১.৫৫ স্ট্রাইক রেটে ৫৬৭ রান করা অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার হেডের দামই আসন্ন আসরে বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে সবার জন্য চমক হিসেবে এসেছে ক্লাসেনের বড় অঙ্কের দাম বাড়ার বিষয়টি। তবে এটা স্পষ্ট যে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি হেডকেও ধরে রাখতে চাচ্ছে, সেক্ষেত্রে তার বেতনের অঙ্ক কেমন বাড়ছে সেটি এখনও পরিষ্কার নয়।

এ ছাড়া হায়দরাবাদ তরুণ অলরাউন্ডার নীতিশ কুমার রেড্ডিকেও ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেড্ডি তার অভিষেক মৌসুমে মাত্র কয়েকটি ম্যাচেই মুগ্ধ করেছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ ও ভক্তদের। পরবর্তীতে সম্প্রতি বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের হয়ে তার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও অভিষেক হয়েছিল, যেখানে তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ৩৪ বলে ৭৪ রান করেছিলেন। পাশাপাশি ৩ উইকেটও শিকার করে সিরিজটিতে। 

প্রসঙ্গত, আসন্ন আইপিএলের নিলামের আগে প্রতিটি দল একজন আনক্যাপডসহ (অনভিষিক্ত) ৬ জন ক্রিকেটারকে আগের স্কোয়াড থেকে ধরে রাখতে পারবে। সেক্ষেত্রে হায়দরাবাদ হেড, অভিষেক, ক্লাসেন, কামিন্স ও নীতিশ রেড্ডিকে রিটেনশন করবে বলে অনেকটাই নিশ্চিত। রিটেনশনের ডেডলাইন (চূড়ান্ত সময়) রাখা হয়েছে ৩১ অক্টোবর। এ ছাড়া নভেম্বরে (সম্ভাব্য) এবারের নিলাম হবে মেগা (বড় পরিসরে), অর্থাৎ আগের দামের রেকর্ডও যে এবার ভেঙে যেতে পারে তারই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

এএইচএস