২০১৯ সালে সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে দেখা গেছে ইমরুল কায়েসকে। অবশ্য ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনো নিয়মিত খেলছেন টাইগার এই ওপেনার। বাংলাদেশ দল থেকে কায়েসের বাদ পড়া নিয়ে গড়-স্ট্রাইকরেট কম থাকার যুক্তি দেখানো হলেও, বিতর্ক কম হয়নি। বাংলাদেশি ক্রিকেট সমর্থকদের অনেকের মতে, তার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। 

ইমরুল কায়েসও জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর নানা সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) কাঠগড়ায় তুলেছেন। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা হারানোর এক প্রতিক্রিয়ায় যেমন বলেছিলেন, আমি আশ্বাস পেয়েছিলাম যে আমি কনফার্ম বিশ্বকাপ দলে যাচ্ছি। আমি আমার বিশ্বকাপের ভিশন সেভাবেই সেট করেছিলাম। দল ঘোষণার পর শুনলাম আমি দলে নেই। আমার সমস্ত স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও। এরই মধ্যে বিসিবি সভাপতিসহ অনেক পদে রদবদল হয়েছে। এরই মধ্যে আসন্ন একাদশ বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফট নিয়ে কোনো রাখঢাক না রেখেই ক্ষোভ ঝাড়লেন ইমরুল কায়েস। সেই সঙ্গে জাতীয় দলের রাডার থেকে বাদ পড়ার অদ্ভুত অজুহাতের কথাও জানালেন।

নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে ইমরুল কায়েস বলেন, বিপিএলে এক আসরে ভালো করতে না পারার মাশুল গুনতে হয়েছিল জাতীয় দলে জায়গা হারিয়ে। তিনি বলেন, বিপিএলের ২০১৮-১৯ মৌসুমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে আমি ভালো করতে পারিনি। যে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজের পর আমাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিসিবির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন কথা হলো তখন বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বিপিএলে আমার পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো ছিল না। যেহেতু প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি তাই আমি কোনো সংকোচ ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম।

আরও যোগ করেন ইমরুল কায়েস, জাতীয় দলে ফিরতে আমি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি। ২০১৯-২০ মৌসুমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ৪৪২ রানও করেছিলাম। কিন্তু এমন পারফরম্যান্সের পরও আমাকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। এমনকি জাতীয় দলের কোন ক্যাম্পেও রাখা হয়নি। তবে কি বিপিএলে পারফর্ম না করলেই বাদ? কিন্তু পারফর্ম করলে, সেটাও তো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ক্রিকেটের দুর্দিন কি তবে শেষ হবে না?

এ ছাড়া আসন্ন বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের গ্রেডিং নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইমরুল কায়েস বলেন, বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে ক্রিকেটারদের গ্রেডিং দেখে চিন্তা করছি গ্রেডিংটা আসলে কিসের ভিত্তিতে করা হয়। জাতীয় দল, সারা বছরের ঘরোয়া পারফরম্যান্স, বিপিএলের পারফরম্যান্স নাকি শুধু নাম দেখে করা হয়। বছরজুড়ে ক্রিকেটের আশেপাশে না থাকা ক্রিকেটারের জায়গা হলো ‘বি’ গ্রেডে। অথচ গত বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা ‘সি’ গ্রেডে। তবে কি শুধু নাম কিংবা চেহারা দেখেই বিপিএলের ড্রাফটের গ্রেড নির্ধারণ করা হয়?

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ইমরুল কায়েস। ওডিআই ক্রিকেট থেকে বাদ পড়েন ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পরপরই। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা ম্যাচটাই অঘোষিত শেষ ম্যাচ হয়ে গেছে। লাল-সবুজের জার্সিতে তিন ফরম্যাটে ১৩১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা।

এফআই