টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সময়টা ভালো যাচ্ছে না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিনি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এক ওভারে পাঁচটি ডট বল খেলে হয়েছিলেন চরম সমালোচিত। রিয়াদের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেখানেই শেষ হবে বলে অনেকেই ভেবেছিলেন। কয়েকদিনের গুঞ্জন শেষে এলো ঘোষণা, ফরম্যাটটিকে বিদায় বললেন রিয়াদ।

এর আগে ভারতের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে রিয়াদের অন্তর্ভূক্তি সবাইকে চমক দিয়েছিল। এরপর প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন তিনি।  ২ বলে ১ রান করে তিনি সাজঘরে ফেরেন। একপেশে ম্যাচটিতে বাংলাদেশের হারের পর অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের অবসর নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। এরপর আজ (মঙ্গলবার) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসেই চলমান সিরিজ দিয়ে রিয়াদ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন।

অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বলছিলেন, ‘এই সিরিজের শেষ ম্যাচের পরেই আমি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেব। এটা আমি এই সফরে আসার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক এবং বোর্ড সভাপতিকেও সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। আমি মনে করি, এটাই সঠিক সময় এই সংস্করণ থেকে সরে গিয়ে সামনে ওয়ানডে যা আছে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার। আমার জন্য এবং পরের (টি-টোয়েন্টি) বিশ্বকাপের কথা যদি ভাবি, দলের জন্যও এটাই সঠিক সময়।’

আগামীকাল (বুধবার) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। সেটাই হবে বাংলাদেশের জার্সিতে মাহমুদউল্লাহ’র শেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচ। নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো আক্ষেপ আছে কি না প্রশ্নে তিনি জানালেন, ‘না, কোনো আক্ষেপ নেই, এক ফোঁটাও নয়।’

ফরম্যাটটিতে নিজের সবচেয়ে পছন্দের ও হতাশার দুটি স্মৃতিও জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে হতাশার মুহূর্ত ছিল ২০১৬ বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হার। সেটি ছিল আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত, সেখান থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আর সবচেয়ে সেরা মুহূর্ত পেয়েছি (শ্রীলঙ্কায়) নিদহাস ট্রফিতে।’ 

২০১৮ সালের নিদহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোয় ১৮ বলে ৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন রিয়াদ। যা ছিল বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসেরই সেরা ইনিংসগুলোর একটি। শেষদিকে চার বলে যখন প্রয়োজন ১২ রান, তখন ইসুরু উদানার বলে দর্শনীয় দুটি শটে মাহমুদউল্লাহর চার ও এক বল পর ফ্লিক করে অসাধারণ ছক্কা বাংলাদেশকে জয়ের আনন্দে ভাসিয়েছিল।

অন্যদিকে, ভারতের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুতে ম্যাচে শেষদিকে একপর্যায়ে ৩ বলে ২ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। তখন হার্দিক পান্ডিয়াকে সীমানাছাড়া করার ভূত চেপে ধরে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে। তা করতে গিয়ে আউট হন দুজনেই। বাংলাদেশ হেরে বসে ১ রানে। যা সমর্থকদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে পরিণত করে ভিলেন রূপে। 

এসএইচ/এএইচএস