বাংলাদেশের প্রথম কোনো নারী ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি শততম ম্যাচের রেকর্ড গড়েছেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। এমন মাইলফলকের ম্যাচ তিনি রাঙিয়েছেন জয় দিয়ে। যা ছিল অনেক প্রতীক্ষার, ১০ বছর পর সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্বকাপে জয়খরা কাটালো বাংলাদেশের মেয়েরা। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে জ্যোতির দল স্কটল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়েছে।

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন প্রথমবার খেলতে নেমেছিল টাইগ্রেসরা। আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সোবহানা মোস্তারির ৩৪ এবং সাথী রানির ২৯ রানের সুবাদে ১১৯ রান সংগ্রহ করে। লক্ষ্য তাড়ায় স্কটিশ মেয়েরা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৩ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে। ফলে ১৬ রানের জয় দিয়ে বিশ্বকাপের নবম আসর শুরু করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

একে তো চার বিশ্বকাপে টানা হারের পর অনেক কাঙ্ক্ষিত এক জয়, তার ওপর মাইলফলক ম্যাচ– যা জ্যোতির আনন্দকে দ্বিগুণ করেছে। ফলে ম্যাচ শেষে তাকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে দেখা যায়। জয় নিশ্চিত হওয়ার পর হাঁটু গেড়ে ক্রিজের পাশে বসে মাথা নিচু করে ফেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পরে আবার ডাগআউটে বসেও জ্যোতিকে অশ্রু ঝরাতে দেখা যায়।

পরবর্তীতে নিজের আবেগ সামলে জ্যোতি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এটি আমার কাছে অনেক বড় কিছু। যদিও প্রথমে আমাদের জন্য এখানে খেলা ছিল হৃদয় ভাঙার মতো, কারণ আমাদের মনে সবসময়ই গেঁথে ছিল যে ঘরের মাঠে নিজেদের সমর্থকদের সামনে টুর্নামেন্টটি খেলতে পারব। কিন্তু এরপর এখানকার কিছু মানুষের কাছেও আমরা সমর্থন পেয়েছি, যা দুর্দান্ত। পেশাদার দল হিসেবে আমরা ভুলে যেতে চাই যে বাংলাদেশের দর্শকদের সামনে খেলতে পারছি না, আমরা যে এখনও খেলতে পারছি সেটাই সৌভাগ্যের।’

এর আগে ম্যাচ জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে জ্যোতি বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরে এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমাদের মনে ছিল, এটাই আমাদের সময়। এই জয় আমাদের জন্য অনেক অর্থবহ। এই ধরনের উইকেটে মানিয়ে নেওয়া জরুরি ছিল এবং শুরুতে ব্যাট করা মোটেও সহজ ছিল না। তবে (সাথী) রানি ও (সোবহানা) মোস্তারির পার্টনারশিপ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা একটি ভালো স্কোর দাঁড় করিয়েছিলাম এবং আমাদের নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাস ছিল।’

স্কটল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে দেশের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শততম উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার। সতীর্থকে অভিনন্দন জানিয়ে টাইগ্রেস অধিনায়ক বলেন, ‘আমাদের স্পিন আক্রমণ খুবই ভালো, মারুফাও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। তাই আমরা বিশ্বাস রেখেছিলাম যে আমরা আমাদের স্কোর ডিফেন্ড করতে পারব। আমরা কিছুটা আলাদা কৌশল নিয়ে কাজ করছি, যেমন আমি নিচে ব্যাট করছি। তাজ (নেহার) শেষ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো খেলেছিল, পরিকল্পনা ছিল সে কিছু বাউন্ডারি মারবে। যদিও তা সম্ভব হয়নি, তবে আমরা যেভাবে গতি পেয়েছি, তাতে আমি খুশি। মেয়েদের হাসি আমার জন্য সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’ 

এএইচএস