মাত্র দুদিনেও যে টেস্ট জেতা যায় সেটাই কানপুরে দেখাল ভারত। সময়ের হিসাব করলে হয়তো সেটি দুই দিনেরও কম হবে। প্রথমদিন এক সেশনের কিছু বেশি সময় খেলা হয়েছিল, এর পরের দুইদিন কোনো খেলাই হয়নি। বাকি দুইদিন হাতে ছিল কেবল, তবে ভারত ডেডলাইনের অনেক আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্ট জিতে নিলো ৭ উইকেটে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও যশস্বী জয়সওয়ালদের নায়কোচিত পারফরম্যান্সে হয়েছে বেশকিছু রেকর্ডও।

গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। এমনকি সেখানে আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ গড়ানো নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে এসব যে রোহিত শর্মার দলের কাছে কিছুই নয়! সবাই ধরে নিয়েছিল মাত্র দুদিন বাকি থাকা টেস্টটির ফল হবে ড্র। কিন্তু আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ভারত টেস্টে সবচেয়ে দ্রুততম দলীয় ৫০, ১০০, ১৫০ এবং ২০০ রান তুলে সব হিসেব উল্টে দিলো। এটি চতুর্থ দিনের কথা, পঞ্চম দিনে তারা ম্যাচ জিতে রেকর্ডবুকে আরও কয়েকটি নাম তুলেছে।

১৮
ঘরের মাঠে টানা ১৮ সিরিজ (২০১৩-২০২৪) জিতেছে ভারত। যা ফরম্যাটটিতে কোনো দলের সর্বোচ্চ ধারাবাহিক সিরিজ জয়। ক্রিকেটের বড় পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া দুইবার (১৯৯৪-২০০০ এবং ২০০৪-২০০৮) টানা ১০টি করে নিজ দেশে সিরিজ জিতেছে। এ ছাড়া টানা ৮টি করে টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের।

১৮০
এখন পর্যন্ত টেস্টে ভারতের জয় ১৮০ ম্যাচ। তবে এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ জয়ের হিসাব। সবচেয়ে বেশি টেস্ট জয়ের রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার ৪১৪টি। এরপর ইংল্যান্ড ৩৯৭, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮৩ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ১৭৯ টেস্ট জিতেছে। 

৩১২
কানপুর টেস্টের দুই ইনিংসে ভারত মাত্র ৩১২ বল ব্যাট করেছে। যা টেস্টে বিজয়ী দলের চতুর্থ সর্বনিম্ন বল খেলার রেকর্ড। ১৯৩৫ সালে দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ২৭৬ বল খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্টে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। এ ছাড়া ভারত এই বছরেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় ২৮১ বল খেলে। 

৭.৩৬
বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ হওয়া টেস্টের দুই ইনিংসে ভারত রান তুলেছে ৭.৩৬ গড়ে, যা বিশ্বরেকর্ড। এর আগের সর্বোচ্চ রানরেটের (৬.৮০) রেকর্ডটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার, ২০০৫ সালের সেই টেস্টে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। এ ছাড়া ইংল্যান্ড ৬.৭৩ রানরেটে পাকিস্তানকে এবং ৬.৪৩ রানরেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট করেছিল। 


টেস্টের সম্পূর্ণ দুইদিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও জয়ের রেকর্ড আছে আটটি। যার সর্বশেষ কীর্তিটি গড়েছে ভারত। এর আগে আরও তিনটি দেশ (ইংল্যান্ড ৪ বার, নিউজিল্যান্ড ৩ বার) সাতটি ম্যাচে দুইদিন বৃষ্টিতে খেলা না হলেও, বাকি সময়ের ভেতর জয় নিশ্চিত করেছিল।

১১
টেস্টে সর্বোচ্চ ১১ বার সিরিজসেরা হওয়ার রেকর্ডটি এতদিন দখলে ছিল শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরনের। আজ টেস্টে তার সমান ১১তম সিরিজসেরার পুরস্কার জিতলেন ভারতীয় স্পিন অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এ ছাড়া জ্যাক ক্যালিস ৯ এবং স্যার রিচার্ড হ্যাডলি, ইমরান খান ও শেন ওয়ার্ন টেস্টে ৮ বার করে সিরিজসেরা হয়েছিলেন।

১২৮.১২
বাংলাদেশকে হারানোর ম্যাচে কানপুরে দুই ইনিংস মিলিয়ে যশস্বী জয়সওয়াল ১২৮.১২ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন। যা টেস্টের দুই ইনিংসেই ফিফটি পাওয়া কোনো ব্যাটারের তৃতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট। এ ছাড়া প্রথম কোনো ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে ৫০ বলের কম খেলে দুই ইনিংসেই ফিফটি পূর্ণ করেন এই বাঁ-হাতি ওপেনার। 

চলতি বছরের এখন পর্যন্ত  জয়সওয়াল টেস্টে ৯২৯ রান করেছেন। যা এক বছরে (২৩ বছর বয়সের আগেই) কোনো ভারতীয় ব্যাটারের সর্বোচ্চ টেস্ট রান। ওই বয়সে ১৯৭১ সালে ফরম্যাটটিতে সুনীল গাভাস্কার ৯১৮ রান করেছিলেন।

এএইচএস