দিন দুয়েক পরেই কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের সবুজ মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ এবং ভারত সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। ২০২১ সালে নিউজিল্যান্ড টেস্টের পর এবারই প্রথম ভারতের জাতীয় দল আসছে উত্তর প্রদেশের এই স্টেডিয়ামে। সময়ের হিসেবে প্রায় তিন বছর পর এখানে পা রাখবেন রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিরা। আর বাংলাদেশের জন্য কানপুরের গ্রিন পার্কে এটাই প্রথম ভ্রমণ। 

তবে ম্যাচ শুরুর দিনদুয়েক আগেই কানপুরের এই স্টেডিয়ামকে নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন শঙ্কা। ভারতের উত্তর প্রদেশের পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি) কানপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারির একটি স্ট্যান্ডকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা দিয়েছে। গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের বেলকনি ‘সি’ নিয়ে এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কর্মকর্তাদের ধারণা, গ্যালারির ওই অংশে লোক সমাগম হলে পুরো জায়গাটি ধসে পড়তে পারে। 

এমনকি বৃষ্টি শঙ্কা ও বৈরী আবহাওয়ার মাঝে গ্যালারির ওই অংশ বরাবর থাকা ফ্লাডলাইন ব্যবহার করা যাবে কি না তা নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, ‘ঋষভ পান্ত ছক্কা হাঁকানোর পর যদি ৫০ জন দর্শকও আনন্দ প্রকাশ করতে শুরু করে, তবে এই অংশটি ভেঙে পড়তে পারে।’ 

যদিও এরইমাঝে ওই গ্যালারির ৪ হাজার ৮০০ আসনের মাঝে ১ হাজার ৭০০ আসনের টিকিট বিক্রি করে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ। উত্তর প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী অঙ্কিত চ্যাটার্জি দেশটির এক গণমাধ্যমে টিকিট বিক্রির কথা উল্লেখ করা জানান। ‘পিডব্লিউডি কিছু ইস্যু তুলে ধরে। আর আমরা একমত যে ব্যালকনি ‘সি’ এর সব টিকিট বিক্রি করা হবে না।’ 

পিডব্লিউডি এর ইঞ্জিনিয়াররা ৬ ঘণ্টা পর্যবেক্ষক শেষে গ্যালারি নিয়ে এই মন্তব্য করেন। পুরাতন এই গ্যালারির কারণে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট নিয়েও সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ভাষ্য, এরইমাঝে স্টেডিয়ামের ভিআইপি গ্যালারির ওপরের অংশে থাকা ফ্লাডলাইটের ৮টি বাতি নষ্ট অবস্থায় রয়েছে। 

কানপুরে দৃষ্টিসীমা নিয়ে অভিযোগ অনেক পুরাতন। ২০২১ সালে বাজে আলোর কারণে ম্যাচ ড্র করেছিল ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। মূলত ব্যাপক আকারের দূষণের কারণে এই স্টেডিয়ামে দৃষ্টিসীমা কমে এসেছে বলে জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম। বিশেষ করে, লখনৌ শহরে নতুন স্থাপিত একানা স্টেডিয়ামের কারণে বর্তমানে অনেকটাই পরিত্যক্ত ৭৯ বছরের পুরাতন এই স্টেডিয়াম। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ম্যাচের আগে নতুন করে দেখা গেল শঙ্কা। 

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। এই ম্যাচ নিয়ে আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছিল ভারতের হিন্দু মহাসভা। তবে খেলা শুরুর আগে ভেন্যুটিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশ পুলিশের এসিপি হরিশ চন্দ্র। তিনি বলেছেন, গতকাল (সোমবার) অখিলেশ ভারতীয় হিন্দু মহাসভার ২০ সদস্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে ওই এলাকায় ‘ফুল-প্রুফ’ (অব্যর্থ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এই ম্যাচের জন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে হরিশ চন্দ্র বলেন, ‘আমরা পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে রেখেছি, যাতে একটি পাথরও বাদ না যায়। প্রয়োজন অনুসারে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্যও মোতায়েন করা হবে।’

জেএ