টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৮০ রানের বড় ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ভারত। ৫১৫ রানের অসম্ভব লক্ষ্য তাড়ায় নাজমুল হোসেন শান্ত’র ৮২ রান সত্ত্বেও টাইগাররা মাত্র ২৩৪ রানেই অলআউট হয়ে যায়। এমন দাপুটে জয়ই ভারত চেয়েছে বলে ম্যাচ শেষে মন্তব্য করেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। একইসঙ্গে তিনি ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং ঋষভ পান্তসহ সতীর্থদের কৃতিত্ব দিয়েছেন।

প্রায় ছয়মাস পর টেস্ট ফর‌ম্যাটে খেলতে নেমেছিল ভারত। যদিও তারা খেলার বাইরে ছিল না, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হওয়ায় বেশ গুরুত্বসহকারে বেশিরভাগ ক্রিকেটারদের খেলানো হয় দুলীপ ট্রফিতে। বাংলাদেশ সিরিজসহ টানা ১০টি টেস্ট খেলার মিশনে প্রথমটিতে আজ জয়ের পর রোহিত বলেন, ‘আমাদের আসন্ন সূচির আগে বড় এই জয় দারুণ কিছু। দীর্ঘ সময় পর আমরা (টেস্ট) খেলতে নেমেছিলাম, তবে কখনোই ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলাম না। এক সপ্তাহ আগে এখানে (চেন্নাই ক্যাম্প) এসেছি এবং এমন ফলই চেয়েছিলাম।’

ভারতের ম্যাচ জয়ের পথে বড় অবদান ছিল অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অশ্বিনের। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি শিকার করেন ৬ উইকেট। যার ফলে বেশ কয়েকটি রেকর্ডও গড়েছেন এই তারকা। স্বভাবতই তাই অশ্বিনের প্রশংসা করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত, ‘বল-ব্যাট হাতে সবসময়ই সে আমাদের জন্য অবদান রেখেছে। তাকে সবসময় এমন ফর্মে দেখা সত্যিই আনন্দের। কখনোই নিজের ছন্দের বাইরে ছিল না।’

সাধারণত চেন্নাইয়ের পিচ স্পিনবান্ধব হিসেবেই পরিচিত, যদিও ম্যাচের প্রথম দুই দিন পুরো দাপট ছিল পেসারদের। লাল মাটির এই পিচের চ্যালেঞ্জ নিয়ে রোহিত বলেন, ‘কন্ডিশন কেমন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আমরা এরই মাঝে দলীয়ভাবে পারফর্ম করতে চেয়েছি। এজন্য কিছুটা ধৈর্য্যের প্রয়োজন ছিল। এমন পিচে আমাদের খেলোয়াড়রাও যথেষ্ট সহনশীলতা দেখিয়েছে। ব্যাট-বল উভয় দিক থেকেই ধৈর্য্য ধরে চাপ প্রয়োগ করে গেছে প্রতিপক্ষের ওপর।’

বাংলাদেশ আজ চতুর্থ দিন শুরু করে ৪ উইকেটে ১৫৮ রানের পর থেকে। প্রায় শেষপর্যন্ত একপ্রান্ত আগলে রাখলেও সেভাবে বড় সঙ্গ পাননি অধিনায়ক শান্ত। সাকিব আল হাসান থিতু হয়েও ২৫ রান করে আউট হয়ে যান। পরে শান্তই (৮২) কেবল বলার মতো রান করেন। দিনের মধ্যবিরতির আগেই ছয়টি উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। এ নিয়ে ভারত নিজেদের মাটিতে ২০১২ সাল থেকে টানা সিরিজ জয়ের রেকর্ড ধরে রাখলো।

এই সিরিজ দিয়ে দীর্ঘ ২১ মাস পর টেস্টে ফিরেছিলেন পান্ত। শুভমান গিলের সঙ্গে জুটি বেধে দ্বিতীয় ইনিংসে বড় স্কোর গড়েন। সেঞ্চুরি তুলে নেন উভয়েই। পান্তের এমন রাজসিক প্রত্যাবর্তন নিয়ে রোহিত বলেন, ‘সে যেভাবে নিজের পুরোনো রূপে ফিরে এসেছে এটি দেখা চোখের শান্তি। আইপিএল দিয়ে তার মাঠে (ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর) প্রত্যাবর্তন হয়, এরপর সফল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং এই ফরম্যাটটি সে অনেক বেশি ভালোবাসে। এই ম্যাচ জয়েও তাকে কৃতিত্ব দিতে হবে, সরাসরি অবদান রেখেছে ম্যাচে।’

এএইচএস