ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২১ রানেই ৯ উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কায় ছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ উইকেটে দারুণ এক ঝড়ে অ্যালেক্স ক্যারি সেই শঙ্কা তো এড়ালেন–ই, দলকেও ২৭০ রানের লড়াকু স্কোর এনে দেন। বিপরীতে ইংল্যান্ডের প্রথম স্পিনার হিসেবে ওয়ানডেতে ২০০ উইকেটের রেকর্ড গড়েন আদিল রশিদ। তবে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় জয়ের আশাটুকুও দেখাতে পারল না ইংলিশরা। টানা দ্বিতীয় হার দেখলো ৬৮ রানের বড় ব্যবধানে।

লিডসে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মিচেল স্টার্কের তোপে মাত্র ২০২ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। এ নিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া টানা ১৪টি ওয়ানডে ম্যাচে জিতল। তাদের এই যাত্রা শুরু হয় গত বছরের অক্টোবরে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে। তার আগের আট ম্যাচের সাতটিই হেরেছিল অজিরা। ৫০ ওভারের ফরম্যাটে এর চেয়ে বেশি টানা জয়ের রেকর্ডও অস্ট্রেলিয়ার দখলে। ২০০৩ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত টানা ২১ ওয়ানডে জিতেছিল রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বাধীন দলটি।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও ম্যাথু শর্ট। দারুণ কিছু শট খেললেও এবার ইনিংস টেনে নিতে পারেননি হেড (২৭ বলে ২৯)। ৩৬ বলে ২৯ রান করে ফেরেন শর্ট। এরপর ম্যাথু পটসের দারুণ এক সুইংয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ স্টিভ স্মিথও (৪)। ৮৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে ৫৬ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন মিচেল মার্শ ও মার্নাস লাবুশেন। ৪৭ বলে ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মার্শ (৬০)। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৭৭ রানের ইনিংস খেলা লাবুশেন এবার মাত্র ১৯ রান করেন।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় অজিরা। এক পর্যায়ে ২২১ রানেই তারা ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে। সেখান থেকে শেষ উইকেটে জশ হ্যাজলউডের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটিতে দলকে আড়াইশ ছাড়ানো (২৭০) সংগ্রহ এনে দেন ক্যারি। ওই জুটিতে তিনি একাই করেন ৪১ রান। শেষপর্যনন্ত এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার ৬৭ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৪ রানের ইনিংস খেলেন। 

ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেছেন ব্রাইডন কার্স। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আদিল রশিদ, ম্যাথু পটস ও জ্যাকব বেথেল। ১৩৭তম ওয়ানডেতে উইকেটের ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ পূরণ করেছেন রশিদ। ইংলিশ স্পিনারদের মধ্যে যা প্রথম, ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের জার্সিতে অন্তত ১০০ উইকেট রয়েছে মোট তিন স্পিনারের। বাকি দুজন অফস্পিনার মঈন আলি (১১১) ও গ্রায়েম সোয়ান (১০৪)। এই ফরম্যাটে উইকেট শিকারে ইংলিশদের মধ্যে তিনে অবস্থান রশিদের। তারচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসন (২৬৯) ও ড্যারেন গফ (২৩৪)।

আগের ম্যাচে ৩১৫ রান করেও বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছিল ইংলিশদের। সেক্ষেত্রে তুলনামূলক ছোট পুঁজি পেয়েও লড়াকু মানসিকতা দেখাতে পারল না হ্যারি ব্রুকের দলটি। শুরু থেকেই তারা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায়। যার শুরুটা হয় হ্যাজলউডের বলে দলীয় ২৬ রানে ফিল সল্ট আউট হয়ে। আগ্রাসী ব্যাটিং করা বেন ডাকেটও ফেরেন ৩০ রানে। তার আগে মাঝে ইংলিশরা অল্প সময়ের ব্যবধানে হারায় দুই মিডল অর্ডার হ্যারি ব্রুক (৪) ও উইল জ্যাকসকে (০)। মাঝে স্বাগতিকদের কিছুটা আশা দেখান জেমি স্মিথ (৪৯)। তবে তার বিদায়ে আর কেউ উল্লেখযোগ্য রান পাননি।

শেষদিকে বেথেল (২৫), কার্স (২৬) ও আদিল রশিদের (২৭) ছোট ক্যামিওতে ২০০ রান পেরিয়ে ব্যবধান কমায় ইংল্যান্ড। তবে সেটি হার এড়াতে যথেষ্ট ছিল না। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। এ ছাড়া হ্যাজলউড, অ্যারন হার্ডি ও ম্যাথু শর্ট ২টি করে শিকার করেন।

এএইচএস