দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং দেখে কিছুটা কি আক্ষেপ করছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা? টেস্ট ক্রিকেটের নিয়মে দ্বিতীয় দিনের তুলনায় তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে ব্যাটিং কন্ডিশন কিছুটা কঠিন হওয়ারই কথা। কিন্তু, চেন্নাইয়ে বাংলাদেশের ব্যাটাররা তৃতীয় দিনেই যেন অপেক্ষাকৃত ভালো করেছেন। আগের ইনিংসে জাসপ্রিত বুমরাহর সেটআপে ফিরে গিয়েছিলেন সাদমান ইসলাম। 

তবে এবারে সাদমান এবং জাকির হোসেনই যেন শুরু থেকে এগিয়ে দিলেন পজেটিভ ব্যাটিং নিয়ে। দুজনের ৬২ রানের জুটি রীতিমতো নাম লিখিয়েছে রেকর্ডের পাতায়। নাজমুল হাসান শান্ত অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে কেবল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পেয়েছিলেন এক ফিফটি। ১০ ইনিংস পর টেস্টে ৫০ আজ পেরুলেন তিনিও। দিনটা বাংলাদেশ শেষ করেছে ৪ উইকেট হারিয়ে। স্কোরবোর্ডে রান ১৫৮। 

যদিও এখান থেকে ঠিক ম্যাচ জয়ের আশা করা চলে না বাংলাদেশের জন্য। টাইগাররা চাইলে নিজেদের লক্ষ্যকে তিন মাত্রায় নিতে পারে চতুর্থ দিনের জন্য। ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটারের প্রথম লক্ষ্য হতে পারে ৩০৭ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৭ রান করতে পারলে বাংলাদেশ ম্যাচ হারবে ২০৭ রানের ব্যবধানে। রানের হিসেবে ভারতের কাছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানের হার ছিল ২০৮ রানে। ৩০৭ পেরুলে সেই লজ্জা অন্তত পেরুতে পারবে টাইগাররা। 

পরের লক্ষ্য হতে পারে ৪১৩। ২০০৮ সালে ঢাকা টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের টার্গেট ছিল ৫২১। মোহাম্মদ আশরাফুলের ১০১, সাকিব আল হাসানের ৯৬, মুশফিকুর রহিমের ৬১ রান বাংলাদেশকে নিয়ে যায় ৪১৩ পর্যন্ত। সেদিন বাংলাদেশ অবশ্য একটা পর্যায়ে জয়ের স্বপ্নও দেখেছিল। মুশফিক-সাকিবের ১১১ রানের জুটিতে রান এসেছিল ৪০৩ পর্যন্ত। কিন্তু এরপরে টেলএন্ডাররা গুঁড়িয়ে যান অবিশ্বাস্য দ্রুততায়। 

বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ ইনিংসে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সেই ৪১৩। আগামীকাল ভারতের বিপক্ষে সেই অসম্ভব লক্ষ্যের দিকেও চোখ রাখতে পারে টাইগাররা। সেক্ষেত্রেও অবশ্য বাংলাদেশকে ম্যাচ হারতে হবে ১০১ রানে। 

আর শেষটা লক্ষ্যটা অবশ্যই ৫১৫। ভারতের ছুঁড়ে দেয়া টার্গেট। প্রথম ইনিংস শেষে রোহিত শর্মার দল লিড পেয়েছিল ২২৭ রানের। সেখান থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৭ রান করে বাংলাদেশের সামনে ভারত দাঁড় করায় ৫১৫ রানের বিশাল টার্গেট। জিততে চাইলে বাংলাদেশকে গড়তে হবে ইতিহাস। চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রানতাড়ার নজির ৪১৮। 

২০০৮ সালের ঢাকা টেস্টে সাকিব আল হাসান 

চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ৬৫৪। তবে ডারবানে ইংল্যান্ড যখন রান করেছিল, তখন টেস্টের বয়স ছিল ১১ দিন। ইতিহাসে ২৭১তম টেস্ট ছিল সেটি। আর ৫ দিনের টেস্টের হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ৪৫১। ২০০২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই সংগ্রহ ছিল নিউজিল্যান্ডের। বাংলাদেশ কাল কতটা যেতে পারে, সেটা দেখাই এখন বড় অপেক্ষা। 

জেএ