হাসান মাহমুদদের তোপে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে অনেকটা শেষের পথে ছিল ভারত। সেখান থেকে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে তিনশ’র দিকে ছুটছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ব্যক্তিগত পঞ্চাশের মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেলেছেন দুজনেই। সপ্তম উইকেটে এ জুটির রান এরই মধ্যে দেড়শোর পথে। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে সপ্তম উইকেটে দেশটির সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। 

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৭৫ রান। ৮১ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত আছেন অশ্বিন, জাদেজা খেলছেন ৭৬ বলে ৫১ রানে। এ জুটির সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ১৫৬ বলে ১৩১ রান। 

চেন্নাইয়ে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে নতুন বলে দুর্দান্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ভারতের ৩ উইকেট নিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতিতে গিয়েছিল সফরকারীরা। দ্বিতীয় সেশনে স্বাগতিকদের আরও ৩টি উইকেট দখলে নেয় বাংলাদেশ।

দুই সেশন মিলিয়ে মোট ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে কোণঠাসা করে ফেলেছিল নাজমুল হোসেন শান্তরা। কিন্তু সপ্তম উইকেটে চেন্নাইয়ের ঘরের ছেলে রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার অবিচ্ছিন্ন জুটিতে কামব্যাক করেছে টিম ইন্ডিয়া। অন্যদিকে অস্বস্তি বাড়ছে বাংলাদেশ শিবিরে। 

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে আজ (বৃহস্পতিবার) চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে টাইগার পেসাররা। শুরু থেকেই হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদকে খেলতে অস্বস্তিতে ভুগেছেন ভারতের দুই ওপেনার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে হাসানের বলে রোহিতের বিপক্ষে রিভিউ নিয়েছিল বাংলাদেশ। আম্পায়ার্স কলের কারণে সে যাত্রায় লেগ বিফোর থেকে বেঁচে যান ভারত অধিনায়ক। তবে নিজের পরের ওভারে ফিরেই রোহিতকে সাজঘরে ফেরান হাসান।

ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলটি স্টাম্পের ভেতরে রেখেছিলেন হাসান। রোহিত একটু বেশি সাবধানে ডিফেন্স করতে গিয়ে পুরো ব্যাটে পাননি। ব্যাটের কানা নিয়ে বল জমা পড়ে প্রথম স্লিপে শান্তর হাতে। দারুণ লো ক্যাচ নিয়েছেন শান্ত। সাজঘরে ফেরার আগে ১৯ বলে ৬ রান করেন রোহিত। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি শুভমান গিল। অষ্টম ওভারে হাসানের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন গিল। ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া ভারতের ভরসা হয়ে চারে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি। তবে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকেও দাঁড়াতে দেননি হাসান। ১০ম ওভারে হাসানের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটকিপার লিটনকে ক্যাচ দেন কোহলি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬ বলে ৬ রান।

৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জয়সাওয়াল ও পান্তের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ভারত। এ দুজনে মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করেছেন ৬২ রান। ৩৯ রান করে পান্ত বিদায় নিলে ভাঙে সেই জুটি। এই উইকেটকিপার ব্যাটারকেও ফেরান হাসান। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের খাটো লেংথের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন পান্ত।

পান্তের বিদায়ের পর লোকেশ রাহুলকে নিয়েও বড় জুটির পথে এগোচ্ছিলেন জয়সাওয়াল। তবে ব্যক্তিগত ফিফটি স্পর্শ করে আর বেশি দূর এগোতে পারলেন না তিনি। ইনিংসের ৪২তম ওভারে এসে উইকেটের দেখা পান নাহিদ রানা। তার করা ১৪৮ কিলোমিটার গতির বলটি জয়সাওয়ালের ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে সাদমানের হাতে জমা পড়ে। ১১৮ বলে ৫৬ রানে আউট হন এই তরুণ ওপেনার।

এর তিন বল পরই সাজঘরে ফেরেন আরেক সেট ব্যাটার লোকেশ রাহুলও। ইনিংসের ৪৩তম ওভারে বোলিংয়ে ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ওভারের তৃতীয় বলে শর্ট লেগে জাকির হাসানকে ক্যাচ দেওয়ার আগে রাহুলের ব্যাট থেকে এসেছে ৫২ বলে ১৬ রান।

এফআই