বাংলাদেশের মাটিতে আগামী ৩ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তবে দেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় আসরটি সরিয়ে নেওয়া হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আজ (মঙ্গলবার) আসন্ন বিশ্বকাপের প্রাইজমানি ঘোষণা করেছে আইসিসি। যেখানে মেয়েদের এই টুর্নামেন্টের অর্থ ‍পুরস্কার বাড়ানো হয়েছে অবিশ্বাস্য হারে, যা পুরুষ ক্রিকেটের সমান।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৪ নারী বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য বরাদ্দ প্রাইজমানির পরিমাণ ২.৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে মেয়েদের গত বিশ্বকাপের তুলনায় এই অঙ্ক বাড়ানো হয়েছে ১৩৪ শতাংশ। সেই আসরে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ১ মিলিয়ন ডলার পেয়েছিল। কেবল চ্যাম্পিয়ন দলই নয়, বিশ্বকাপের সর্বমোট প্রাইজমানিও বেড়েছে ২২৫ শতাংশ। 

মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর সর্বশেষ হয়েছিল ২০২৩ সালে। যেখানে সর্বমোট প্রাইজমানি ছিল ২.৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবার সেই প্রাইজমানি অবিশ্বাস্যভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, অর্থাৎ পুরো আসরের জন্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত আসর শেষেই ২০২৩ সালের জুনে পুরুষ ও নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রাইজমানি সমান বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছিল আইসিসি, নতুন আসরের আগে সেটি বাস্তবায়নের পথে হাঁটলো তারা।

দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় গত আসরে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ান নারীরা পেয়েছিল ১০ লাখ ডলার। এবার শিরোপাজয়ী দল পাবে ২৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর রানার্সআপ দলকে ৫ লাখ ডলারের পরিবর্তে দেওয়া হবে ১১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। দুই জায়গায়ই প্রাইজমানি বাড়ানো হয়েছে ১৩৪ শতাংশ। এ ছাড়া সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া দুই দল পাবে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ডলার করে। ২০২৩ আসরের (২ লাখ ১০ হাজার) চেয়ে যা তিন গুণেরও বেশি। চলতি বছর অনুষ্ঠিত ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ভারতও ২৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার পেয়েছিল। মেয়েদের সঙ্গে তাদের এই পার্থক্যের কারণ ম্যাচসংখ্যা বেশি হওয়া।

টুর্নামেন্টটিতে অংশ নিতে যাওয়া দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ফলে অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের মতো নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন দলটি গ্রুপপর্বে অংশ নিয়েই ১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ ডলার (১ কোটি ৩৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা) পাবে। এ ছাড়া ১০ দলের এই প্রতিযোগিতায় গ্রুপ পর্বে প্রতিটি জয়ের জন্য দেওয়া হবে গত আসরের ১৭ হাজার ৫০০ ডলারের চেয়ে যা ৭৮ শতাংশ বেশি।

কেবল তাই নয়, বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেওয়া দলগুলোও খালি হাতে যাবে না। গ্রুপে তৃতীয় ও চতুর্থ হওয়া দলকে দেওয়া হবে ২ লাখ ৭০ হাজার ডলার করে। আর পঞ্চম স্থানে থাকা দল পাবে ১ লাখ ৩৫ হাজার ডলার।

প্রসঙ্গত, আগামী ৩ অক্টোবর শুরু হয়ে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। দুবাই এবং শারজাহর দুই স্টেডিয়ামে আয়োজিত হবে টুর্নামেন্টের ২৩টি ম্যাচ। যেখানে গ্রুপ ‘বি’ তে বাংলাদেশের সঙ্গী হিসেবে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং স্কটল্যান্ড। গ্রুপ ‘এ’ তে আছে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবে নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। ৩ অক্টোবর বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টুর্নামেন্ট। 

এএইচএস