টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সবচেয়ে ধারাবাহিক দল ভারত। বিরাট কোহলির অধীনে তারা খেলছিল প্রথম আসরের ফাইনাল। সেবারে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে। পরেরবার রোহিত শর্মার নেতৃত্বে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নামে ভারত। এবারে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধরাশায়ী হয় তারা। 

তৃতীয় চক্রে এসেও ফাইনালের পথে বাকি সবার চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এখন পর্যন্ত ৯ টেস্ট থেকে ৬ ম্যাচে জয় পেয়েছে রোহিত শর্মার দল। ৬৮ দশমিক ৫২ পয়েন্ট নিয়ে লর্ডসের ফাইনালে এক পা দিয়েই রেখেছে ভারত। সামনে তাদের বাকি আছে আরও ১০ ম্যাচ। জয় দরকার ৫ ম্যাচে। 

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও আছে হোম সিরিজ। আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাকি ৫ ম্যাচের বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ। সম্ভাব্যতার গাণিতিক বিশ্লেষণের হিসেবে, ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। খুব বড় কোনো অঘটন না হলে লর্ডসের ফাইনালের এক দল হবে রোহিত-গম্ভীরের ভারত। 

প্রথম দুই চক্র থেকে মাত্র ১ জয় পাওয়া বাংলাদেশ এবারে এসে নিজেদের খুঁজে পেয়েছে দারুণ এক অবস্থানে। এবারের চক্রে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচ থেকে ৩ জয় টাইগারদের। ৩৬ পয়েন্ট প্রাপ্তি হলেও স্লো ওভার রেটের কারণে কেটে নেয়া হয়েছে ৩ পয়েন্ট। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট শতাংশের হিসেব বলছে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ আছে চারে। শতাংশ হিসেবে ৪৫ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট নিয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা আছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের ঠিক পেছনে।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের সামনে বাকি আরও ৬ টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোমে দুই টেস্টের একটি সিরিজ বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে। আইসিসির এফটিপিতে সেই টেস্টের উল্লেখ থাকলেও এখন পর্যন্ত এর সূচি প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এর বাইরে ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের এক সিরিজ আছে। নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আছে আরও দুই টেস্ট। 

সংখ্যাতত্ত্বের জটিল হিসেব বলছে, পরের ৬ টেস্ট থেকে বাংলাদেশের অন্তত ৫ টেস্টেই জয় দরকার। স্লো-ওভার রেটের জরিমানা এড়িয়ে এই ৫ টেস্টে জয় পেলে বাংলাদেশের ঝুলিতে যুক্ত হবে ৬০ পয়েন্ট। যদি-কিন্তুর মারপ্যাঁচ পেরিয়ে এই ৫ জয় টাইগারদের নিতে পারে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে।

এদিকে বাংলাদেশের মতোই একই বিন্দুতে অবস্থান করছে শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। টাইগারদের মতো তাদেরও বাকি ৬টি করে টেস্ট। জয় দরকার ৫ ম্যাচে। তবে দুই দলেরই হোম অ্যাডভান্টেজ বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। নাজমুল শান্তরা দুই সিরিজ খেলবে প্রতিপক্ষের মাটিতে। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং শ্রীলঙ্কা দুই সিরিজ পাবে নিজেদের ডেরায়। 

লঙ্কানদের হোম সিরিজে প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। অ্যাওয়ে সিরিজে তারা যাবে দক্ষিণ আফ্রিকায়। আর প্রোটিয়ারা শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি আতিথ্য দেবে পাকিস্তানকে। অ্যাওয়ে সিরিজটা হবে বাংলাদেশের মাটিতে। 

সবচেয়ে কম জয় দরকার অস্ট্রেলিয়ার। বাকি থাকা ৭ ম্যাচের অন্তত ৪টি তে জয় পেলেই টানা দ্বিতীয়বার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দেখা যাবে প্যাট কামিন্সদের। নিউজিল্যান্ডের দরকার সবচেয়ে বেশি ৬ জয়। প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন দলটির সামনে আছে ৮ টেস্ট। 

এবারের চক্রে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে বেশি ৮ ম্যাচ জিতেছে তারা। সবচেয়ে বেশি ৭ ম্যাচ হেরেছে তারা। এছাড়া স্লো ওভার রেটের কারণে সবচেয়ে বেশি জরিমানাও জুটেছে তাদেরই কপালে। বাকি থাকা ৬ ম্যাচ জিতেও তাই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তাদের থাকার সম্ভাবনা কম। 

একই অবস্থা তলানির দুই দল পাকিস্তান ও ওয়েস্টইন্ডিজের। হাতে থাকা সব ম্যাচ জিতলেও বাকি সিরিজগুলোর ফলাফল বিবেচনায় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থেকে একপ্রকার ছিটকে গিয়েছে তারা।

জেএ