৬ টেস্টে ৩ জয়। পরের ৬ টেস্ট থেকে জয় দরকার ৫ ম্যাচে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদশের সামনে ফাইনালে খেলার সমীকরণ আপাতত এটাই। এমন এক অবস্থানে দাঁড়িয়ে টাইগার ক্রিকেটের ভক্তরা কিছুটা আক্ষেপে পুড়বেন এটাই হয়ত স্বাভাবিক। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে অন্তত ১ ম্যাচে জয় পেলেও বাংলাদেশের জন্য লর্ডসের রাস্তাটা হতে পারত অনেকটাই সহজ। 

কিন্তু সেই কাজটা অসম্ভব করে তুলেছিলেন একজন। নাম তার কামিন্দু মেন্ডিস। চট্টগ্রাম আর সিলেট… দুই ভেন্যুতেই টাইগার বোলারদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছিলেন এই লঙ্কান মিডল অর্ডার ব্যাটার। দুই টেস্টের চার ইনিংসে করেছেন দুই ফিফটি আর দুই শতক। হয়েছিলেন ম্যান অব দ্য সিরিজ। অথচ, সেই সিরিজের আগে কামিন্দু খেলেছিলেন মোটে ১ টেস্ট। 

বাংলাদেশের বিপক্ষে যে ফর্ম দেখিয়েছিলেন সেটাই এখন টেনে নিয়ে গেলেন ইংল্যান্ডে। লর্ডস কিংবা ওভালে কামিন্দু মেন্ডিস খেলছেন দুর্দান্ত। রান পাচ্ছেন নিয়মিত। শুধু তাইই না। দলীয় ব্যর্থতার এই সময়ে লঙ্কান মিডলঅর্ডার ব্যাটার এখন আছেন বিশ্ব রেকর্ড ছোঁয়ার অপেক্ষাতে। 

ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৬ টেস্ট। তার সবকটিতেই অন্তত একটি করে পঞ্চাশ পেরুনো ইনিংস খেলেছেন। অভিষেকের পর টানা পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলার তালিকায় কামিন্দু এখন যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে। স্থানটা তিনি ভাগ করছেন ভারতের সুনীল গাভাস্কার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাসিল বুচার, পাকিস্তানের সাঈদ আহমেদ ও নিউজিল্যান্ডের বার্ট সাটক্লিফের সঙ্গে। 

তবে কামিন্দুর সামনে আছে বিশ্বরেকর্ড করে ফেলার সুযোগ। পাকিস্তানের সৌদ শাকিল অভিষেকের পর টানা ৭ টেস্টে পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছিলেন। কামিন্দুর নিজের পরের টেস্টে দুই ইনিংসে অন্তত একটিতে ফিফটি পেলেও ছুঁয়ে ফেলবেন এই রেকর্ড। প্রথম ৬ টেস্টে সমান ৭টি পঞ্চাশ বা তার চেয়ে বেশি রানের ইনিংস আছে বার্ট সাটক্লিফ, হ্যারি ব্রুক ও সৌদ শাকিলের। নয়টি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলে এই তালিকার শীর্ষে আছেন সুনীল গাভাস্কার। 

ওল্ড ট্রাফোর্ডে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে কামিন্দু করেছেন ১১৩ রান। এরপর লর্ডসে প্রথম ইনিংসে ৭৪ রানের পর ওভালে তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেও দলের বিপর্যয়ের মুখে করেছেন ফিফটি। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে গড়া জুটিতে দলকে দিয়েছেন স্বস্তি। তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই স্বস্তি টেকেনি। তৃতীয় দিনের শুরুতেই কামিন্দু মেন্ডিস বিদায় নেন ৬৪ রান করে। লঙ্কানদের ইনিংসটাও এরপর খুব একটা বড় হয়নি। 

শ্রীলঙ্কার সামনে এরপরে আছে আরও ৯ টেস্ট। সেখান থেকে অন্তত ৬ টেস্ট জিতলে তাদের সামনে সুযোগ থাকবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাবার। লঙ্কানদের সামনে সম্ভাবনার পথটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। সেই পথে কামিন্দু মেন্ডিসের দিকে নিশ্চিতভাবেই তাকিয়ে থাকবে তারা। 

জেএ