টেস্ট ফরম্যাটে অবসর ভেঙে গত বছর অ্যাশেজে দুটি ম্যাচ খেলতে ফিরেছিলেন মঈন আলি। নাটকীয়ভাবে এরপর আবারও টেস্টে অবসর ঘোষণা করেন। তবে ঠিকই বাকি দুই ফরম্যাটে (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার। এরই ভেতর আজ (রোববার) আচমকা পুরো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেই বিদায় বলে দিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। সেখানে মঈন বলেন, ‘আমার বয়স ৩৭ হয়ে গেছে এবং এই মাসে হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া সিরিজের দলে ডাক পাইনি। আমি ইংল্যান্ডের জন্য অনেক ক্রিকেট খেলেছি। এখন নতুন প্রজন্মের সময়, যা আমাকেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এরপরই অনুভব করলাম সময় হয়ে গেছে, আমি আমার কাজ সম্পন্ন করেছি।’

এর আগে ২০১৪ সালে ইংল্যান্ডের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় মঈন আলির। টি-টোয়েন্টির সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হয়ে তিনি ৬৮ টেস্ট, ১৩৮ ওয়ানডে এবং ৯২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। যেখানে আট সেঞ্চুরি ও ২৮ ফিফটিতে সবমিলিয়ে ৬৬৭৮ রান করেছেন মঈন। এ ছাড়া বল হাতে এই অফস্পিনার তিন ফরম্যাটে ৩৬৬ উইকেট শিকার করেছেন। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হেরে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড, সেটাই ছিল তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

ইংল্যান্ডের হয়ে এতদিন খেলার সুযোগ পেয়ে গর্বিত বলেও জানান এই অলরাউন্ডার, ‘আমি খুবই গর্বিত। যখন আমি প্রথম ইংল্যান্ডের হয়ে খেলি, কত সংখ্যক ম্যাচ খেলতে পারব জানতাম না। এরপর প্রায় ৩০০ ম্যাচ খেলে ফেলেছি…প্রথমদিকের বেশিরভাগই ছিল টেস্ট ফরম্যাটে। এরপর মর্গস (ইয়ন মরগান) ওয়ানডেতে নিয়ে এলো, যেখানে অনেক আনন্দ পেয়েছি। তবে টেস্টই সবচেয়ে দারুণ ফরম্যাট। চাইলে এখনও ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার জন্য চেষ্টা চালাতে পারতাম, তবে আমি বাস্তবতা জানি। বুঝতে পারছি ঠিকভাবে হচ্ছে না সবকিছু, যদিও আমি মনে করি খেলতে পারব। কিন্তু দলের আলাদা চিন্তা-ভাবনা আছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘খেলায় আপনি কি প্রভাব রেখেছেন সেসব মানুষ ভুলে যাবে। হতে পারে এটি কেবলই ২০-৩০ রানের, কিন্তু এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানি দলের জন্য মাঠ এবং বাইরে কেমন প্রভাব রেখেছি। আশা করি মানুষ আমার খেলায় আনন্দ পাবে, যাইহোক আমি নিজের চেষ্টাটা করে যাব, আমি সেটাতেই খুশি।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট ঠিকই চালিয়ে যাবেন এই ইংলিশ তারকা। এ ছাড়া ভবিষ্যতে কোচিংয়ে আসতে পারেন বলে ইঙ্গিত রয়েছে মঈনের কণ্ঠে, ‘কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট (খেলব), কারণ আমি খেলতে ভালোবাসি। কিন্তু কোচিং এমন বিষয় যা নিয়ে আগ্রহ আছে, আমি সেরা একজন হতে চেষ্টা করব। আমি বাজের (ব্রেন্ডন ম্যাককালাম) কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি। ‍আমাকে সবাই মুক্ত চেতনার মানুষ হিসেবে চিনবে বলে মনে কির। ক্যারিয়ারে কিছু ভালো শট খেলেছি, কিছু খারাপ, আশা করছি মানুষ আমার খেলা উপভোগ করেছে।’ 

এএইচএস