ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার এই সময়ে যেমন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের জৌলুস বাড়ছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রেকর্ড ভাঙা-গড়ার প্রতিযোগিতাও। মাত্র কয়েক মাস আগে সর্বশেষ আইপিএল আসরে গড়া ছক্কার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে ক্যারিবীয় লিগ সিপিএল। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি পাঞ্জাব কিংস এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ৪২টি ছয় মেরেছিল, যা ছিল টি-টোয়েন্টির বিশ্বরেকর্ড। এবার সমান ৪২টি ছয় মেরেছে সিপিএলের দল গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স।

কেবল দলীয় রেকর্ডই নয়, ব্যক্তিগতভাবেও বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন গায়ানার বিধ্বংসী ব্যাটার শিমরন হেটমায়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই তারকা ইনিংসে ১১টি ছক্কা মারলেও, কোনো চার মারেননি। যা সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে কোনো ব্যক্তিগত ইনিংসে চার ছাড়া সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড। ঝোড়ো ইনিংসটি খেলার পথে ৩৯ বলে ৯১ রান করেন হেটমায়ার।

ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (সিপিএল) ম্যাচে গতকাল বুধবার মুখোমুখি হয়েছিল গায়ানা এবং সেন্ট কিটস এন্ড নেভিট প্যাট্রিয়টস। প্রথমে ব্যাট করে গায়ানা রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও পুরানের তাণ্ডবে রানের পাহাড় গড়ে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে গায়ানার সংগ্রহ ২৬৬ রান। রানতাড়ায় সেন্ট কিটসের লড়াইটাও ছিল অনেকটা সঠিক গন্তব্যে। তবে ১৭০ রানের গণ্ডি পেরোতেই পরপর উইকেট হারিয়ে তারা ছন্দ হারিয়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত ২২৬ রানে গুটিয়ে ২৬ রানে হেরে যায় সেন্ট কিটস।

প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে গায়ানাকে ঝোড়ো শুরু এনে দেন আফগানিস্তানের ওপেনার গুরবাজ। ৩৭ বলের ইনিংসে ৬টি ছক্কায় তিনি ৬৯ রান করেন। মাঝে কেভিন সিনক্লেয়ার ও শাই হোপ বড় ইনিংস খেলতে না পারায়, হাল ধরেন হেটমায়ার। গায়ানাকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে তিনি টিকে ছিলেন ১৯ ওভার পর্যন্ত। এর ভেতর হরদম ছক্কায় সেন্ট কিটসকে নাজেহাল করলেও, কোনো চার মারতে না পারার আক্ষেপ ছিল তার।

এর আগে চারহীন সর্বোচ্চ ছয় মারার রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের রিকি ওয়েসেলসের। ২০১৮ টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে উস্টারশায়ারের বিপক্ষে নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে ১৮ বলে ৫৫ রানের ইনিংসে ৫৪ রানই করেছিলেন তিনি ছক্কা থেকে। ৯টি ছক্কা আর একটি সিঙ্গেলে সেদিন ইনিংসটি গড়েছিলেন তিনি। এদিকে, গায়ানার হয়ে গুরবাজ-হেটমায়ারের পর শেষদিকে মাত্র ১৪ বলে ৩৮ রান করেছেন কিমো পল।

২৬৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় যেমন শুরু দরকার ছিল, তেমনই করেছে সেন্ট কিটস। তবে তার আগে দলীয় মাত্র ৪ রানেই আগ্রাসী ওপেনার এভিন লুইসকে হারিয়ে তারা হোঁচট খায়। সেটি সামলে অধিনায়ক আন্দ্রে ফ্লেচার ও কাইল মায়ার্স মিলে গড়েন ৬৯ রানে জুটি। ২৮ রান করা মায়ার্সের বিদায়ে জুটি ভাঙে। এরপর মায়ার্সের সঙ্গে ৬৫ রানের জুটি বাধেন শেরফান রাদারফোর্ড। মাত্র ১২ বলে ৩৪ রান করে রাদারফোর্ড ফিরলেও, ঠিকই তাণ্ডব বজায় রেখেছিলেন ফ্লেচার।

এই উইন্ডিজ তারকা মাত্র ৩৩ বলে ৪টি চার ও ৯টি ছক্কায় ৮১ রান করেন। তার বিদায় সেন্ট কিটসের জয়ের আশা একপ্রকার শেষ হয়ে যায়। শেষদিকে মিকাইল লুইসের ২১ বলে ৩১ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কেউ রান করতে না পারায় ২ ওভার বাকি থাকতেই তারা ২২৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। গায়ানার হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন ইমরান তাহির।

এএইচএস