সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজের পর মুদ্রার দুই বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। টাইগার ক্রিকেট যেমন জয়ের বন্দনায় ভাসছে, তেমনি সমালোচনায় তুলোধুনো চলছে স্বাগতিক পাকিস্তানের। ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের দায় কাঁধে নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন পাক অধিনায়ক শান মাসুদ। এমনকি সিরিজে ফলাফলের কৃতিত্ব বাংলাদেশকে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, সফরকারীদের সাফল্য এসেছে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বদৌলতে।

হারের পর পাকিস্তান দল নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশটির ক্রিকেটাঙ্গনে। যার জন্য ক্ষমা চেয়ে সংবাদ সম্মেলনে শান মাসুদ বলেন, ‘আমি পুরো জাতির কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। যা আগেও বলেছি, হার কিংবা ভুল হলে দায় নেবো। এখন আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিৎ পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নতির জন্য কাজ করা। যখন ভাল খেলব না স্পষ্ট করে সেটা বলব। এখন আমাদের ভালো কিছুর জন্য কাজ করা লাগবে। আমাদের টেস্ট ফরম্যাটে আরও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দরকার, আমি কৃতজ্ঞ যে, আমাদের নির্বাচকরা একাদশ ও দল গঠনে গণতান্ত্রিক লেন্স দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছেন।’

একপর্যায়ে দেশটির এক সাংবাদিক বাংলাদেশকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হার…?’ যে প্রশ্নটি স্বাভাবিকভাবে নেননি পাক অধিনায়ক। বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিয়ে শান মাসুদ জবাব দেন, ‘এমন প্রতিপক্ষ বলে ছোট করতে পারি না। সব প্রতিপক্ষকে সম্মান দিতে হবে। বাংলাদেশ দুই টেস্টেই আমাদের চেয়ে বেশি ডিসিপ্লিনড ছিলো। আমাদের নিজেদের দিকে তাকাতে হবে, আমরা কত ভুল করেছি বুঝতে হবে। তাদের দুজন (সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম) ৭০-৮০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটার আছে, লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজও প্রায় ৪০ এর কাছাকাছি খেলেছে। লাল-বলে আমাদেরও এই মানের ক্রিকেটার প্রয়োজন।’

নিজেদের দুর্বলতার জায়গা দেখিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে ফিটনেস, মানসিক ও শারিরীক সক্ষমতা চার-পাঁচদিনের জন্য থাকতে হয়। আমরা এই সিরিজে যা দেখিয়েছি, তাতে প্রমাণ হয়েছে যে আমাদের আরও কিছু করা দরকার। আর ১০ মাস পর টেস্ট খেললে এমন হবে। লম্বা বিরতি দেওয়া যাবে না। আপনি অনেক বেশি টি-টোয়েন্টি খেলে টেস্ট ক্রিকেটার পাবেন না। বিজ্ঞানের প্রস্তুতি নিয়ে গণিত পরীক্ষায় বসা যাবে না। লাল-বলের ম্যাচের জন্য আপনাকে সেটাই বেশি খেলতে হবে।’

শান মাসুদের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে ১১ বছর আগে, এখন পর্যন্ত তিনি খেলেছেন ৩৫টি টেস্ট। যে ফরম্যাটে তিনি সবচেয়ে নিয়মিত। নিজের ব্যাটিং দক্ষতাও দেখিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে। যদিও ব্যাটিং গড় (২৮.৬০) তার পক্ষে কথা বলছে না। এরপর অধিনায়ক হওয়ার পর তার অধীনে পাকিস্তান ৫টি ম্যাচেই হেরেছে। যার জন্য তাকে নতুন সমালোচনায় পড়তে হলো। তবে নিজের অধিনায়কত্ব থাকা নিয়ে সেভাবে ভাবছেন না শান মাসুদ।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার চাকরির নিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। আমি এই বিশ্বাস নিয়ে দায়িত্বে এসেছিলাম যে, দলে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে পারব। আমি বিশ্বাস করি দল যদি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে আগায়, এমনকি আমার ব্যক্তিগত ব্যর্থতার পরও সেই পথনির্দেশ ঠিক থাকে, তাহলে আমি স্থির থাকব। যতক্ষণ আমার কাঁধে দায়িত্ব থাকে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ এবং নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’

এএইচএস