পাকিস্তানের মাটিতে আগেও অনেকবার খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এবারই প্রথম টাইগাররা ইতিহাসগড়া এক সিরিজ উপহার দিলো ক্রিকেট ভক্তদের। ২-০ ব্যবধানে পাকিস্তান বধের জন্য প্রাথমিকভাবে বড় কৃতিত্ব পাচ্ছেন লিটন দাস, মেহেদী মিরাজ ও নাহিদ রানারা। বাহবা পাচ্ছেন তাদের গুরু চন্ডিকা হাথুরুসিংহে–সহ পুরো কোচিং স্টাফ। তবে তামিম ইকবাল এর বাইরের কিছু ব্যক্তিকে আলাদাভাবে কৃতিত্ব দিয়েছেন।

বাংলাদেশের স্মরণীয় এই জয়ের পর ক্রীড়াবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে বিশ্লেষণধর্মী অনুষ্ঠানে হাজির হন সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক। যেখানেই তিনি শান্ত-মুশফিকদের স্থানীয় কোচ ও বাংলাদেশের সাবেক দুই কোচের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে দীর্ঘ আড়াই মাস ক্যাম্প হয়েছিল সিলেট ও চট্টগ্রামে। যাকে বলা হচ্ছে পাকিস্তান সফরের আগে টেস্ট ফরম্যাটের জন্য আদর্শ প্রস্তুতি।

ওই ক্যাম্পে মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ কিংবা জাকির হাসানসহ টেস্ট দলের অনেকেই ছিলেন। শেষদিকে টাইগার্স ক্যাম্পের সঙ্গে যোগ দেন শান্ত-তাসকিন-শরিফুলরাও। এরপর পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশের এমন সাফল্যের পর স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার স্থানীয় কোচদের প্রসঙ্গ এসে যায়। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের কোচিংয়ে জনপ্রিয় মুখ সোহেল ইসলাম, মিজানুর রহমান বাবুল, তারেক আজিজ খানসহ পুরো কোচিং স্টাফ এজন্য কৃতিত্ব পাচ্ছেন।

ক্রিকইনফোর সঙ্গে আলাপকালে তাদের স্মরণ করে তামিম বলেন, ‘অনেক সময় মানুষ বড় জয়ের পর ছোট বিষয়গুলো ভুলে যায়। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলা ক্রিকেটাররা যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে ব্যস্ত ছিল, তখন টেস্ট দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার টাইগার্সের অধীনে অনুশীলন করেছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে সেখানে ক্যাম্প হয়েছে। সেখানে মুশফিক, মুমিনুল, মেহেদীরা ছিল। এক থেকে দেড় মাসের এই ক্যাম্প হয়েছে স্থানীয় কোচদের তত্ত্বাবধানে, তাদেরও অনেক কৃতিত্ব আছে। এটার অনেক বড় ভূমিকা ছিল।’

পাকিস্তানের মাটিতে পুরো সিরিজে দাপট দেখিয়েছেন টাইগার পেসাররা। শরিফুল-তাসকিন-হাসান ও নাহিদদের এমন ভূমিকার পেছনে সাবেক দুই পেস কোচের অবদান দেখছেন তামিম। দেশসেরা এই ওপেনার বলেছেন, ‘এটা (রাওয়ালপিন্ডি) এমন একটা উইকেট ছিল, যেখানে আগে অনেক রান উঠেছে, পাকিস্তান পেসাররা যতটুকু সুবিধা আদায় করতে পেরেছে, তার চেয়ে বাংলাদেশের পেসাররা বেশি সুবিধা পেয়েছে। এটা নিয়ে পেসারদের গর্ব করা উচিত। যারা আগে কোচ ছিলেন, তাদের কৃতিত্ব পাওয়া উচিৎ। এই পেস বোলিং ইউনিটকে এত দূরে নিয়ে আসতে (সাবেক কোচ) অ্যালান ডোনাল্ড ও ওটিস গিবসন কঠোর পরিশ্রম করেছেন।’

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের মাটিতে প্রথমবার কোনো সিরিজ জয়ে দলীয়ভাবে দাপট দেখিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। যেখানে অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হকরা যেমন নেতৃত্ব দিয়েছেন, তেমনি তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তরুণ সাদমান ইসলাম ও জাকিররাও সমান মানসিকতা নিয়ে লড়েছেন। এমন অর্জনের পর তাই ক্রিকেটার-কোচ ও সংশ্লিষ্ট সবার অবদান আলোচিত হচ্ছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে।

এএইচএস