লাহিরু কুমারার ডেলিভারি লং অফ দিয়ে পাঠিয়ে চারের বাউন্ডারি আদায় করে নিলেন গাস অ্যাটকিনসন। এরপর দুই হাত উঁচিয়ে সাদামাটা এক উদযাপন। এ সময় ড্রেসিংরুম থেকে দাঁড়িয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে থাকেন ইংল্যান্ড দলের সতীর্থ ও কোচিং স্টাফরা। সঙ্গে রয়েছে লর্ডসের মুহুমুর্হু করতালি। আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইতিহাসগড়া সেঞ্চুরি করেছেন অ্যাটকিনসন। এর আগে সর্বশেষ ২০১০ সালে ইংলিশদের হয়ে একই পজিশনে সেঞ্চুরি করেছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড। 

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পঞ্চম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন অ্যাটকিনসন। যদিও এরইমাঝে টেস্টের এক ইনিংসে পাঁচ এবং ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে আগেই দু’বার ক্রিকেটের অভিজাত ভেন্যু লর্ডসের অনার্স-বোর্ডে নাম তুলেছিলেন। এবার ব্যাটার হিসেবেও গড়লেন ইতিহাস। লর্ডসের বোর্ডে তিনবার নাম তোলার ক্ষেত্রে অ্যাটকিনসনকেই সবচেয়ে দ্রুততম বলে দাবি করা হচ্ছে। ১০৩ বলেই সেঞ্চুরি করেছেন ২৬ বছর বয়সী এই পেসার। যার ওপর ভর করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় পুঁজি গড়ছে ইংল্যান্ড।

শেষ পর্যন্ত অ্যাটকিনসনের ইনিংসটি থেমেছে ১১৮ রানে। ১১৫ বলে তিনি ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। এর আগে তিনি নাম তুলেছেন রথি-মহারথিদের সঙ্গে আরেকটি রেকর্ডে। এতদিন পর্যন্ত হোম অব ক্রিকেটখ্যাত লর্ডসের টেস্ট ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি ছিল পাঁচজনের, অ্যাটকিনসন সেই রেকর্ডে ষষ্ঠ নাম। বাকিরা হচ্ছেন– ইংল্যান্ডের গাবি অ্যালেন, অস্ট্রেলিয়ার কিথ মিলার, ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম, স্টুয়ার্ট ব্রড ও ক্রিস ওকস। তবে একই মৌসুমে এই ভেন্যুতে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি কেবল অ্যাটকিনসন (২০২৪) ও বোথামের (১৯৭৪)।

এর আগে টেলএন্ডার ব্যাটার অ্যাটকিনসন ক্রিজে আসার আগে ইংল্যান্ডের অবস্থা সুখকর ছিল না। ২১৬ রানেই স্বাগতিকরা ৬ উইকেট হারিয়েছিল। ক্রিজে ছিলেন কেবল স্বীকৃত ব্যাটার জো রুট। অভিজ্ঞ এই তারকা ব্যাটার অ্যাটকিনসনকে সঙ্গে নিয়ে গড়েন ৯২ রানের জুটি। এটিই মূলত ইংলিশদের বড় রানের ভিত গড়ে দেয়। দারুণ এক ইনিংস খেলে রুট থামেন ১৪৩ রানে। ২০৬ বলের ইনিংসে তিনি ১৮টি চার মেরেছেন। এ ছাড়া বর্তমানে খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ ৩৩তম সেঞ্চুরি এখন রুটের। এতদিন ফ্যাবারিট চারজনের এই প্রতিযোগিতা ছিল দেখার মতো, তার পরই আছেন– কেইন উইলিয়ামসন (৩২), স্টিভ স্মিথ (৩২) ও বিরাট কোহলি (২৯)।

ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার চলমান সিরিজের প্রথম টেস্ট জিতে লিডে আছে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় টেস্টে ইংলিশরা ব্যাটিংয়ে নামে টস হেরে। লঙ্কানদের বিপক্ষে তাদের শুরুটাও হয় আক্রমণাত্মক। ফলে যথারীতি উইকেটও হারায় দ্রুত, দলীয় ৩৩ রানে ওপেনার ড্যান লরেন্সকে (৯) বিদায় করেন লাহিরু কুমারা। এরপর ইংলিশ অধিনায়ক ওলি পোপও ফেরেন মাত্র ১ রানে, তিনি আসিথা ফার্নান্দোর শিকার। মাঝে বেন ডাকেট (৪০), জেমি স্মিথ (৩৩) ও হ্যারি ব্রুকরা (২১) থিতু হলেও, বড় ইনিংস খেলতে পারেননি।

তবে স্বাগতিকদের বিপদে পড়তে দেননি রুট ও অ্যাটকিনসন। দুজনের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে তারা বড় পুঁজিই পেয়েছে। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অলআউট হওয়ার আগে ইংলিশদের সংগ্রহ ৪২৭ রান। লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নিয়েছেন আসিথা। এ ছাড়া লাহিরু ও মিলান রত্ননায়েকে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন।

এএইচএস