শেষ কয়েক বছর ধরেই পেস বোলিংয়ের সহায়ক পিচ তৈরি করছে পাকিস্তান। দেশটিতে প্রতিভাবান ফাস্ট বোলারের অভাব নেই। তাদের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হচ্ছে পিচ। কিন্তু তাতে শাহিন আফ্রিদি-নাসিম শাহরা যে খুব একটা সাফল্য পাচ্ছেন তা বলা চলে না। অন্তত ঘরের মাঠে টানা ৯ ম্যাচ তাদের জয়হীন থাকা সেই বার্তাই দিচ্ছে। 

এসবের পরেও অবশ্য পাকিস্তানের ক্রিকেট বা পিচ কিউরেটরদের ভাবনায় থেকে গিয়েছে পেস বোলিং সহায়ক পিচ। আগামীকাল শুক্রবার থেকে মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যেকার চলমান সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। প্রথম টেস্ট হারের পর এই টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া শান মাসুদের দল। আর সেজন্য কি না আরও একবার ঘাসের উইকেট বেছে নিয়েছে দলটি। 

মাঠের খেলা শুরুর একদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ ভেসে বেড়াচ্ছে রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টের পিচের ছবি। যেখানে পাকিস্তানের কোচ জেসন গিলেস্পিসহ দলের কয়েকজন খেলোয়াড়কে হাসিমুখে পিচ পরিদর্শন করতে দেখা গিয়েছে। সেই পিচের অবস্থা দেখে যে কারো মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে। ২২ গজের পিচে পুরোটাই ঘাসে ঢাকা। বোঝাই যাচ্ছে আরও একবার পেসারদের উপযোগী করে পিচ তৈরি করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে পিন্ডি স্টেডিয়ামের কিউরেটর।

অন্য এক ছবিতে দেখা গিয়েছে ভিন্ন এক দৃশ্য। সামাজিক মাধ্যমে সেটাও আলোচনা ফেলেছে ব্যাপক আকারে। পিচের দুই প্রান্তে দুটো বড় ফ্যান দেখা গিয়েছে। বোঝাই যায়, পিচ শুকিয়ে ফেলতেই এমন দক্ষযজ্ঞ। সাধারণত তুলনামূলক শুষ্ক পিচ তৈরি করা হয় স্পিনারদের কথা মাথায় রেখে। ফ্যান দিয়ে পিচ শুকানোর সময়েও পিচে কিছুটা ঘাস দেখা গিয়েছে। 

পিচে দৃশ্যমান কোনো ফাটল নেই। রাওয়ালপিন্ডিতে আকাশে মেঘ নেই খুব একটা। সবকিছু মিলিয়ে পাকিস্তানের প্রচেষ্টা স্পষ্ট। পেস সহায়ক পিচ থেকেও স্পিনারদের কিছুটা সুবিধা করে দিতে চায় তারা। অবস্থা থেকে সহজেই অনুমেয়, এই ম্যাচে ফিরতে পারেন বিশেষজ্ঞ স্পিনার আবরার আহমেদ। 

সিরিজের প্রথম ম্যাচে কোনো স্পিনার ছাড়াই চার পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। তার ফল খুব একটা ভাল হয়নি পাকিস্তানের জন্য। ব্যাপক সমালোচনার মুখে স্কোয়াডে ফেরানো হয়েছে লেগস্পিনার আবরার আহমেদকে। স্পিনিং অলরাউন্ডার কামরান গুলামও আছেন দ্বিতীয় ম্যাচের স্কোয়াডে। ধারণা করা হচ্ছে, ২ কিংবা ৩ পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামবে পাকিস্তান। 

আর সেই লক্ষ্যেই হয়ত ঘাসের উইকেটেও আর্দ্রতা কমানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। অবশ্য এমন পিচের সুবিধা নিতে বাংলাদেশও মুখিয়ে থাকবে নিশ্চিতভাবে। এই ম্যাচে একাদশে আসতে পারেন পেসার তাসকিন আহমেদ। শরিফুল ইসলাম এবং হাসান মাহমুদরা আগের ম্যাচেই নিজেদের সক্ষমতা জানান দিয়েছেন। আর সাকিব আল হাসান এবং মেহেদি মিরাজের স্পিনজুটি তো ম্যাচই জিতিয়েছে বাংলাদেশকে। উইকেটের সুবিধা নেওয়া তাই খুব একটা কঠিন কিছু হবে না বাংলাদেশের জন্য। 

পাকিস্তানের এক্স-হ্যান্ডেলে পোস্ট করা প্র্যাকটিসেও দেখা গিয়েছে ঘাসের পিচে ব্যাট করার প্রবণতা। সবমিলিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে রাওয়ালপিন্ডিতে বোলারদের জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি সুবিধা দেখা যেতেই পারে। 

জেএ