লম্বা বিরতির পর আবারও মাঠের ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট দিয়ে মাঠে নামছে টাইগাররা। স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজটি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের রেসে টিকে থাকার জন্যেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। 

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে লাল বলের ক্রিকেটে ব্যস্ত মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী চার মাসে ৮টি টেস্ট খেলবে টাইগাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের পর এ বছরই ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরও ছয়টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটি সামনে রেখে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কন্ডিশনিং ক্যাম্পটি পুরোপুরিভাবে কাজে লাগাতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। দেশের মাটিতে ক্যাম্প করতে না পারলেও লাহোরে বাংলাদেশের জন্য অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। 

প্রথম টেস্টের আগে রাওয়ালপিন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘গত কয়েক দিন আমাদের জন্য কঠিন ছিল। সবাই পরিশ্রম করেছে। আমরা ক্রিকেট খেলতে চাই এবং আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আশা করি ভালো পারফরমেন্স করবো এবং ভালোভাবে আমাদের দীর্ঘ টেস্ট মৌসুমটা শুরু করতে পারবো। এটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

এখন পর্যন্ত ১৩ টেস্ট খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ১২টি ম্যাচ হেরেছে ও ১টিতে ড্র করেছে টাইগাররা। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে হওয়া একমাত্র ড্র’টি পাকিস্তানের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত সেরা সাফল্য বাংলাদেশের। দু’দলের মধ্যকার সর্বশেষ টেস্টে পাকিস্তানের মাটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ।

অবশ্য অতীত রেকর্ড নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন শান্ত। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এবার বিশেষ কিছু করতে পারবো।’ বাংলাদেশের ব্যাটিং পারফরম্যান্স নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও অতীত রেকর্ড বলছে পাকিস্তানের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক। ইতোমধ্যে প্রথম টেস্টের একাদশ ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। পেসারদের নিয়েই বোলিং আক্রমণ সাজিয়েছে তারা। ২৮ বছরের মধ্যে এই প্রথম স্পিনার ছাড়াই ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নামবে পাকিস্তান। ধারণা করা হচ্ছে উইকেট পেস সহায়ক হতে পারে। শান্ত বলেন, ‘আমরা ভালো পেস বোলিং বিভাগ তৈরি করেছি। পেস সহায়ক উইকেটে পেসারদের নিয়ে আমরা আশাবাদী। যে কোনো পরিস্থিতি সামলাতে পারে আমাদের স্পিনাররাও এবং এর অর্থ হলো আমরা সব কিছুর জন্য প্রস্তুত।’

এ বছরের এপ্রিলে পাকিস্তান টেস্ট দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে পথচলা শুরু করবেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার জেসন গিলেস্পি। অধিনায়ক হিসেবে দেশের মাটিতে প্রথমবারের মত দলকে নেতৃত্ব দেবেন শান মাসুদ। বড় ফরম্যাটে পাকিস্তানের জন্য নতুন যুগের সূচনা হবে।

ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ বলেন, ‘ভক্তরা সবসময় চায় ভালো পারফর্ম করবে ক্রিকেট দল এবং তাদের জন্য ম্যাচ জিতবে। আমরা সবাই সিরিজ এবং আসন্ন মৌসুমের জন্য রোমাঞ্চিত। আমাদের প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে যারা সিরিজে ভালো পারফর্ম করতে মুখিয়ে আছে। আমাদের বোলাররা ২০ উইকেট নিতে এবং দলকে ম্যাচ জয়ের স্বাদ দিতে সক্ষম।’ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আসন্ন ব্যস্ত মৌসুমের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং আমরা ভালো পারফর্ম করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সিরিজের আগে আমাদের কিছু ভালো অনুশীলন সেশন ছিলো এবং কোচিং স্টাফদের সাথে কঠোর পরিশ্রম করেছে খেলোয়াড়রা।’

এফআই