বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ফাইল ছবি

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই আলোচনায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কয়েকবারের সংসদ সদস্য ও সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন পাপন। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব পালন করা একপ্রকার অসম্ভবই। 

উদ্ভুত পরিস্থিতিতে পাপন বিসিবির সভাপতি পদ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন এক বোর্ড পরিচালকের কাছে। বিসিবি সভাপতি পদ ছাড়তে চাইলেও পরিচালক পদও ছাড়বেন কি না এটা এখনো স্পষ্ট নয়। শুধু সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলে পাপন ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক পদে থাকবেন। 

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে সভাপতি পদে সরাসরি নির্বাচন হয়। ক্রিকেট বোর্ডে অবশ্য নিয়ম একটু ভিন্ন। প্রথমে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পরিচালক নির্বাচিত হয়, এরপর পরিচালকদের মধ্যে থেকে সভাপতি। গত তিন মেয়াদেই নাজমুল হাসান পাপন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই পাপন শুধু সভাপতি থেকে পদত্যাগ করলে পরিচালক হিসেবে বোর্ডে থাকার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। 

বিসিবি সভাপতির পদ ছাড়তে চাইলেও পরিচালক পদ ছাড়বেন কি না এটা এখনো স্পষ্ট নয়। শুধু সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলে পাপন ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক পদে থাকবেন। 

গত এক যুগ পাপন বাংলাদেশের ক্রিকেট শাসন করেছেন। পাপনের আস্থাভাজন হওয়ায় পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক বোর্ডের নির্বাচন ও কলকাঠি নেড়েছেন। এদের মাধ্যমে ক্রিকেট বোর্ডের সুবিধাপ্রাপ্ত রয়েছেন অনেকে। তাই পাপনকে একেবারে ক্রিকেট বোর্ডের বাইরের পক্ষে নন একটি গ্রুপ। জেলা, ক্লাব ও বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাউন্সিলর এখনো মল্লিক-পাপনের অনুগত। আগামী বছর ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচনে এটা তাদের অন্যতম শক্তি। পদত্যাগের সঙ্গে সামনের নির্বাচন সমীকরণ ও মেরুকরণও রয়েছে। 

অন্য সকল ফেডারেশনের মতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিও সরকার মনোনীত ছিল। সরকারের কোনো এমপি বা মন্ত্রী ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হয়ে আসছিলেন আশি-নব্বইয়ের দশক থেকে। ২০১২ সালে সেই ধারাবাহিকতায় পাপনের আগমন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি অবশ্য নির্বাচিত সভাপতি। 

ফুটবল ফেডারেশন বাদে অন্য সকল ফেডারেশনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নির্বাহী কমিটিতে সরাসরি ২ জনকে অন্তর্ভুক্ত করার এখতিয়ার রয়েছে। অন্য ফেডারেশনে নির্বাচনের পর এনএসসি সাধারণত এটা করে থাকে। আবার অনেক সময় এই পদ শূন্যই থাকে। ক্রিকেট বোর্ড অবশ্য নিজেদের স্বার্থে একটু ভিন্নতা করেছে। নির্বাচনের সময়ই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক মনোনয়ন নেয় তারা। মনোনীতদের মনোনয়নপত্র ক্রয়, জমা কিছুই করতে না হলেও তাদের নির্বাচিত মর্যাদা দেয় ক্রিকেট বোর্ড। 

২০১৩ সালে পাপন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কোটায় মনোনীত পরিচালক ছিলেন। ক্লাব, জেলা ও সাবেক ক্রিকেটার এই তিন ক্যাটাগরিতে নির্বাচন করে পরিচালক হননি। তাই ২০১৩ সালে পাপনকে পুর্নাঙ্গ নির্বাচিত সভাপতি বলা যায় না সেই অর্থে। ২০১৭ ও ২১ সালে অবশ্য ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে নির্বাচন করে পরিচালক হয়েছেন। পরবর্তীতে সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছেন।

পাপন শুধু পরিচালক হিসেবে থাকার সম্ভাবনা থাকলেও সভাপতি পদে আর থাকছেন না এটা নিশ্চিত। পাপন সভাপতির পদ ছাড়লে নিয়ম অনুযায়ী পরিচালকদের মধ্যে থেকেই সভাপতি নির্বাচন করা হবে। সভাপতির পাশাপাশি গঠনতন্ত্রে ২ সহ-সভাপতি নির্বাচনের কথা উল্লেখ থাকলেও চলতি ও গত মেয়াদে হয়নি। ২০১৩ সালে আজম নাসির ও মাহবুব আনাম সহ-সভাপতি ছিলেন। 

এজেড/এফআই