‘নিজস্ব এজেন্ডা পালন করতে গিয়ে ক্রিকেটকে নষ্ট করা হয়েছে’
দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ করায়, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগ কর্মকর্তাই আত্মগোপনে চলে গেছেন। সেই তালিকায় আছেন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বিসিবির বেশ কয়েকজন। বর্তমানে দায়িত্ব পালনেও তাদের দেখা মিলছে না। এ নিয়ে কথা বলেছেন ক্রীড়া প্রশিক্ষক নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
হাসিনা সরকারের পতনের পর বিসিবির অনেক পরিচালকেরই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের সমালোচনা করে আজ (শনিবার) গণমাধ্যমের সামনে বিকেএসপির কোচ ফাহিম বলেছেন, ‘তারা যদি ক্রিকেটের সত্যিকার অর্থেই সেবক হতেন, তাহলে কিন্তু তারা আসতেন। আমার মনে হয় না তারা ক্রিকেটের সেবক ছিলেন। তাদের নিজস্ব এজেন্ডা ছিল। সে এজেন্ডাই তারা বাস্তবায়ন করেছেন। আমরা দেখেছি, ক্রিকেটের কী হয়েছে। ক্লাব ক্রিকেট বলি, পুরো খেলাটাকেই নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
নেতৃত্বের সমস্যা কাটানো গেলে ক্রিকেট বোর্ডসহ সব পর্যায়ে উন্নতি সম্ভব বলে মনে করেন ফাহিম, ‘আমার মনে হয় দায়টা সবচেয়ে বেশি নেতৃত্বের। নেতৃত্ব যদি ঠিক থাকে তাহলে বাকি জিনিসগুলো এমনিতেই চ্যানেলাইজ হয়ে যায়। এখন আইসিসির আইনসংক্রান্ত অনেক বিষয় আছে। আমরা তো চাই এমন একটা বোর্ড হোক, যেখানে ভালো একজন লিডার থাকবে, যার ভিশন থাকবে, যার মধ্যে বড় স্বপ্ন থাকবে। সে জন্য স্বচ্ছতা বা জবাবদিহি থাকা প্রয়োজন, সেগুলো থাকবে। সেরকম অনেক মানুষই আমাদের দেশে আছে। অনেক দিন ধরে যাঁরা কোনো কাজ করার সুযোগই পাননি।’
আরও পড়ুন
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন। শুধু এমপিই নন, তিনি সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজনও, ফলে জানুয়ারিতে গঠিত মন্ত্রীসভায় তার কাঁধে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও দেওয়া হয়। তাই পট পরিবর্তনের পর পাপন অনেকটা আত্মগোপনে! তিনি কোথায় আছেন ক্রিকেট বোর্ডের কেউ জানেন না।
পাপনের পর গত এক দশকে ক্রিকেট বোর্ডে প্রভাবশালী ছিলেন অন্যতম পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক। পাপনের মতো চলমান পরিস্থিতিতে মল্লিকও আছেন গভীর সংকটে। গত এক দশকে কাউন্সিলরশিপ, জুনিয়র লিগে পাতানো খেলাসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে। যা নিয়ে ক্রিকেটাঙ্গনে মল্লিকের ওপর ক্ষোভ অনেকের। এ ছাড়া বিসিবির শফিউল আলম নাদেল, নাইমুর রহমান দুর্জয়, আ জ ম নাসির সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জালাল ইউনুস, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, কাজী ইনাম আহমেদ, তানভীর আহমেদ টিটো সরাসরি রাজনীতি না করলেও, তারা আওয়ামীমনা হিসেবেই স্বীকৃত। তাদের কারও ভাই, বাবা কিংবা দুলাভাই আওয়ামী লীগের বড় নেতা।
এমন অবস্থায় ক্রিকেট বোর্ড পরিচালনায় সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন কোচ ফাহিম। তিনি বলছেন, ‘এটা (রূপরেখা) নিয়েই তো বছরের পর বছর আমরা চিন্তাভাবনা করেছি, বিশেষ করে আমি। কোন জায়গায় কি করলে আরেকটু এগোনো যায়, কোন জায়গায় ঘাটতি আছে, আমাদের কী রিসোর্স আছে যা দিয়ে আমরা ওভারকাম করতে পারি। সামনে হয়তো এটা নিয়ে আমি আলাপও করব। কোন জায়গায় আমরা পিছিয়ে আছি, অথচ সে জায়গায় আমাদের পিছিয়ে থাকার কোনো কারণ নেই।’
এএইচএস