দেশজুড়ে সাড়া জাগানো ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। সদ্য বিলুপ্ত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। দলের পতনের একদিন পরই কানাডায় খেলতে নেমে লাঞ্ছিত হন। এর আগেও ছাত্রদের আন্দোলনে নীরব থাকায় তোপের মুখে পড়তে হয় তাকে। 

এক সময় স্লোগান উঠত– ‘বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান।’ তার কারণও নিশ্চয়ই অমূলক নয়, তাকেই যে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পোস্টারবয় হিসেবে জানে সারা বিশ্ব। কিন্তু দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি নিয়ে নীরব থাকায় তাকে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। 

সাকিব নীরব থাকলেও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে গেছেন তার গুরু ও ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম। ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সাকিব প্রসঙ্গে। জবাবে তিনি বলেন, তার (সাকিব) সুযোগ ছিল ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর, সহানুভূতি দেখানোর। কিন্তু কেন হয়নি সেটা ও-ই ভালো জানে আমি তো বলতে পারব না। তার ফ্যান বা তাকে যারা পছন্দ করে তাদের রিয়্যাকশনটা খুব স্বাভাবিক। তারা আশা করেছিল কিছু না কিছু একটা সাকিবের থেকে তাদের কাছে আসবে। যেহেতু আসেনি তাদের রিঅ্যাকশনটা জাস্টিফাইড। আমার সাথে কোনো কথা হয়নি। তার ক্যারিয়ার এখানে শেষ কি না আমি এখন বলতে পারব না।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ক্রীড়াঙ্গনের অনেক তারকাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন সাকিব। পুরোটা সময়ই নীরব ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে। কদিন আগেই কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টির এক ম্যাচে প্রবাসী ভক্তের তোপের মুখে পড়েন সাকিব।

দলের পতনের পর আবারও আক্রমণের শিকার হন সাকিব। গতকাল ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ক্রিকেটারদের সঙ্গে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ‘দালাল সাকিব’‘টোকাই সাকিব’ ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ সময় কেউ কেউ আবার অশ্রাব্য গালাগালও দেন। 

এর আগে খেলা চলাকালেও বেশ কয়েকবার টিজিংয়ের শিকার হন সাকিব। সাকিব ভাই পদ আছে না গেছে বলে অনেককে প্রশ্ন করতে দেখা যায়। উল্লেখ্য, সংসদ বিলুপ্তি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই সংসদ সদস্য হিসেবে সাকিবসহ অন্যদের মেয়াদ ফুরিয়েছে। মাগুরা-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার।

এসএইচ/এফআই