ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। আক্রান্ত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার বাড়িও। 

যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে ক্রিকেটার লিটন দাসের। নিজেদের হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদ নিয়ে কাজ করা যোদ্ধা জানিয়ে ‘হিন্দুতভা নাইট’ নামের একটি ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে মাশরাফির বাড়ি পোড়ার দৃশ্যের একটি ছবির পাশে লিটন দাসের একটি ছবি কোলাজ করে লিখেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বী এই ক্রিকেটারের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। পোস্টটি ইতোমধ্যে মিলিয়ন মানুষ দেখেছে। 

লিটনের নামে মাশরাফির বাড়ি পোড়ার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এতে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানান। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেন। যদিও পরে দেশটির অনেক মিডিয়া সত্যটি তুলে ধরে। 

ভারতীয় দৈনিক দ্য ইকোনমিক টাইমস ‘বাংলাদেশি ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়ি আন্দোলনকারীরা পুড়িয়ে দিয়েছে? ভাইরাল ভিডিওর পেছনের সত্যিটা এখানে’ শিরোনামে করা প্রতিবেদনে সত্যি ঘটনাটি জানিয়েছে। লিখেছে, পুড়তে থাকা বাড়ির যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, সেটি লিটন দাসের নয়, মাশরাফির বাড়ি।

মাশরাফির বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

অনুরাগ রাজ নামে এক এক্স একাউন্টের একটি পোস্টকে ব্যবহার করা হয়েছে দ্য ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে। যেখানে মাশরাফির বাড়ি পোড়ানোর ভিডিও এবং এ সম্পর্কিত খবরের স্ক্রিনশট দিয়ে লেখা, ‘এই লোকগুলো কারা যারা ‘লিটন দাসের বাড়ি পোড়ানো হচ্ছে’ বলে খবর ছড়াচ্ছে? ভুয়া খবর ছড়ানো বন্ধ করুন! এটা নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি মুর্তজার বাড়ি। তিনিও সাবেক বাংলাদেশি ক্রিকেটার।’

এদিকে, ফ্যাক্টচেকার প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্ট ওয়াচও জানিয়েছে, লিটন দাস নয়, বরং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক খেলোয়াড় মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। তিনি ধর্মীয়ভাবে মুসলিম এবং আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। অর্থাৎ, তার বাড়িতে হামলার এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হামলা নয়, বরং রাজনৈতিক কারণে হামলা বলা যেতে পারে। সঙ্গত কারণে ফ্যাক্টওয়াচ লিটন দাসের বাড়িতে আগুন দেওয়ার তথ্যটিকে “বিভ্রান্তিকর” হিসেবে চিহ্নিত করছে। 

এফআই