‘আবু সাঈদ-মুগ্ধরা মরে না’
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেমে পুলিশের গুলিতে সর্বপ্রথম নিহত হন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। আন্দোলনের একপর্যায়ে নিরস্ত্র সাঈদ মারমুখী পুলিশের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর তাকে গুলি করে হত্যার দৃশ্য দেখেই মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচি ছড়িয়ে যায় সারাদেশে। এরপর চলমান আন্দোলনে আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টি করা দৃশ্য ছিল মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র পানি বিতরণের ছবি। তিনিও নিহত হন এই সংঘাতের বলি হয়ে।
নিহত এসব শিক্ষার্থীরা অমর বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব। দেশজুড়ে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে তাদের আন্দোলনে সংহতি জানানো সর্বস্তরের জনতা। কারণ তাদের করা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের এক দফার আন্দোলন সফল হয়েছে। দেশ ছাড়ার আগে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বিজ্ঞাপন
এরপরই নিহত আবু সাঈদ ও মুগ্ধকে স্মরণ করে তানজিম সাকিব এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধরা মরে না। তারা বেঁচে থাকে আমাদের অন্তরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে…।’
আবু সাঈদ মুগ্ধরা মরে না তারা বেঁচে থাকে আমাদের অন্তরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে..
Posted by Tanzim Hasan Sakib on Monday, August 5, 2024
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। পরে তিনিই হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নায়ক।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে, এই আন্দোলনের আলোচিত একটি বাক্য হয়ে ওঠে মুগ্ধ’র দেওয়া সেই ডাক– ‘পানি লাগবে কারো, পানি, পানি?’ কারণ পানি বিতরণের মাঝেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন রাজধানীর উত্তরা আজমপুর। গত ১৮ জুলাই ওই এলাকায় মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ যখন পানির কেস হাতে নিয়ে ক্লান্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে পানি বিতরণ করছিলেন, তখন তিনি ঠিক মতো তাকাতেও পারছিলেন না। এক ভিডিওতে দেখা যায়, টিয়ারগ্যাসের কারণে চোখ জ্বালাপোড়া করা সত্ত্বেও তৃষ্ণার্তদের খুঁজছেন আর পানি দিচ্ছেন।
কিন্তু তার সেই পানি বিতরণ বেশিক্ষণ চালিয়ে যেতে পারেননি। কারণ আন্দোলনকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালালে একটি গুলি মুগ্ধর কপালে লাগে। পরে বন্ধুরা দ্রুত মুগ্ধকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান তিনি।
এএইচএস