কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় সরব হয়েছেন বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিরা। এবার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়নের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন ক্রীড়া সাংবাদিকরা। এ সময় তারা নৃশংসতায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।

আজ শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা ১২টায় মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রাঙ্গনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দেশের প্রতিষ্ঠিত ও স্বনামধন্য গণমাধ্যমের ক্রীড়া সংবাদকর্মীরা। ক্রীড়াভিত্তিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও ছিল সরব উপস্থিতি। মানববন্ধন শেষে নৃশংসতায় প্রাণ হারানো সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।  

‘আমরা ক্রীড়া সাংবাদিক’ ব্যানারে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশে নিরীহ শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার ওপর যে নৃশংসতা হয়েছে, এর উপযুক্ত বিচার করতে হবে। যে দলের লোকই হোক, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনমনে আতঙ্ক তৈরি কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে জানান তারা। একইসঙ্গে সাংবাদিকরা বৈষম্যমুক্ত সমাজের প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেছেন। এ ছাড়া দেশের যেসব ক্রীড়াবিদদের তরুণ প্রজন্ম আদর্শ মনে করেন, তাদের প্রতিও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার আহবান জানান সংবাদকর্মীরা। অন্যথায় তাদের বর্জন করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

কালের কণ্ঠের ক্রীড়া সম্পাদক এটিএম সাইদুজ্জামান বলেছেন, ‘গত কিছুদিন, জুলাই মাসে যা ঘটেছে এবং এখন যা ঘটছে, তাতে শোক জানানোর কোন ভাষা নেই। শুধু একজন ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে নই, আমি এখানে একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে এসেছি। আমি মর্মাহত, শোকাহত। আমাদের আরও আগে ভয়েজ রেইজ করা দরকার ছিল। এই নৃশংসতা যেকোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। যারা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে আছেন, তারা সেটি করেননি। যে ঘটনাগুলো ঘটে গেছে, তার রেশ আমাদের আরও কত বছর বহন করতে হবে, আমি নিশ্চিত নই। আমার দাবি প্রত্যেকটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, কোনো আইওয়াশ নয়।’ 

চ্যানেল২৪ এর বিশেষ প্রতিনিধি রেজওয়ান উজ জামান বলেন, ‘প্রতিটি হত্যার বিচার চাই। আমাদের একটাই দাবি, একটাই কথা যে, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা মনে করি, সকল পক্ষ থেকে আমরা যদি এই দাবিটা গণজোয়ারে পরিণত করতে পারি, তাহলে এই দাবি পূরণ হবে।  

নিউজজি২৪.কমের প্রবীণ ক্রীড়া সাংবাদিক শামীম চৌধুরী বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে কভার করতে গিয়ে নিহত সাংবাদিকদের প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এই আন্দোলনে নিহতের সঠিক সংখ্যা আমরা এখনও জানি না। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বিভিন্ন কথা শুনছি। এর মধ্যে কিন্তু ৫ জন সাংবাদিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। ক্রীড়া সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। পেশাগতভাবে তারা আমাদেরই সহকর্মী, আমরা প্রথমেই দাবি করব, প্রতিটি মৃত্যুর সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য বিচার হোক।’

এর আগে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে নৃশংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার, ফুটবলার থেকে শুরু করে ক্রীড়া সংশ্লিষ্টরা। কেউ কেউ রাস্তায় নেমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সংহতিও জানিয়েছেন।

এসএইচ/এএইচএস