আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই মুখোমুখি অবস্থানে যাচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত-পাকিস্তান। বিশেষত পাকিস্তানের মাটিতে কোনোভাবেই টুর্নামেন্টটিতে খেলতে চায় না ভারত। সে কারণে দেশটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে তাদের ম্যাচগুলো আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সেটি মানতে নারাজ পাকিস্তান। আর এ বিষয়টি নিয়েই আইসিসির সভায় মুখোমুখি বিবাদে জড়াতে পারে দেশ দুটি।

আইসিসির নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করা হবে। যদিও এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টটির সূচি চূড়ান্ত হয়নি। ইতোমধ্যে পিসিবির পক্ষ থেকে খসড়া সূচি পাঠানো হয়েছে আইসিসিকে। ভারতের নারাজি না থাকলে, মোটামুটি সেই সূচি মেনেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মাঠে গড়াতে পারত। সেই সমাধান আসতে পারে আগামীকাল থেকে (১৯ জুলাই) থেকে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে শুরু হতে যাওয়া আইসিসির চারদিন ব্যাপী সভায়। পরে ২২ জুলাই হবে বার্ষিক সাধারণ সভা।

ওই সভায় যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ইস্যুর সমাধান আসতে যাচ্ছে সেটাই জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। তবে সুনির্দিষ্ট করে কী কী বিষয় আলোচনা হবে, সেটা জানা যায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, যেহেতু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল আয়োজক পাকিস্তান, তাই পুরো টুর্নামেন্ট নিজেদের মাটিতেই আয়োজন করতে চায় পাকিস্তান। এখন দেখার বিষয়, এই সভা থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসে কি না।

এদিকে, নারী এশিয়া কাপ শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। যেখানে আসরের প্রথম দিনই দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান। ডাম্বুলায় ম্যাচটি দেখতে বিসিসিআই সচিব জয় শাহ মাঠে হাজির থাকবেন বলে জানা গেছে। আইসিসির সভায়ও তিনিই  সম্ভবত ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন, অন্যদিকে বাবর আজমদের পক্ষে সভায় থাকছেন পিসিবি সভাপতি মহসিন নাকভি।  

ওই সভায় তিনটি বিষয়ের যেকোনো একটি ঘটতে পারে। প্রথমত, যদি ভারত সরকার পাকিস্তানে গিয়ে খেলার অনুমতি দেয়, তবে স্বাভাবিকভাবেই অংশগ্রহণ করবেন রোহিত শর্মারা। বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজিব শুক্লা বলছিলেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাওয়া প্রসঙ্গে আমরা একটা কথাই বলতে পারি, সরকার যা বলবে আমরা তাই করব। সরকার অনুমতি দিলে অবশ্যই টিম পাঠানো হবে। সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে সরকারের অনুমতির ওপরই।’

দ্বিতীয়ত, হাইব্রিড মডেলে আয়োজন হতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তবে তাতে রাজি করাতে হবে পিসিবিকে। শুরু থেকে ওই মডেল মেনে ভারতীয়রা খেলতে চাওয়ার কথা জানিয়ে আসছে। অর্থাৎ প্রতিযোগিতার আয়োজক হিসেবে পাকিস্তানই থাকবে, কিন্তু ভারত তাদের ম্যাচ অন্য দেশে গিয়ে খেলবে। বোর্ডের এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছিলেন, শ্রীলঙ্কা বা দুবাইয়ে খেলতে চাইছে বোর্ড। গত বছর এশিয়া কাপেও একই ঘটনা ঘটেছিল। টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারত চিরশত্রু দেশে খেলতে যায়নি। আয়োজক হিসেবে পরে শ্রীলঙ্কাকে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। ভারতের সব ম্যাচ হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। পাকিস্তান মূল আয়োজক হলেও ১৩টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র চারটি ম্যাচ সে দেশে হয়। ফাইনালসহ ৯টি ম্যাচ হয় শ্রীলঙ্কায়।

তৃতীয়ত, আইসিসিও এবার ভারতের দাবি মেনে নেবে না বলেই কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে। সে কারণেই গুঞ্জন উঠছে, ভারত যদি পাকিস্তানে খেলতে না যায়, তাহলে রোহিত-কোহলিদের বাদ দিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মাঠে গড়াবে। ভারতের বদলে তখন খেলার সুযোগ পেতে পারে শ্রীলঙ্কা।

এএইচএস