ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুই শীর্ষ কর্মকর্তা আচমকা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। যারা যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে জড়িত ছিলেন। গতকাল (শুক্রবার) অনেকটা আচমকা আইসিসির হেড অব ইভেন্টস ক্রিস টেটলি এবং মার্কেটিং ও কমিউনিকেশন ম্যানেজার ক্লেইরি ফারলং এই ঘোষণা দেন। এর আগে বিশ্বকাপের শুরুর দিকে লো স্কোরিং পিচ নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছিল। দুই কর্মকর্তার পদত্যাগে বিষয়টির প্রভাব রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে! 

টেটলি-ক্লেইরি এমন সময়ই এই ঘোষণা দিলেন, যখন আর সপ্তাহখানেক পরই শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে আইসিসির বার্ষিক সভায় বসতে যাচ্ছে। ভারতীয় ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ বলছে, তাদের হঠাৎ এই সিদ্ধান্তে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোনো বিষয় জড়িয়ে থাকতে পারে। যদিও আইসিসির অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, তাদের পদত্যাগের বিষয়টি কয়েক মাস আগেই জানানো হয়েছিল।

এবারের বিশ্বকাপের অধিকাংশ দলই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিচে খাবি খেয়েছে। ম্যাচ চলাকালে পিচের অস্বাভাবিক আচরণে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে তাদের। যে ধরনের ড্রপ ইন পিচ সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল তাতে বোলারদের জন্য কাজটা অনেক সুবিধা হয়েছিল। বিপরীতে ব্যাটারদের তৈরি হয়েছিল জীবন্ত নরক! কখনও খাড়া বাউন্স কিংবা অস্বাভাবিক নিচু হয়ে বল চলে যাওয়া। এমন অসমান ডেলিভারির জন্য বারবারই বিপাকে পড়েছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিসহ বিশ্বের প্রথম সারির ক্রিকেটাররা।

সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিচ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হতেই আসরে নামতে হয় খোদ আইসিসিকেই। তারা জানিয়েছিল, পিচ যত দ্রুত আরও পরিণত করে খেলার উপযোগী করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে মাত্র ১১৯ রান করেও তা ডিফেন্ড করা গিয়েছিল, এই আবহেই ব্যাপক সমালোচিত হয় আইসিসিও। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের প্রসার ঘটাতে গিয়ে যে আদতে ক্রিকেটকেই হাস্যকর করে ফেলেছিল তারা। এভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত-যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি ম্যাচেই একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, আইসিসির বার্ষিক সভায় বেশ কয়েকটি বোর্ড পিচ ইস্যুতে মুখ খোলার আগেই দুজন সরে দাঁড়ালেন।  নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট মাঠের রিভিউয়ের পর বেশ চাপেই ছিলেন আইসিসির দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের লডারহিল, ক্যারিবীয় দ্বীপের সেন্ট ভিনসেন্ট-সহ আরও কয়েকটি ভেন্যুর পিচেও অল্প রানের ম্যাচ দেখা গিয়েছিল। যা নিয়ে বার্ষিক সভায় বেশ উত্তেজনা ছড়াতে পারে।

তবে আইসিসি সূত্রে খবর, তারা আগেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। যদিও আগামী সপ্তাহে বসতে চলা বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন তারা। পাশাপাশি আগামী কয়েকটা মাস নিজেদের দায়িত্ব সামলাবেন সরে দাঁড়ানোর পরেও। যাতে নতুন কেউ এই পদে আসলেও বিষয়টি বুঝতে এবং দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত না হয়। আগামী ১৯-২২ জুলাই কলম্বোয় আইসিসির বার্ষিক সভা হওয়ার কথা রয়েছে।

এএইচএস