রোহিত-সূর্যদের আটকানোর দায়িত্ব যার কাঁধে
দুর্দান্ত ছন্দে আছেন রোহিত শর্মা। কোচ রাহুল দ্রাবিড় তার মেয়াদের শেষদিকে এসে আমূল বদলে দিয়েছেন রোহিতের গেমপ্লে। এখন আর ইনিংস তৈরি করা বা অ্যাংকর রোলে না, রোহিত শর্মা সত্যিকার অর্থেই হয়ে উঠেছেন হিটম্যান। ইনিংসের শুরু থেকেই বিধ্বংসী ভূমিকায় তিনি। আর অধিনায়ক রোহিতের এমন ভূমিকার দারুণ সুফলও পাচ্ছে ভারত।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে থেকেই রোহিত শর্মা খেলছেন আগের চেয়ে আগ্রাসী ভূমিকায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও হয়নি ব্যতিক্রম। অস্ট্রেলিয়ার কিংবা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা অনেকটা একা হাতেই নিয়ে গেছেন প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এবারের বিশ্বকাপে রোহিত এখন পর্যন্ত ৩য় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৭ ইনিংসে করেছেন ২৪৮ রান। এরমাঝেই আছে ৩ ফিফটি। স্ট্রাইকরেট ১৫৫.৯৭।
বিজ্ঞাপন
রোহিত শর্মা ছাড়া আরও একজনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ভারত। তিনি সুর্যকুমার যাদব। টি-টোয়েন্টির নাম্বার ওয়ান ব্যাটার ছিলেন দিনকয়েক আগেও। ক্রিকেটের শর্টার ফরম্যাটে সূর্য বরাবরই অপ্রতিরোধ্য। আর প্রতিপক্ষ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বরাবরই দুর্দান্ত তিনি।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি পঞ্চাশ পেরুনো ইনিংস তারই। ৬ বার প্রোটিয়াদের মুখোমুখি হয়ে ৫বারই ফিফটির দেখা পেয়েছেম দ্য স্কাই খ্যাত সূর্য। ৬ ইনিংসে করেছেন ৩৪৩ রান। গড় ৬৮ এর বেশি। স্ট্রাইকরেটও প্রায় ১৭৮ ছুঁইছুঁই। ২০২২ বিশ্বকাপেই প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ৪০ বলে ৬৮ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন এই ব্যাটার।
কিন্তু এমন দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও ভারত যে খুব একটা স্বস্তিতে আছেন এমন বলা চলে না। বরং ভারতের ঘুম হারাম করে দিতে দক্ষিণ আফ্রিকারও আছে নিজস্ব এক অস্ত্র। নাম তার কাগিসো রাবাদা। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়াদের আউট করা যার ‘ডান হাতের কাজ।’
ভারতের প্রায় সব ব্যাটারকেই আউট করা নিজের অভ্যাসে পরিণত করেছেন কাগিসো রাবাদা। আইপিএল এবং জাতীয় দলের হয়ে অনেকবারই ভারতীয় ব্যাটারদের সামনে পড়েছেন তিনি। আর সেখানে দারুণ সফল এই পেসার। বিরাট কোহলিকে ১৩ ইনিংসে ৪ বার আউট করেছেন রাবাদা। রোহিত শর্মাকে ১৫ ইনিংসে ৪বার, সূর্যকুমারকে ১২ ইনিংসে ৩বার প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছেন রাবাদা।
এবারের বিশ্বকাপেও রাবাদা আছেন ছন্দে। আনরিখ নরকিয়া আর মার্কো জানসেনের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন দারুণ এক পেস আক্রমণ। ৮ ম্যাচেই শিকার করেছেন ১২ উইকেট। সেটাও মাত্র ১৩.২৫ গড়ে। আর ওভারপ্রতি খরচ করেছেন মোটে ৫.৮৮ রান। রোহিত শর্মা, সূর্যকুমারকে আটকাতে রাবাদার চেয়ে বড় অস্ত্র হয়ত এইডেন মার্করামের হাতে আর নেই।
কেবলমাত্র রোহিত, সূর্যকুমার কিংবা কোহলিই না, রাবাদার পেসে ধরাশায়ী হয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া আর শিভাম দুবেও। ৫ ইনিংসে রাবাদার মুখোমুখি হয়েছেন দুবে। তার মাঝে ২ বারই আউট হয়েছেন এই পেসারের বলে। আবার হার্দিক রাবাদার বিপক্ষে ১২ বার ব্যাট করতে নেমে আউট হয়েছেন দুইবার। জাতীয় দলের জার্সিতে ভারতের বিপক্ষে ১২ ম্যাচে ৮ উইকেট পেয়েছেন রাবাদা। উইকেট কিছুটা কম দিলেও রান খরচে ছিলেন ভীষণ কৃপণ। ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে তাই রাবাদার ৪ ওভার দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য হতে পারে বিশেষ গুরুত্ববহ।
জেএ