চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব ও সুপার এইট মিলিয়ে অপরাজেয় থেকেই সেমিফাইনালে ওঠে ভারত। কিন্তু সুপার এইটের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারত বল টেম্পারিং করে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ইনজামাম উল হক। যা নিয়ে সেমিফাইনালে নামার আগে জবাব দিয়েছেন রোহিত শর্মা। ইনজিকে উদ্দেশ্য করে ভারতীয় অধিনায়ক অপমানের সুরে বলেছেন, ‘কখনও কখনও মাথা খাটানো উচিৎ।’

গত ২৪ জুন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৫তম ওভারে বল করছিলেন পেসার আর্শদীপ সিং। সেই ওভারে বলে রিভার্স সুইং করেছিলেন ভারতীয় এই বাঁ-হাতি পেসার। নতুন বলে ইনিংসের ১৫তম ওভারেই রিভার্স সুইং কীভাবে করছেন আর্শদীপ– সেটাই প্রশ্ন ইনজির। সে কারণেই তিনি বল বিকৃতি করা হতে পারে বলে অভিযোগ তোলেন। এ নিয়ে বেশিকিছু বলবেন না উল্লেখ করেও রিভার্স সুইং নিয়ে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন রোহিত।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ রাত সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে খেলবে ভারত। তার আগে সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের প্রস্তুতি ও কৌশল নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত। একপর্যায়ে ইনজামামের করা বল বিকৃতির অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘কী উত্তর দেব। আপনি যদি সূর্যের নিচে খেলেন, উইকেট শুষ্ক থাকে, কোনো কিছু ছাড়াই বল রিভার্স সুইং করে। সব দলের বোলাররাই রিভার্স সুইং পাচ্ছে। শুধু আমাদের বোলাররা নয়। মাঝেমধ্যে মাথা খাটানো উচিৎ। আপনাকে বুঝতে হবে, আমরা কোথায় খেলছি। আমরা ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় খেলছি না।’

পাকিস্তানের চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ‘ওয়ার্ল্ড কাপ হাঙ্গামা’ অনুষ্ঠানে ইনজামাম বলেছিলেন, ‘১৫তম (আসলে ১৬তম) ওভারে আর্শদীপ সিং রিভার্স সুইং পাচ্ছিল। বলটা তুলনামূলক নতুন ছিল, রিভার্স কি একটু আগেই পাচ্ছিল না? এর মানে বল ১২-১৩ ওভারেও রিভার্স সুইং পাওয়ার মতো অবস্থায় ছিল। যখন সে বোলিংয়ে এলো, রিভার্স হয়েছে। সবসময় আম্পায়ারদের চোখ খোলা রাখা উচিৎ। পাকিস্তানি কোনো বোলার এমন করলে এ নিয়ে অনেক কথা হতো। আমরা রিভার্স সুইং সম্পর্কে ভালো জানি। ১৫তম ওভারে যদি আর্শদীপের বলে রিভার্স হয়, এর মানে হচ্ছে বলে গুরুতর কোনো কাজ করা হয়েছে।’

তবে আরেক ভারতীয় পেসার জাসপ্রীত বুমরাহর বেলায় একই অভিযোগ করতে নারাজ ইনজামাম। বলকে রিভার্স করার ব্যাপারে তার সামর্থ্য আছে দাবি করে সাবেক পাক তারকা বলেন, ‘দেখুন বুমরাহ এটা করতেই পারেন, কারণ তার বোলিং অ্যাকশন। কিন্তু কিছু বোলারের জন্য– তাদের বোলিং অ্যাকশন আর গতি বিবেচনা করলে, বলটাকে ওমন যথাযথ কন্ডিশনে থাকতে হবে বা বলকে তৈরি করে নিতে হবে।’ 

ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রিকেটে সম্পর্ক কখনোই মধুর ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে মাঠে এবং মাঠের বাইরে খেলোয়াড়দের মাঝে হাসিমুখে বাক্যবিনিময় দেখা গেলেও পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল দেড় থেকে দুই দশক আগেও। ভারত আর পাকিস্তান মানেই ছিল বিতর্ক আর চাপা উত্তেজনা। এখনও মাঠের বাইরের পরিবেশ ও দুই দলের মাঝে সম্পর্ক বেশ উত্তপ্ত। সেই ঘটনাই মনে করিয়ে দিল ইনজামামের অভিযোগ। এমন বাক্য-বিনিময়ের লড়াই আরও কতদূর গড়ায় সেটাই দেখার বিষয়! গ্রুপপর্বেই বিদায় নিশ্চিত করে ফেলায় আপাতত মাঠের লড়াইয়ে নেই পাকিস্তান।

এএইচএস