ফ্লাইট বিপর্যয়সহ আরও যেসব কারণে আফগানদের এমন ভরাডুবি!
সময়ের হিসেবে ঠিক ৪৮ ঘণ্টা। বাংলাদেশ সময় গত মঙ্গলবার ভোরে (স্থানীয় সময় সোমবার রাত) রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশকে হারিয়ে আইসিসির যে কোনো ইভেন্টে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েছিল আফগানিস্তান। তাদের সামনে হাতছানি ছিল স্বপ্নের ফাইনালের।
গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ড ও সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়ার মতো পরাশক্তিকে হারিয়ে রীতিমতো উড়ছিল আফগানরা। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা সেই আফগানিস্তানকে টেনে মাটিতে নামিয়ে আনল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের বোলিং তোপে মাত্র ৫৬ রানেই গুটিয়ে গেছে রহমানুল্লাহ গুরবাজ-রশিদ খানরা। জবাবে ৯ উইকেটের সহজ জয়ে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিজ্ঞাপন
ইতিহাস গড়ার মঞ্চে কেন এমন ভরাডুবি?
বিশ্বকাপজুড়ে দারুণ পারফর্ম করা আফগানিস্তানের এমন বাজে পরিস্থিতি দেখার জন্য অনেকেই প্রস্তুত ছিলেন না। প্রথমবার সেমিফাইনালে খেলার চাপ নিতে না পারা নাকি অন্য কোনো কারণে এমন বিপর্যয়, সেটি নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। তবে এক এক্স বার্তায় অনেক প্রশ্নের জবাবই দিয়ে দিয়েছেন মাইকেল ভন।
— Michael Vaughan (@MichaelVaughan) June 27, 2024
ইংল্যান্ডের সাবেক এই অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার সোশ্যাল মিডিয়া এক্সে বলছিলেন, ‘স্থানীয় সময় সোমবার রাতের ম্যাচে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার পর সেন্ট ভিনসেন্ট থেকে ত্রিনিদাদের (সেমির ভেন্যু) যেই বিমান ধরেছিল আফগানরা, চার ঘণ্টা লেট ছিল ফ্লাইটে। ত্রিনিদাদে নেমে কোনো প্র্যাকটিস সেশন করতে পারেনি, বা নতুন ভেন্যুর পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময়টুকুই পায়নি। আমার মতে, এভাবে খেলোয়াড়দের চরম অশ্রদ্ধা করা হলো।
সেন্ট ভিনসেন্টের স্লো উইকেট থেকে ত্রিনিদাদের ফাস্ট উইকেটে মানিয়ে নেওয়ার জন্য অনুশীলন বা সময়টা আবশ্যক ছিল রশিদ খানদের। কিন্তু ব্যস্ত শিডিউলের কারণে সে সুযোগ তারা পায়নি।
আত্মতুষ্টি?
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের লজ্জার রেকর্ড গড়া রশিদ-নবিরা অত্যধিক আত্মতুষ্টিতে ভুগেছে বলেও মনে করা হচ্ছে। এই আত্মতুষ্টিটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের জন্য। বিশ্বকাপের চলমান আসরে যে ভেন্যুতে চেজিং করে জয়ের সংখ্যা ভারী, সেই ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও তাদের জন্য বুমেরাং হয়েছে। প্রোটিয়া বোলিং লাইন-আপের বিপক্ষে পর্যাপ্ত প্রস্তুতিও নিতে পারেনি তারা।
অবশ্য সেমিফাইনালের ফলাফল বাদ দিলে আফগানিস্তান মাথা উঁচু করেই তাদের ইতিহাসে স্মরণীয় বিশ্বকাপ শেষ করেছে।
রশিদ খানের ব্যাখ্যা
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাজেভাবে হারের পর অবশ্য আফগান অধিনায়ক রশিদ খান কোনো অজুহাত দিতে চাননি। তিনি বলছেন, 'দল হিসেবে এটা আমাদের জন্য কঠিন ছিল। আমরা হয়তো আরও ভালো করতে পারতাম কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী তা করতে পারেনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এমনই হয়, আপনাকে সব কন্ডিশনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি মনে করি তারা সত্যিই ভালো বোলিং করেছে।'
আরও পড়ুন
বিশেষভাবে প্রশংসা করলেন বোলারদের, ‘আমি মনে করি এই টুর্নামেন্টে আমরা ভালো সাফল্য পেয়েছি কারণ পেসাররা সত্যিই ভালো বোলিং করেছে। আমি মনে করি মুজিবের ইনজুরি দুর্ভাগ্য কিন্তু আমাদের পেসাররা এমনকি নবিও নতুন বলে দুর্দান্ত বোলিং করেছে। এটা স্পিনার হিসেবে আমাদের কাজকে সহজ করে দিয়েছে।
রশিদ এরপরেই যোগ করেন ‘আমরা এই টুর্নামেন্ট উপভোগ করেছি। এটা আমাদের জন্য মাত্র শুরু, এরপর কোনো দলকে হারানোর আত্মবিশ্বাস ও বিশ্বাস আমাদের আছে।’
এফআই