শুরুর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু মিডল অর্ডার ব্যাটাররা সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। সাকিব আল হাসান-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা দ্রুত ফিরেছেন। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। এই তরুণ ব্যাটার শেষদিকে একাই লড়েছেন। শান্ত-হৃদয়ের ব্যাটে ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২১ জুন) স্যার ভিভিয়ান রিচার্ড স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেছেন শান্ত। তাছাড়া ৪০ রান এসেছে হৃদয়ের ব্যাট থেকে।

পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী টস হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ সময় সকাল ৬ টায়। তবে টসের ঠিক আগ মুহূর্তে হানা দেয় বৃষ্টি। অবশ্য সেটা খুব একটা দীর্ঘ হয়নি। তারপরও মিনিট পাঁচেকের এই বৃষ্টিতে টসে বিলম্ব হয়েছে। ১৫ মিনিট দেরিতে টস হলেও ম্যাচ শুরুর সময়ে পরিবর্তন আসেনি।

গ্রুপ পর্বের কোনো ম্যাচেই উদ্বোধনী জুটিতে দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। আজও হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরেছেন তানজিদ হাসান তামিম। তৃতীয় বলটি স্টাম্পের ওপর ফুললেংথে করেছিলেন মিচেল স্টার্ক। সেখানে সময়মতো ব্যাট নামাতে পারেননি তানজিদ তামিম, ব্যাটের নিচের অংশে লেগে বল ঢুকেছে স্টাম্পে। তিন বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। টানা দুই ইনিংসে খেলেন ডাক।

তানজিদ তামিমের বিদায়ের পর তিনে নেমে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আজ শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন। তবে আরেক প্রান্তে লিটন ধীরগতির ব্যাটিং করেছেন। তাতে পাওয়ার প্লেতে আর কোনো উইকেট না হারালেও রানের গতি বাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ৬ ওভার শেষে এক উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান তুলে টাইগাররা।

পাওয়ার প্লের পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন। শুরু থেকেই ভুগতে থাকা লিটনকে শেষ পর্যন্ত মুক্তি দিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা। নিজের খেলা প্রথম ৯ বলে কোনো রান নিতে পারেননি এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত গিয়ার পরিবর্তন করতে গিয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন তিনি। জাম্পাকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে ১৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

রিশাদ হোসেনকে চারে নামিয়ে বড় চমকই দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে বড় সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারলেন না এই তরুণ। মূলত রানের গতি বাড়াতেই রিশাকে ফ্রি লাইসেন্স দিয়ে উইকেটে পাঠিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু তিনি টিকতে পারলেন কেবল ৪ বল। ২ রান করে ম্যাক্সওয়েলের বলে শর্ট থার্ডে ধরা পড়েছেন তিনি।

আসরজুড়ে রান খরায় ভোগা শান্ত আজ দারুণ শুরু পেয়েছিলেন। চেষ্টা করেছেন দায়িত্ব নিয়ে পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করার। নিজের পরিকল্পনায় সফলই ছিলেন বলা যায়। এগোচ্ছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটির দিকে। তবে কাটা পড়লেন ৪১ রানে। ইনিংসের ১৩তম ওভারের শেষ বলে জাম্পাকে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক।

দ্রুত ফিরেছেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে সাকিব ফিরেছেন ১০ বলে ৮ রান করে। পরের ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়েছেন প্যাট কামিন্স। পরের বলেই শেখ মেহেদিকেও ফিরিয়েছেন এই পেসার। আসরে প্রথমবার খেলতে নেমে গোল্ডেন ডাক খেয়েছেন তিনি। ১৮তম ওভারের শেষ দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভানা জাগান কামিন্স। ২০তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে প্রথম বলেই হৃদয়কে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তিনি। দ্বিতীয় অজি বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন কামিন্স।

শেষ ওভারে সাজঘরে ফেররা আগে ২৮ বলে ৪০ রান করেছেন হৃদয়। তাছাড়া শেষদিকে নেমে ৭ বলে অপরাজিত ১৩ রান করে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি পেতে সাহায্য করেছেন তাসকিন আহমেদ।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৯ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন প্যাট কামিন্স। তাছাড়া ২ উইকেট পেয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা।

এইচজেএস