টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে অনেক সমালোচনা ছিল। অনেকের মতে বিশ্বকাপ খেলার দৌড়ে এগিয়ে থাকা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বদলে এই উদীয়মান পেসারকে দলে নেন বিসিবির নির্বাচকরা। সে কারণে বিশ্বকাপ দল নিয়ে অনেক সমালোচনাও হয়েছিল। তবে বিশ্বকাপ শুরুর ম্যাচ থেকেই নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন তানজিম সাকিব। 

মূলত নিয়মিত পেসার শরিফুল ইসলামের ইনজুরিতে সুযোগ মেলে সাকিবের। আর সুযোগ পেয়েই শতভাগ কাজে লাগিয়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচ খেলে সাকিব শিকার করেছেন ৯ উইকেট। যা টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট। এমন পারফরম্যান্সের পর ভক্ত-সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন সাকিব। তবে আড়ালে থেকে যাচ্ছে নির্বাচকদের ভূমিকা।

বিশ্বকাপ শুরুর আগমুহূর্তে সাইফউদ্দিনকে বাদ দেওয়ায় কম সমালোচনা হয়নি। এমনকি বিসিবির নির্বাচকদের মুন্ডুপাতও করেছিলেন অনেকে। তারা প্রশ্ন তোলেন দল নির্বাচন নিয়ে। তবে দিনশেষে নির্বাচকরাই যে সঠিক ছিলেন সেটাই আবার প্রমাণিত। গাজী আশরাফ হোসেন লিপু নেতৃত্বাধীন হান্নান সরকার এবং আব্দুর রাজ্জাকদের এই নির্বাচক প্যানেলকে এমন সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয়।

বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর সঙ্গে সহকারী আব্দুর রাজ্জাক ও হান্নান সরকার

এর আগে তানজিম সাকিবকে দলে নেওয়া নিয়ে লিপু বলেছিলেন, ‘দুটো রাস্তা ছিল আমাদের সামনে– প্রথমত দলে থাকা ফিট ক্রিকেটারদের মধ্যে থেকে নির্বাচন, দ্বিতীয়ত বাকিদেরও পরখ করে দেখা। আমরা চোট থেকে ফেরা সাইফউদ্দিনের পারফরম্যান্স দেখতে চেয়েছিলাম, তার ওপর অবশ্যই আমাদের আস্থা ছিল। তবে এই (জিম্বাবুয়ে) সিরিজে আমাদের আস্থার জায়গায় কিছুটা এগিয়ে তানজিম সাকিব। সে কারণে সাইফউদ্দিনকে রাখা হয়নি।’

লিপু আরও জানিয়েছিলেন, ‘তানজিম সাকিবকে শ্রীলঙ্কা সিরিজেও আমরা দেখেছি। তার একাগ্রতা, মাঠে দেয়ার চেষ্টা সেটা সাইফউদ্দিনের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রেখেছে। আমরা যে কারণে সাইফউদ্দিনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম যে ডেথ ওভারে ইয়র্কার করা, সেটা কম পরিলক্ষিত হয়েছে।  ঘরোয়া ক্রিকেটে যেমন ছিল তার চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটু তফাৎ হয়েছে। তাই আমরা একটু ভিন্ন চিন্তা করেছি। না হলে তিনি আমাদের ভাবনায় ছিলেন।  ৩০ তারিখে যে দলটা দিয়েছিলাম সেখান থেকে একমাত্র এ জায়গাটাতেই পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের আসলে সাইফউদ্দিন ও সাকিবের মধ্যেই লড়াই চলছিল।’

উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেপালের বিপক্ষে সর্বশেষ গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া স্পেল করেছিলেন তানজিম সাকিব। যদিও প্রোটিয়াদের বিপক্ষে একেবারে তীরে গিয়ে জয় হাতছাড়া হয়ে যায়। তবে নেপালিজদের বিপক্ষে ১০৬ রান করেও বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রাখেন ২১ বছর বয়সী এই পেসার। ম্যাচটিতে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে তানজিম একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। বিনিময়ে তিনি মাত্র ৭ রান খরচ করেন। একইসঙ্গে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে রেকর্ড সর্বোচ্চ ২১টি ডট বলও করেন তানজিম, যদিও সেদিন রাতেই সেই রেকর্ড ভেঙে দেন নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন (২৩ বল ডট)।

এসএইচ/এএইচএস