টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ছিল ব্যাটসম্যানদের রেকর্ড ভাঙা-গড়ার প্রতিযোগিতা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে চলমান মেগা আসরটি হয়ে উঠেছে বোলারদের স্বর্গরাজ্য। ফলে চার–ছক্কা হাঁকানোর বদলে টেনেটুনে ১২০ রান তোলা–ই দলগুলোর লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র পর্ব শেষ হওয়ায় ব্যাটাররা অন্তত কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারেন। সুপার এইটসহ বাকি ম্যাচগুলো হবে ক্যারিবীয় দ্বীপে। তার আগেই আজ (মঙ্গলবার) ঝড়ের আভাস দিয়েছে উইন্ডিজরা।

গ্রুপপর্ব শেষ হওয়ার বেশ আগেই ‘সি’ গ্রুপ থেকে সুপার এইট নিশ্চিত করে ফেলেছিল আফগানিস্তান ও বিশ্বকাপের আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে আজ দেশ দুটির মুখোমুখি লড়াই ছিল অনেকটাই নিয়মরক্ষার, একইসঙ্গে শক্তি যাছাইয়েরও। যেখানে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আফগানদের হোঁচট খাইয়েছেন নিকোলাস পুরানরা। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্যারিবীয়রা চলতি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২১৮ রান তোলে। সেই রানতাড়ায় মাত্র ১১৪ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা।

রশিদ খান, ফজলহক ফারুকিদের বোলিংকে উড়িয়ে দিয়ে স্বাগতিকদের হয়ে তাণ্ডব চালিয়েছেন বেশ কয়েকজন ব্যাটার। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৮ রান করেছেন পুরান। মাত্র ৫৩ বলে তিনি ছয়টি চার ও আটটি ছক্কার বাউন্ডারি হাঁকান। প্রায় নিশ্চিত সেঞ্চুরি হওয়ার আগেই পুরান কাঁটা পড়েন রানআউটের ফাঁদে। এমন বিধ্বংসী ইনিংস খেলেও শেষে যোগ হলো দুই রানের আক্ষেপ। বিশ্বকাপে ‘নার্ভাস’ নাইন্টিতে রানআউট হওয়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান পুরান।

ক্রিস গেইল

অথচ ইনিংসের তখনও দুই বল বাকি, ক্যারিবীয় ব্যাটারেরও দরকার ছিল তিন রান। তাই তো মরিয়া হয়ে স্ট্রাইক পেতে গিয়েই ঝুঁকি নিয়ে দুই রানের। তার সেই আশা গুড়েবালি করে আজমতউল্লাহ ওমারজাই সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভাঙেন। ফলে দুই রানের আক্ষেপ নিয়েই পুরানকে মাঠ ছাড়তে হয়। ২৮ বছর বয়সী এই তারকার আগে এই অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড আছে আরও এক উইন্ডিজ ব্যাটারের। তিনি পুরানেরই সাবেক সতীর্থ ‘ইউনিভার্স বস’খ্যাত ক্রিস গেইল।

তিনিও সমান ৯৮ রানে আউট হয়েছিলেন ২০১০ বিশ্বকাপ আসরে। কাকতালীয়ভাবে সেবারও বিশ্বকাপ আসর বসেছিল ঘরের মাঠে। বার্বাডোজে ভারতের বিপক্ষে পুরানের মতোই দুই রান বাকি থাকতে গেইল আউট হয়ে যান। ফলে ৬৬ বলে থামে তার ৯৮ রানের ইনিংসটি।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবমিলিয়ে এমন আক্ষেপের কীর্তি আছে চারজনের। তবে বিশ্বকাপে কেবল পুরান-গেইল পুড়েছেন এই হতাশায়। এর বাইরে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে নার্ভাস নাইন্টিতে আউট হয়েছে ডেনমার্কের হামিদ শাহ ও চেক প্রজাতন্ত্রের সাবাউন দাভিজি। ২০২২ সালে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে হামিদ শাহ ৬৮ বলে ৯৯ রান করে রানআউট হন। এ ছাড়া ২০১৯ সালে ভ্যালেটা কাপে মাল্টার বিপক্ষে ৬৫ বলে ৯১ রান করে একই ফাঁদে পড়েন চেক তারকা সাবাউন দাভিজি।

এদিকে, বিব্রতকর রেকর্ডে গেইলকে ছোঁয়ার পাশাপাশি ছক্কার কীর্তিতে তাকে ছাড়িয়ে গেছেন পুরান। টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিবীয়দের হয়ে এখন সর্বোচ্চ ছয়ের রেকর্ড বাঁ-হাতি ব্যাটারের দখলে। এই সংস্করণে তিনি মেরেছেন ১২৮টি ছয়। এ তালিকায় তার পরে আছেন ক্রিস গেইল (১২৪), এভিন লুইস (১১১) ও কাইরন পোলার্ড (৯৯)।

এএইচএস