দুই দেশের হয়ে খেলা তারকার অবসর ও বিশ্বকাপের প্রথম রিটায়ার্ড আউট
ইংল্যান্ডের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হলেও, নামিবিয়ার জন্য ছিল নিয়মরক্ষার। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সান্ত্বনার এক জয়ের আশায় অ্যান্টিগায় নেমেছিল আইসিসির সহযোগী দেশটি। ইংলিশ বোলারদের তোপ সামলে সেটি সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এটি ছিল নামিবিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের এক ‘কিংবদন্তি’ ডেভিড ভিসার বিদায়ী ম্যাচ। এর আগে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়েও প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। আজ (রোববার) তাকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ করে দিতে বিশ্বকাপের প্রথম একটি কীর্তিরও দেখা মিলেছে।
ইংল্যান্ডের দেওয়া ১২৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় যখন নামিবিয়ার ২৫ বলে ৮৩ রান প্রয়োজন, তখন রিটায়ার্ড আউট হয়ে ওঠে যান ওপেনার নিকোলাস ডেভিন। যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এ ধরনের আউট হওয়ার কীর্তি। দলের জয় কঠিন সমীকরণে রেখেই নামিবিয়া নিজেদের কিংবদন্তিকে বিদায় জানানোর এই উপায় কাজে লাগিয়েছে। সাধারণত ক্রিকেটীয় নিয়ম বলে, অসুস্থতা, চোট কিংবা অন্য কোনো অনিবার্য কারণ ব্যতীত কোনো ব্যাটসম্যান যদি এভাবে অবসর নেন, তাহলে শুধু প্রতিপক্ষ অধিনায়কের অনুমতি সাপেক্ষেই সেই ব্যাটসম্যান পুনরায় ইনিংস শুরু করতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন
এমন সুযোগ পেয়ে অবশ্য দারুণ এক ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন শেষ ম্যাচ খেলতে নামা ভিসা। ১২ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় তিনি ২৭ রান করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ডিএলএস পদ্ধতিতে ৪১ রানে জেতে ইংল্যান্ড। তার জন্য ডেভিনের রিটায়ার্ড আউট হওয়ার ঘটনায় ভিসা নিজেও নাকি অবাক হয়েছেন। ম্যাচ শেষে যা স্বীকার করেছেন অকপটে, ‘জানতাম এরপর আমি নামব। কিন্তু বুঝতে পারিনি, ওভাবে উইকেট পড়বে। নামার জন্য প্রস্তুত থাকলেও কিছুক্ষণের জন্য বুঝতে পারিনি কী ঘটছে। তবে বার্তা পাওয়ার পর নামার জন্য প্রস্তুত ছিলাম।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থেকে অবসর প্রসঙ্গে ভিসা বলেন, ‘হ্যাঁ, এখনকার জন্য (বিদায়)। মানে পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আরও দুবছর বাকি, এখন আমার বয়স ৩৯ বছর। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য আমার খুব বেশি অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না। এখনও খেলতে পছন্দ করি, হয়তো আরও দুই বছরের মতো খেলব। মনে হয় এখনো অবদান রাখতে পারি, অনেক খেলা বাকি। তবে নামিবিয়ার হয়ে আমার বিশেষ ক্যারিয়ার শেষ করতে এর চেয়ে ভালো জায়গা কই পাব!’
আরও পড়ুন
ভিসা জাতীয় দলের জার্সি খুলে রাখলেও, যে ক্রিকেট ছাড়ছেন না সেটি তার কথায় স্পষ্ট। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে যে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের বেশ ভালো চাহিদা। এদিন ম্যাচে আউট হয়ে ফেরার পথে ভিসাকে জড়িয়ে ধরে বিদায়ী অভ্যর্থনা দেন ইংল্যান্ডের ক্রিস জর্ডান, হ্যারি ব্রুক ও জফরা আর্চাররা। দর্শকরাও তাকে অভিবাদন জানাতে থাকে, ভিসাও জবাব দেন হেলমেট খুলে, হাত উঁচিয়ে, আবেগমাখা দৃষ্টিতে।
নামিবিয়ার হয়ে ২০২১ সালে অভিষেক হওয়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলেন ভিসা। প্রোটিয়াদের হয়ে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিন বছরের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ২৬ ম্যাচ। এরপর বাবার জন্মসূত্রে নাম লেখা নামিবিয়া দলে। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছেন ৫৪টি টি-টোয়েন্টি ও ১৫টি ওয়ানডে ম্যাচ। ভিসা সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ১২৮ স্ট্রাইকরেটে ৬২৪ রান এবং ২২ গড়ে ৫৯টি উইকেট নিয়েছেন।
এএইচএস