অজিদের কাছে হেরে স্কটিশদের বিদায়, সুপার এইটে ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডের বিদায় নিশ্চিত করতে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে জয়ের ব্যবধানটা কম রাখার কথা জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার জশ হ্যাজলউড। এ কারণে অজিদের তদন্তের মুখে পড়তে হবে বলে আইসিসি পাল্টা হুঙ্কার দেয়। ফলে সবমিলিয়ে সবার নজর ছিল অস্ট্রেলিয়া-স্কটল্যান্ড ম্যাচে কী ঘটে, সেদিকে। যেখানে স্কটিশরা দুর্দান্ত ব্যাটিং সত্ত্বেও ৫ উইকেটে হেরে ছিটকে গেল বিশ্বকাপ থেকে। একইসঙ্গে অজিদের জয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করে ফেলল ইংলিশরা।
গতকাল রাতে নামিবিয়াকে বৃষ্টি আইনে হারিয়ে নিজেদের কাজটা সম্পন্ন করে রাখে ইংল্যান্ড। এরপর জস বাটলারদের নজর ছিল সেন্ট লুসিয়ায়। যেখানে ড্যারেন সামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ (রোববার) ভোরে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া-স্কটল্যান্ড। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন স্কটিশরা। টপ অর্ডার ব্রেন্ডন ম্যাকমুলেন দলটির হয়ে বিশ্বকাপের দ্রুততম ফিফটি করেছেন ম্যাচটিতে। শেষ পর্যন্ত তাদের সংগ্রহটা হয় চ্যালেঞ্জিং, নির্ধারিত ওভারে স্কটল্যান্ড সংগ্রহ করে ৫ উইকেটে ১৮০ রান।
বিজ্ঞাপন
তবে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার সামনে যে সেই পুঁজি কিছুই না, সেটাই দেখা গেল দ্বিতীয় ইনিংসে। অবশ্য স্কটিশদের বেশ কিছু ক্যাচ হাতছাড়ার করার ঘটনা এতে ভূমিকা রেখেছে। যদিও একপর্যায়ে মনে হয়েছিল এই বুঝি মার্শ–স্টার্করা হেরেই যাচ্ছেন, কিংবা জয়টা আসবে অল্প ব্যবধানে। তবে শেষ ৫ ওভারে ৬০ রানের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে তারা ব্যতিক্রম কিছু ঘটতে দেননি। ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয় পেল অস্ট্রেলিয়া। সবমিলিয়ে মার্শের দল অপরাজিত থেকেই সুপার এইটে খেলতে যাচ্ছে।
ম্যাচ শেষে স্কটিশ ক্রিকেটারদের চেহারাই বলে দিচ্ছিল যে জয়টা পেতে তারা কতটা মরিয়া ছিল। ফলে হৃদয় ভাঙার বেদনায় মুষড়ে পড়েছেন ক্রিকেটাররা। অথচ তাদেরকে টপকে সুপার এইটে যাওয়া ইংল্যান্ডের সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ব্যবধান নেই। দুটি করে জয় নিয়ে দুই দলই পেয়েছে ৫ পয়েন্ট করে, তবে ওমানের বিপক্ষে মাত্র ১৯ বলে জিতে রানরেটটা অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছেন বাটলাররা। যা জয় ছাড়া টপকানো প্রায় অসম্ভব ছিল স্কটল্যান্ডের।
এদিন আগে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কটল্যান্ডের শুরুটা ছিল মিশ্র অনুভূতির। কারণ দলীয় মাত্র ৩ রানেই ওপেনার মাইকেল জোন্সকে হারায় দলটি। এরপর অবশ্য দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লেতেই তারা ৫৪ রান তোলে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৮৯ রানের জুটি গড়েন ওপেনার জর্জ মুনশী ও ব্রেন্ডন ম্যাকমুলেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে মুনশীর (২৩ বলে ৩৫) বিদায়ে সেই জুটি ভাঙে। এর ভেতরই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েন ম্যাকমুলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৩৪ বলে ২টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৬০ রান করেন।
এ ছাড়া অধিনায়ক রিচি বেরিংটন ৩১ বলে ১টি চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৪২ এবং ম্যাথু ক্রস ১১ বলে ১৮ রান করেন। অবশ্য স্কটিশরা যে হারে রান তুলছিল, তাদের দুইশ রান করাটা ছিল স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু নাথান এলিসের করা দুটি কম খরুচে ডেথ ওভারে স্কটিশরা আটকে যায় ১৮১ রানে। অজিদের হয়ে ২ উইকেট শিকার করেছেন ম্যাক্সওয়েল এবং একটি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যাশটন আগার, অ্যাডাম জাম্পা ও এলিস।
রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়া শুরুতেই হোঁচট খায় দলীয় ২ রানেই ডেভিড ওয়ার্নারকে (১) হারিয়ে। এরপর অজি অধিনায়ক মার্শ ৮ এবং ব্যাট হাতে ধুঁকতে থাকা ম্যাক্সওয়েলও আউট হয়ে যান ১১ রান করে। সেখান থেকে জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া জুটি বাধেন ওপেনার ট্রাভিস হেড ও মার্কাস স্টয়নিস। এই জুটিতে আসে ৮০ রান। হেড শুরুতে ধীরগতির ব্যাট চালালেও, শেষের ঝড়ে ৪৯ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৮ রান করেন।
অস্ট্রেলিয়াকে প্রায় জয়ের বন্দরে নিয়ে আউট হন স্টয়নিস। ডানহাতি এই ব্যাটার ২৯ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৯ রান করেন। টিম ডেভিড করেন অপরাজিত ২৪ রান। তার ১৪ বলের ইনিংসটিতে ছিল ২টি চার ও এক ছক্কা। শেষদিকে বাউন্ডারিতে তার ক্যাচ হাতছাড়া করেন স্কটিশ ফিল্ডার। তবে ঠিকই ২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। স্কটিশদের হয়ে মার্ক ওয়াট ও সাফইয়ান শরিফ ২টি করে উইকেট শিকার করেছেন।
এএইচএস